সন্দেশখালির সঙ্গে গোধরা-পুলওয়ামার ঘটনার তুলনা টানলেন অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। মনোনয়নপত্র জমা দিয়ে বিজেপিকে নিশানা করলেন ডায়মন্ড হারবারের তৃণমূল প্রার্থী। শুক্রবার অক্ষয় তৃতীয়ার শুভক্ষণে মনোনয়নপত্র জমা দিলেন তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক। ডায়মন্ড হারবারে উন্নয়ন ধরে রাখার প্রতিশ্রুতিও শোনা গেল তাঁর গলায়। তারপরেই সন্দেশখালির ঘটনায় বলেন, ' আমরা গোধরা শুনেছিলাম, পুলওয়ামা শুনেছিলাম, সন্দেশখালি দেখলাম।'
কী বললেন অভিষেক?
মনোনয়নপত্র জমা দেওয়া প্রসঙ্গে অভিষেক বলেন, 'মনোনয়ন জমা দিয়েছি। যেভাবে ভালবাসা, আশীর্বাদ দিয়েছেন মানুষ, তাঁদের কাছে কৃতজ্ঞ। যেভাবে ১০ বছর কাজ করার সুযোগ পেয়েছি, যাতে আগামী দিনে ফের সুযোগ পাই, সেই উন্নয়ন বহাল রাখতে আমরা বদ্ধপরিকর।' এরপরেই বিজেপিকে নাম না করে টার্গেট করেন অভিষেক। বলেন, 'বিরোধীদের বিসর্জন সময়ের অপেক্ষা। যারা বাংলাকে কলুষিত করার পরিকল্পনা করেছে, দেশের কাছে বাংলাকে ছোট করেছে, তাদের যোগ্য দেবে মানুষ।'
সন্দেশখালির সঙ্গে গোধরা-পুলওয়ামার তুলনা অভিষেকের
সন্দেশখালিকাণ্ড প্রসঙ্গে বিজেপিকে ফের নিশানা করেছেন অভিষেক। বলেছেন, 'বিজেপি পুলওয়ামা করিয়েছিল, আমরা শুনেছিলাম, এটা সত্যপাল মালিক বলেছেন। তিনি রাজ্যপাল ছিলেন জম্মু ও কাশ্মীরের। আমরা গোধরা শুনেছিলাম, পুলওয়ামা শুনেছিলাম, সন্দেশখালি দেখলাম। চোখে দেখা এক জিনিস, কানে শোনা এক জিনিস। ১০-১৫টা ভোটের জন্য যারা বাংলার ১০ কোটি মানুষকে সারা দেশের কাছে ছোট করতে পারে, তাদের থেকে নির্লজ্জ রাজনৈতিক দল দেখিনি।'
বিজেপিকে আক্রমণ অভিষেকের
বিজেপিকে নিশানা করে অভিষেক বলেন, 'বিজেপির গায়ে রক্তের দাগ রয়েছে। ওদের রাজনীতি হল কোর্ট-ইডি-সিবিআই। ২টো ইস্যুকে কেন্দ্র করে লড়াই করছে। সন্দেশখালি, এসসিসি। এসসিসির বেলুনে আলপিন ফুটিয়ে দিয়েছে সুপ্রিম কোর্ট। লাড্ডু বিতরণ করেছিল, বাজি ফাটিয়েছিল। সুপ্রিম কোর্টে দু'গালে থাপ্পড় খেয়েছে। সন্দেশখালি পরিকল্পিত। অনেক দূর জল গড়াবে।' তিনি আরও বলেন, 'ডায়মন্ড হারবারে বিজেপির প্রার্থী ঘোষণা করতে ১ মাস সময় লেগেছে। এর দায় কি আমার!...২০২১ সালে ২ জন বিধায়ক সোনালি গুহ, দীপক হালদারকে ভাঙিয়ে নিয়ে গিয়েছিল, সেখানেও হেরেছে... আগে এজেন্ট খুঁজুন।' প্রসঙ্গত, একসময় সোনালি গুহ তৃণমূলে ছিলেন। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের 'ছায়াসঙ্গী' হিসাবে পরিচিত ছিলেন তিনি। বর্তমানে সোনালি বিজেপিতে।
রাজ্যপালকে নিশানা অভিষেকের
রাজ্যপালের বিরুদ্ধে ওঠা শ্লীলতাহানির অভিযোগের পাল্টা রাজভবনের সিসিটিভি ফুটেজ প্রকাশ প্রসঙ্গে অভিষেক বলেছেন, 'অভিযোগকারিণীকে আরও অসম্মানিত করেছেন। অপমান করছেন। আইনে কিছু করা যায় না বলে যা খুশি করছেন। এঁদের বিরুদ্ধে যত কমা বলা যায় ভাল। আপনার কেবিন থেকে মেয়েটা যখন বাইরে বেরোচ্ছে, সেই ফুটেজ বার করুন। এ তো নাটক।'
অভিষেকের মনোনয়নপত্র জমা দেওয়াকে ঘিরে সাজ সাজ রব ছিল তৃণমূলে। সকাল থেকেই কালীঘাটে অভিষেকের বাড়ির সামনে জড়ো হয়েছিলেন তৃণমূলের কর্মী-সমর্থকরা। অভিষেকের পরনে ছিল সাদা শার্ট, কালো প্যান্ট।
ডায়মন্ডহারবার কার্যত অভিষেকের গড় নামেই পরিচিত। ২০১৪ সাল থেকে দক্ষিণ ২৪ পরগনার এই কেন্দ্রে সাংসদ তৃণমূলের 'সেনাপতি'। অভিষেককে হারাতে মরিয়া পদ্ম শিবির। বঙ্গ রাজনীতিতে তথাকথিত 'পরিচিত' নন এমন মুখকে ডায়মমন্ডহারবারে প্রার্থী করেছে বিজেপি। অভিষেকের বিপরীতে এবার বিজেপির প্রার্থী অভিজিৎ দাস ওরফে ববি। প্রার্থী হওয়ার পর অভিষেককে আক্রমণ করেছিলেন অভিজিৎ। bangla.aajtak.in-এ অভিজিৎ বলেছিলেন, 'অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় সাংসদ হওয়ার পর এখানে তো ভোট হয় না। এবার যাতে ভোট হয়,সেটা দেখতে হবে। অভিষেকের মতো অভিশাপটা আমাদের এখান থেকে দূর হবে।'