scorecardresearch
 

Dol Utsav 2024: ন্যাড়া পোড়া কিন্তু সবার জন্য শুভ নয়, নিয়ম ও রীতি জানুন

Dol Utsav 2024: 'আজ আমাদের ন্যাড়াপোড়া, কাল আমাদের দোল', রঙের উৎসবের আগে এই ছড়া মুখে মুখে ঘোরে বাংলায়। দোল উৎসবের আগের দিন ন্যাড়াপোড়া করা হয়। বাড়ির বড়রা ছোটদের ওপর দায়িত্ব দিতেন শুকনো কাঠ, শুকনো পাতা কুড়িয়ে আনার, আর সেই দিয়েই হত ন্যাড়াপোড়া রীতি পালন। বাংলায় যেটা ন্যাড়াপোড়া নামে পরিচিত, গোটা দেশে সেটাই হোলিকা দহন।

Advertisement
ন্যাড়াপোড়া ন্যাড়াপোড়া
হাইলাইটস
  • 'আজ আমাদের ন্যাড়াপোড়া, কাল আমাদের দোল', রঙের উৎসবের আগে এই ছড়া মুখে মুখে ঘোরে বাংলায়।

'আজ আমাদের ন্যাড়াপোড়া, কাল আমাদের দোল', রঙের উৎসবের আগে এই ছড়া মুখে মুখে ঘোরে বাংলায়। দোল উৎসবের আগের দিন ন্যাড়াপোড়া করা হয়। বাড়ির বড়রা ছোটদের ওপর দায়িত্ব দিতেন শুকনো কাঠ, শুকনো পাতা কুড়িয়ে আনার, আর সেই দিয়েই হত ন্যাড়াপোড়া রীতি পালন। বাংলায় যেটা ন্যাড়াপোড়া নামে পরিচিত, গোটা দেশে সেটাই হোলিকা দহন। এই বছর দোল পালন করা হবে ২৫ মার্চ। অর্থাৎ তার আগের দিন ২৪ মার্চ হবে ন্যাড়াপোড়া। এই ন্যাড়পোড়ার কিন্তু নির্দিষ্ট গুরুত্ব রয়েছে। আসুন জেনে নেওয়া যাক। 

ন্যাড়াপোড়ার তাৎপর্য
আসলে কিন্তু শব্দটা 'ন্যাড়া' নয়, শব্দটা 'মেড়া'। মেড়া শব্দের অর্থ ভেড়া বা মেষ। পুরাণ মতে, দোলের আগে চাঁচড় দহনে যে খড়-কাঠের ঘর বা কুশপুত্তলিকা পোড়ানো হয়, তা আসলে মেষরূপী ভাদ্রপদা নক্ষত্রের প্রতিরূপ। শাস্ত্রমতে, এই উৎসব আসলে অসুর হিসাবে কল্পিত মেষ বা ছাগলকে পোড়ানোর উৎসব। যার নাশ হওয়ার পরেই সূর্যের উত্তরায়ণ শুরু হয়। শীতের পেরনোর পরে বাড়ে সূর্যের তাপ। দিন বড় হয়। দোলে লাল আবিরের ব্যবহার সূর্যেরই সমার্থক।

