শনিবারই শিলিগুড়ি থেকে কেন্দ্রের টাকা রাজ্যবাসীর কাছে পৌঁছতে দিচ্ছে না তৃণমূল পরিচালিত রাজ্য সরকার বলে অভিযোগ ছুড়ে দিয়েছিলেন। শুধু এই অভিযোগ করেই থেমে থাকেননি তিনি, তৃণমূল নেতাদের বিরুদ্ধে তোলাবাজির অভিযোগও তুলেছিলেন। ২৪ ঘণ্টার মধ্যেই জনজোয়ারের মধ্যে দাঁড়িয়ে কলকাতা থেকে তার পাল্টা চ্যালেঞ্জ ছুড়ে দিলেন তৃণমূলের অঘোষিত নাম্বার ২ তথা সাংসদ ও দলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। রবিবার জনগর্জন সভার মঞ্চ থেকে প্রধানমন্ত্রীকে শ্বেতপত্র প্রকাশের দাবি জানান তিনি। পরে প্রধানমন্ত্রীর দাবি মিথ্যা বলে দাবি করেন মুখ্যমন্ত্রী তথা তৃণমূল সুপ্রিমো মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ও।
কী বললেন অভিষেক?
অভিষেক এদিন নরেন্দ্র মোদীকে সরাসরি চ্যালেঞ্জ জানিয়ে বলেন, "শিলিগুড়ি থেকে যে ৪২ হাজার কোটি টাকা রাজ্যকে দেওয়ার কথা জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী, তা সম্পূর্ম মিথ্যা। যদি সাহস থাকে তাহলে শ্বেতপত্র সঙ্গে নিয়ে বিজেপির মনোনীত টিভি চ্যানেলে প্রধানমন্ত্রী মনোনীত উপস্থাপকের সামনে বসতে তিনি রাজি।" অভিষেক আরও জানান, কয়েক মাস আগে রাজ্যের তরফে বকেয়া মিটিয়ে দিতে চিঠি পাঠানো হয়েছিল কেন্দ্রের কাছে। তার প্রমাণও তিনি তুলে দিতে চান। সৎসাহস থাকলে কেন্দ্রীয় সরকার তার জবাব দিক। মানুষকে বোকা বানাচ্ছে ও মিথ্যা কথা বলছে বিজেপি বলে ক্ষোভ প্রকাশ করেন তিনি।
তিনি বলেছেন "মাননীয় প্রধানমন্ত্রী এসে বলেছেন, গত ৩ বছরে তিনি বাংলায় আবাস প্রকল্পে ৪২,০০০ কোটি টাকা পাঠিয়েছেন। ১৪ ডিসেম্বর ২০২২ তারিখে বাংলার পক্ষ থেকে চিঠি দেওয়া হয়েছিল। নরেন্দ্র মোদীর সরকার যদি প্রমাণ করতে পারে গত ৩ বছরে বাংলার আবাস যোজনায় টাকা পাঠানো হয়েছে, তাহলে আমি রাজনীতি ছেড়ে দেব।"
বঞ্চনা ইস্যু থেকে শুরু করে, 'বিচারপতি'র যোগদান, সব বিষয়েই এদিন কেন্দ্রের তীব্র তুলোধনা করলেন অভিষেক। তিনি জানান, কেউ বলছে, একে একে ছেড়ে চলে যাচ্ছে, ক’দিন পর তৃণমূল দলটাই থাকবে না। আমরা ঠিক করেছিলাম... এদের কাছে টাকা-পয়সা আছে, ইলেকশন কমিশন আছে, ইডি-সিবিআই আছে। তৃণমূলের কাছে মানুষ আছে। একটা প্রতিযোগিতা হোক। আগামীর রায় বাংলা-বিরোধীরা বিদায়। ২০২১-এ বাংলার বিধানসভা নির্বাচন হয়েছিল। মে-এর ২ তারিখে ফল ঘোষণা হয়েছিল। সেই সময় থেকে ২৯ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত মোদীজি কতবার এসেছেন। পাশাপাশি বিদ্যাসাগরের মূর্তি ভেঙে দেওয়ার কথা মনে করিয়ে তারপরও ক্ষমা চায়নি বলে অভিযোগ করেছেন তিনি।
অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়ের নাম না করে তিনি কটাক্ষ করেন, আগে আমাদের দেশে কেউ যখন চুরি বা খুন করত তখন বিচারপতি তাঁদের জেলে পাঠাতেন। আর এখন মোদীজীর আমলে চোরেরা, খুনিরা বিচারপতিকে গলায় উত্তরীয় পরিয়ে স্বাগত জানাচ্ছেন। এর বিচার জনগণের উপর ছেড়ে দেন তিনি।