প্রায় গোটা দেশের মানুষ হোলির উৎসব (Holi) উদযাপন করেন। প্রায় এক মাস আগে থেকে চলে তার প্রস্তুতি। তবে অনেকেরই অজানা এই উৎসবের শুরু কোথা থেকে হয়েছে। আসলে রঙের এই উৎসব প্রথম শুরু হয় ঝাঁসির বুন্দেলখন্ডের আর্চ শহর থেকে। এক সময়ে এটি রাজা হিরণ্যকশ্যপের রাজত্ব ছিল। দৈত্যরাজের ছেলে প্রহ্লাদ ও তাঁর বোন হোলিকার বিশেষ একটি ঘটনার থেকেই হোলির উৎসবটি শুরু হয়।
ঝাঁসির সদর দফতর থেকে আর্চ শহরটি প্রায় ৭০ কিমি দূরে। এখানেই হোলির সুচনা হয়েছিল। পুরাণ অনুযায়ী দৈত্যরাজ হিরণ্যকশ্যপের রাজধানী ছিল এই আর্চ। তিনি একটি বড় পেয়েছিলেন যে, কোনও পশু বা মানুষ তাঁকে মারতে পারবে না কখনও এবং দিনে বা রাতে তাঁর মৃত্যু হবে না। নিজেকে অমর মনে করে প্রচণ্ডভাবে দৃপ্ত ও উজ্জীবিত হয়ে হিরণ্যকশিপু স্বৈরাচার নিয়ম-কানুন করে রাজ্যশাসন করতে শুরু করেন। তাঁর ছেলে প্রহ্লাদ পরম বিষ্ণুভক্ত ছিলেন। কিন্তু তিনি ছিলেন কিন্তু হিরণ্যকশিপু ঘোর বিষ্ণুদ্বেষী। ফলস্বরুপ হিরণ্যকশ্যপ বিভিন্ন ভাবে চেষ্টা করেন প্রহ্লাদের প্রাণনাশের। কিন্তু বিষ্ণুর আশীর্বাদে তাঁর কোনও ক্ষতি হয় না।
এরপর এই প্রহ্লাদকে আগুনে পুড়িয়ে মারতে চেয়েছিলেন হিরণ্যকশিপুরের বোন হোলিকা। সেই উদ্দেশে প্রহ্লাদকে কোলে নিয়ে আগুনে ঝাঁপ দেয় সে। হোলিকা ভেবেছিলেন, তিনি তাঁর মায়াবী ক্ষমতাবলে বেঁচে যাবেন এবং পুড়ে ছাই হয়ে যাবে প্রহ্লাদ। কিন্তু আসলে হয়েছে তার উল্টোটাই। বিষ্ণুভক্ত প্রহ্লাদের গায়ে এতটুকু আঁচ লাগেনি এবং আগুনে পুড়ে মৃত্যু হয় কাশ্যপ কন্যার। প্রহ্লাদকে বাঁচাতে বিষ্ণুর হোলিকা বধকে উদযাপন করা হয় এভাবেই। এরপরই ভগবান বিষ্ণু নরসিংহ অবতার ধারণ করে হিরণ্যকশিপুকে দিন ও রাতের সন্ধিকালে নখ দিয়ে রক্তাক্ত করে ধ্বংস করেন।
আরও পড়ুন: হোলি হ্যায়! Facebook, Instagram, WhatsApp-এ পাঠান ভার্চুয়াল বার্তা
বর্তমানে শুধু বুন্দেলখন্ড নয়, সমগ্র দেশেই হোলিকা দহনের রীতি পালিত হয়। প্রতি বছর আর্চের লোকেরা নাচে-গানে আনন্দের সঙ্গে উদযাপন করেন এই উৎসব।