পুরাণে প্রচলিত কথা
তবে পুরাণের অন্য একটি কাহিনিও এক্ষেত্রে প্রচলিত আছে। পুরাণে আছে, রাক্ষস সাজা হিরণ্যকশিপু তাঁর প্রজাদের পুজো অর্চনা করা বন্ধ করে দেন। অমরত্ব লাভের জন্য তিনি ব্রহ্মার তপস্যা শুরু করেন। তাঁর তপস্যায় খুশি হয়ে ব্রহ্মা তাঁকে পাঁচটি বর দান করেন। জানেন কী ছিল সেই বিশেষ ক্ষমতা? হিরণ্যকশিপুর মৃত্যু দিনেরবেলাও হবে না, রাত্রিবেলাও হবে না। কোনও মানুষের হাতেও হবে না, প্রাণীর হাতও হবে না। চার দেওয়ালের ভিতরেও হবে না, চার দেওয়ালের বাইরেও হবে না। জলে-স্থলে মহাশূন্যেও মৃত্যু হবে না। এমনকি অস্ত্রের সাহায্যেও হবে না, শস্ত্রের সাহায্যেও হবে না। অমরত্বের বরলাভ করার পর থেকে আরও ভয়ঙ্কর হয়ে ওঠেন হিরণ্যকশিপু। প্রজাদের উপরে তাঁর অত্যাচার আরও বাড়তে শুরু করে। তবে হিরণ্যকশিপুর নিজের ছেলে প্রহ্লাদ ছিলেন বিষ্ণুর একনিষ্ঠ ভক্ত। একসময় রাগে নিজের ছেলেকেই হত্যা করার সিদ্ধান্ত নেন হিরণ্যকশিপু। আর এই কাজে হিরণ্যকশিপুকে সাহায্য় করতে এগিয়ে আসেন তাঁর নিজের বোন হোলিকা। হোলিকাও ব্রহ্মার বরপ্রাপ্ত ছিলেন। হোলিকা ব্রহ্মার কাছ থেকে একটি শাল পেয়েছিলেন। ব্রহ্মা জানিয়েছিলেন, এই শাল তাঁকে সবসময় রক্ষা করবে। হোলিকা বলেন, তিনি প্রহ্লাদকে নিয়ে আগুনের মধ্যে বসবেন। শাল থাকায় তাঁর কিছু হবে না। কিন্তু প্রহ্লাদ পুড়ে ছাই হয়ে যাবে। কিন্তু, যেই প্রহ্লাদকে নিয়ে হোলিকা আগুনে প্রবেশ করেন, তখনই তাঁর গায়ের শালটি প্রহ্লাদের গায়ে চলে যায়। ফলে প্রহ্লাদের কিছু না হলেও পুড়ে ছাই হয়ে যান হোলিকা।

আরও পড়ুন

Advertisement

ন্যাড়াপোড়ার তাৎপর্য
সবমিলিয়ে আসলে এই উৎসব অশুভকে আগুনে নাশ করার বহু পুরনো রীতি। যা দেশের বিভিন্ন প্রান্তে বিভিন্ন ভাবে পালিত হয়। ফাল্গুনী পূর্ণিমার আগের সন্ধ্যায় শীতের আবর্জনা, শুকনো ডালপাতা পুড়িয়ে ফেলার নিয়মটা একই। শুধু নামটাই যা আলাদা।

কাদের জন্য ন্যাড়াপোড়া অশুভ
-জ্যোতিষ মতে, নতুন বিয়ে হয়ে  প্রথমবার শ্বশুর বাড়িতে এলে, নববধূর ন্যাড়াপোড়া বা হোলিকা দহন দেখা উচিত নয়। তা শুভ বলে মনে করা হয় না। বলা হয়ে থাকে যে এর ফলে বিবাহিত জীবনে অনেক সমস্যা তৈরি হতে পারে।

-গর্ভবতী মহিলাদেরও হোলিকা দহন দেখা এড়িয়ে চলা উচিত। এছাড়া হোলিকাকে প্রদক্ষিণ করাও অশুভ বলে মনে করা হয়। গ্রহদোষের পাশাপাশি শিশুর উপর অশুভ প্রভাব পড়তে পারে। ভবিষ্যতে অনেক বাধা সৃষ্টি হতে পারে।

-কথিত আছে, শাশুড়ি ও পুত্রবধূর একসঙ্গে হোলিকা দহন দেখা উচিত নয়। তাতে পারস্পরিক বিভেদ বাড়তে পারে, সম্পর্কের মধ্যে তিক্ততা তৈরি হতে পারে। পরিবারে ঝামেলা বৃদ্ধির সম্ভাবনাও থাকতে পারে।

-যে পিতামাতার একমাত্র সন্তান, তাদের হোলিকা দহনের আগুন দেখা এড়িয়ে চলা উচিত। অশুভ বলে মনে করা হয়। রীতি মেনে, বাড়ির একজন বয়স্ক ব্যক্তির উচিত হোলিকা দহনের রীতি মেনে চলা।


 

Advertisement