দেশে ক্রমবর্ধমান মূল্যস্ফীতি ইতিমধ্যেই সাধারণ মানুষের রান্নাঘরের বাজেটে থাবা বসিয়েছে। দুধ-সবজি থেকে শুরু করে গ্যাস-তেল সব কিছুরই দাম বেড়েছে। গত কয়েকদিনে তেলের দাম কমলেও এখন তার জায়গায় মধ্যবিত্তের চিন্তা বাড়াচ্ছে ডাল। ডালের দাম বাড়ায় মানুষের পকেটে টান আরও বাড়ল। সরকারি তথ্য অনুযায়ী, মাত্র ৬ সপ্তাহে অড়হড় ডাল ও বিউলির দাম ১৫ শতাংশ বেড়েছে।
কৃষি মন্ত্রকের প্রকাশিত তথ্য
সাধারণত মানুষের রান্নাঘরেআলু বা টমেটোর মতো সবজি ছাড়াও প্রতিদিনের খাবারে ডালও থাকে। এমন পরিস্থিতিতে তাদের দাম বাড়ায় সরাসরি রান্নাঘরের খরচ বেড়ে যাচ্ছে। কৃষি মন্ত্রকের প্রকাশিত সর্বশেষ তথ্যের দিকে তাকালে দেখা যায়, এক বছর আগের তুলনায় অড়হড় ডাল চাষের জমি কমেছে ৪.৬ শতাংশ, বিউলির ডালের জন্য জমি কমেছে ২ শতাংশ।
বৃষ্টির কারণে লোকসান
কৃষি মন্ত্রকের উপস্থাপিত তথ্য অনুযায়ী, শুধু গত ৬ সপ্তাহে অড়হড় ডাল ও বিউলির ডালের দাম ১৫ শতাংশের বেশি বেড়েছে । বৃষ্টির কারণে ফসলের ক্ষতি নিয়ে উদ্বেগও বেড়েছে।
দাম বৃদ্ধির বিষয়টি ৃ অনুমান করা যায় যে মহারাষ্ট্রের লাতুরে ভাল মানের বিউলির ডালের দাম, যা দেড় মাস আগে প্রতি কেজি ৯৭ টাকায় বিক্রি হয়েছিল, এখন তা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ১১৫ টাকা।
বিশেষজ্ঞরা এই প্রত্যাশা ব্যক্ত করেছেন
মহারাষ্ট্রের ডাল আমদানিকারক হর্ষ রাইয়ের মতে, বর্তমানে বিউলির ডালের স্টক নেই। তিনি বলেন, আমরা অগাস্ট/সেপ্টেম্বর মাসে আফ্রিকা থেকে ৫,০০,০০০ টন চালান আশা করছি। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, অতিরিক্ত বৃষ্টিতে বিউলির ডালের আরও ক্ষতি হতে পারে। তবে আমদানির সম্ভাবনা থাকলেও সরবরাহের চাপ কমবে না।
নুন থেকে চালের দাম বেড়েছে
শুধু ডালের দামই নয়, গত এক বছরে একাধিক খাদ্য সামগ্রীর দামও বেড়েছে। সরকারের সর্বাত্মক প্রচেষ্টা সত্ত্বেও দাম নিয়ন্ত্রণে আসছে বলে মনে হচ্ছে না। অবস্থা এমন যে, দুধ হোক বা দই, নুন, গম, আটা, চাল, সব কিছুরই দাম বেড়েছে বছরজুড়ে। এমনকি নুনেন দামও বেড়েছে।
খুচরা মূল্যস্ফীতি ৬%-এর উপরে
ভোক্তা বিষয়ক মন্ত্রকের তথ্য অনুযায়ী, এক বছর আগে চালের গড় দাম ছিল ৩৪.৮৬ টাকা প্রতি কেজি, যা এখন বেড়ে ৩৭.৩৮ টাকা হয়েছে। গম ২৫ টাকা থেকে বেড়ে ৩০.৬১ টাকা, আটা ২৯.৪৭ টাকা থেকে বেড়ে ৩৫ টাকা কেজি হয়েছে। দুধের দাম ৪৮.৯৭ টাকা থেকে বেড়ে ৫২.১ টাকা লিটার হয়েছে। রিজার্ভ ব্যাঙ্ক অফ ইন্ডিয়ার (RBi) অনুসারে, খুচরো মূল্যস্ফীতির হার এখনও ৬ শতাংশের উপরেই থাকবে।