scorecardresearch
 

Khereshwar Mandir: এই শিব মন্দিরে এখনও নিয়মিত পুজো দিতে আসেন মহাভারতের অশ্বত্থামা!

Khereshwar Mandir: যুগ যুধ ধরে স্থানীয় মানুষ, মন্দিরের পুরোহিতরা বংশপরম্পরায় এটা বিশ্বাস করে আসছেন যে, আজও মহাভারতের যুগের অন্যতম পরাক্রমী যোদ্ধা অশ্বত্থামা এখানে নিয়মিত শিবের পুজো করতে আসেন। কোথায় এই মন্দির? জেনে নিন এর সঙ্গে জড়িয়ে থাকা একাধিক কাহিনি...

Advertisement
আজও মহাভারতের যুগের অন্যতম পরাক্রমী যোদ্ধা অশ্বত্থামা এখানে নিয়মিত শিবের পুজো করতে আসেন। আজও মহাভারতের যুগের অন্যতম পরাক্রমী যোদ্ধা অশ্বত্থামা এখানে নিয়মিত শিবের পুজো করতে আসেন।
হাইলাইটস
  • পুরোহিতদের বিশ্বাস, অশ্বত্থামার দর্শন পেতে পারে বর্তমানে এমন দিব্য চক্ষু আর কারও নেই।
  • শেষবারের মতো অশ্বত্থামার দর্শন পেয়েছিলেন পৃথ্বীরাজ চৌহান।
  • পবিত্র মন্দিরটি বাবা খেরেশ্বর ধাম নামে পরিচিত।

দ্বাপর যুগ বা মহাভারতের যুগে গুরু দ্রোণাচার্য অরণ্যের মধ্যে একটি শিবলিঙ্গ প্রতিষ্ঠা করেছিলেন। এখানেই দ্রোণাচার্য তাঁর অমর পুত্র অশ্বত্থামার গোপন অস্ত্রের শিক্ষা দিতেন। গুরু দ্রোণাচার্য এখানে তাঁর শিষ্যদের ব্রহ্মাস্ত্র এবং শব্দভেদী বনের মতো বহু ঐশ্বরিক অস্ত্র-শিক্ষা দিয়েছিলেন। এই স্থানটি ছিল গঙ্গার তীরে। একটি প্রাচীন জনশ্রুতি অনুযায়ী, দ্রৌপদীর পাঁচ পুত্রকে হত্যা করার পর অশ্বত্থামা এই শিবলিঙ্গের সামনে এসেই আত্মগ্লানিতে চিৎকার করতেন। তারপর খেরেশ্বর বাবা তাকে সমাধিতে থাকার আশীর্বাদ করে বলেন, অশ্বত্থামার স্থান হবে সপ্তর্ষি মন্ডলে।

আরও পড়ুন: কোন দিকে মাথা দিয়ে ঘুমোলে টাকার টানাটানি-সংসারে অশান্তি জাঁকিয়ে বসে? রইল

এই পবিত্র স্থানটি রয়েছে উত্তরপ্রদেশের কানপুর মহানগরীর গ্রামীণ এলাকায় বাঙ্কা ছতারপুর, শিবরাজপুরে। পবিত্র মন্দিরটি বাবা খেরেশ্বর ধাম নামে পরিচিত। কথিতে আছে যে, আজও মহাভারতের যুগের অন্যতম পরাক্রমী যোদ্ধা অশ্বত্থামা এখানে নিয়মিত শিবের পুজো করতে আসেন। এখানকার পুরোহিতরা বংশ পরম্পরায় বাবা খেরেশ্বরের সেবা করে আসছেন। পুরোহিতদের পূর্বপুরুষদের মতে, সকালে এখানকার শিবলিঙ্গে বুনো ফুল ও জল দেখেন তাঁরা। প্রতি রাতে স্নান ও শিবলিঙ্গ পরিষ্কার করার পর মন্দিরের দরজা বন্ধ করা থাকলেও রোজ সকালে এখানে মন্দিরের দরজা খোলা অবস্থায় পাওয়া যায়, বের পুজো দেওয়া হয়ে গিয়েছে। তাদের সকলেই বিশ্বাস করেন যে অশ্বত্থামা এখনও প্রতিদিন এখানে পুজো করতে আসেন। ওই পবিত্র মন্দিরের পুরোহিতদের বিশ্বাস, অশ্বত্থামার দর্শন পেতে পারে বর্তমানে এমন দিব্য চক্ষু আর কারও নেই। শেষবারের মতো অশ্বত্থামার দর্শন পেয়েছিলেন পৃথ্বীরাজ চৌহান।

Khereshwar Mandir

এই শিবলিঙ্গ আজ থেকে প্রায় ৫০০ বছর আগে আবিষ্কৃত হয়েছিল। এই শিবলিঙ্গের আবিষ্কার নিয়ে একটি বিখ্যাত কাহিনিও প্রচলিত আছে। যাদব বংশের এক গোপালক ছিলেন যার একটি শ্যামা গাভী ছিল। এই গাভীটি এত উন্নতমানের ছিল যে এটি সন্তানের জন্ম না দিয়েও দুধ দিতে পারত। ওই গোয়ালা রোজ সকালে গরুকে চড়াতে মাঠে ছেড়ে দিত এবং সন্ধ্যায় যখন সে ফিরে আসত তখন তার বাঁট দুগ্ধহীন হয়ে পড়ত। নিয়মিত এই ঘটনা দেখে দুধ চুরির আশঙ্কায় ওই গোপালক তার শ্যামা গাভীটির পিছু নেওয়ার সিদ্ধান্ত নেয়। এর পর তিনি দেখতে পান যে তার গরুটি একটি ঝোপের কাছে যায় এবং সেখানে যেতেই তার বাঁট থেকে দুধের ধারা পড়ে চলেছে। বেশ কয়েক দিন বিষয়টি দূর থেকে দেখার পর ঝোপের পিছনে গিয়ে ওই গোপালক এই শিবলিঙ্গের সন্ধান পান। 

Advertisement

আরও পড়ুন: বিয়ের ক্ষেত্রে সিংহ রাশির জন্য সেরা জুটি কোন রাশির জাতক-জাতিকা?

সেই সময় লখনউয়ের এক ধনী ব্যক্তি বিহারী লাল শেঠ দ্রোণাচার্য কর্তৃক প্রতিষ্ঠিত এই শিবলিঙ্গের একটি মন্দির নির্মাণের স্বপ্ন দেখেন। তাই তিনি গোপন অনুদানে এই মন্দিরটি তৈরি করেছিলেন। যদিও এর কোনো প্রমাণ নেই। স্থানীয়রা এই কাহিনিকেই যুগ যুগ ধরে বিশ্বাস করে আসছেন। যে হেতু ওই সময়ে দেশজুড়ে মুঘলরা রাজত্ব করেছিল, তাই এই মন্দিরটিতেও মুঘল আমলের স্থাপত্যের আভাস মেলে।

Khereshwar Mandir

বিথুর রাজা নানারাও পেশওয়াও এখানে শিবোপাসনা করতেন। পৃথ্বীরাজ চৌহান বহু বছর ধরে এই স্থানে শিবের পুজো করতেন। একদিন পৃথ্বীরাজ চৌহান বাবা খেরেশ্বরের অসীম কৃপায় অশ্বত্থামার দর্শন পান। পৃথ্বীরাজ চৌহান, অশ্বত্থামার বিশাল রূপ এবং তেজ দেখে বুঝেছিলেন যে তিনি কোনও সাধারণ মানুষ নন। পৃথ্বীরাজ চৌহান তাঁর ভক্তির জোরে বুঝেছিলেন যে, তাঁর বয়স কয়েক হাজার বছর। পৃথ্বীরাজ চৌহানের পরে, কেউ জানতে পারেনি কীভাবে শব্দভেদী তীর ছুড়তে হয়। পৃথ্বীরাজের ভবিষ্যৎ দেখে অশ্বত্থামা তাকে শব্দভেদী তীর ছোড়ার পদ্ধতি শিখিয়ে দিয়েছিলেন। আর এই বিশেষ শিক্ষা বা ক্ষমতাকে কাজে লাগিয়েই পৃথ্বীরাজ অলৌকিক উপায়ে মহম্হদ ঘোরিকে খতম করে ইতিহাস তৈরি করেছিলেন।

মহম্মদ ঘোরি পৃথ্বীরাজ চৌহানকে বন্দি করে তাঁর চোখ উপড়ে নেন। দৃষ্টিহীন পৃথ্বীরাজকে দ্বন্দ্বযুদ্ধে আহ্বান জানান মহম্মদ ঘোরি। ঘোরি ভেবেছিলেন, অন্ধ পৃথ্বীরাজকে অনায়াসেই হত্যা করবেন তিনি। কিন্তু দৃষ্টিহীন পৃথ্বীরাজ মহম্মদ ঘোরির কথোপকথন শুনেই অশ্বত্থামার দেওয়া শিক্ষা (শব্দভেদী তীর ছোড়ার কৌশল) কাজে লাগিয়ে শত্রুকে হত্যা করেছিলেন।

খেরেশ্বর বাবার মহিমা অসীম, ভক্তরা এখানে তাদের মনস্কামনা পূরণের আশায় দূর-দূরান্ত থেকে এখানে ছুটে আসেন। খেরেশ্বর বাবার মন্দিরের কাছাকাছি একটি হ্রদও রয়েছে, যেটির নাম গন্ধর্ব সরোবর।

Advertisement