শেষ দু'দফা ভোটের আগে বিতর্কের কেন্দ্রে সাধুসন্তরা। ভোটব্যাঙ্ককে খুশি করতে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় সাধুসন্তদের অপমান করছেন বলে অভিযোগ তুলেছেন নরেন্দ্র মোদী। তিনি বলেছেন,'ভোটব্যাঙ্ক খুশি করতেই প্রকাশ্য মঞ্চ থেকে রামকৃষ্ণ মিশন, ইসকন ও ভারত সেবাশ্রম সঙ্ঘের সন্ন্যাসীদের ধমকাচ্ছেন মুখ্যমন্ত্রী'। সেই মোদীর সুরেই এবার মমতাকে বিঁধলেন প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি তথা বহরমপুরের কংগ্রেস প্রার্থী অধীর চৌধুরী।
অধীর এ দিন বলেন,'সাধুদের নিয়ে মুখ্যমন্ত্রী এমনি এমনি বলেননি! সাধুদের গালাগালি করার মাধ্যমে বাংলার মুখ্যমন্ত্রী ওঁর পায়ের তলায় তৃণমূলের হারিয়ে যাওয়া ভোটটাকে তিনি দখল রাখতে চাইছেন। তিনি ভাবছেন সাধুসন্তদের গালাগালি দিলে সংখ্যালঘু মানুষ খুশি হবে, আমাকে ভোট দেবে। এই ধরনের নিকৃষ্ট রাজনীতি করতে উনি অভ্যস্ত'।
অধীরের সংযোজন,'আমার একটাই বক্তব্য, না প্রধানমন্ত্রী না মুখ্যমন্ত্রী ভোট যখন মানুষের ,মানুষের সমস্যা ভালো-মন্দ নিয়ে আলোচনা হোক। ভোটের সঙ্গে ধর্মকে মিশিয়ে দিয়ে মাখিয়ে দিয়ে এ কি রাজনীতি হচ্ছে বাংলায়? এটা দেখে আমরা অত্যন্ত দুশ্চিন্তাগ্রস্ত হচ্ছি। বাংলার মানুষ এই ধরনের সাম্প্রদায়িক রাজনীতির সঙ্গে এর আগে পরিচিত ছিল না'।
বাংলার রাজনীতিতে সাম্প্রদায়িকতার আগমন ঘটিয়েছে তৃণমূল। এই অভিযোগ অধীরের। তাঁর কথায়,'বিজেপির প্রবেশ এ রাজ্যে সম্ভব হয়েছে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের পৃষ্ঠপোষকতায়। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সৌজন্যে সেদিন থেকে এই বাংলায় রাজনীতিতে ধীরে ধীরে সাম্প্রদায়িকতা মাথাচাড়া দিচ্ছে। বাংলার মুখ্যমন্ত্রী এবং ভারতবর্ষের প্রধানমন্ত্রী দু'জনেই এই সাম্প্রদায়িক রাজনীতির দুটো মেরু হতে চাইছেন। একজন সাধুদের পাশে থাকার কথা বলবে, আর অন্যজন সাধুদের বিরোধিতার কথা বলবেন। সাধুর কথা বলে হিন্দুদের ভোট নেবে , সাধুর বিরোধিতা করে মুসলমান ভোট নেবে। একটা অদ্ভুত ভিন্ন রাজনৈতিক খেলা চলছে বাংলায়'।
মমতা কী বলেছিলেন?
শনিবার গোঘাটের সভায় মমতা বলেছিলেন,'সব সাধু তো সমান হয় না। সব স্বজন সমান হয় না। আমাদের মধ্যে কি সবাই সমান? বহরমপুরের একজন মহারাজ আছেন। আমি শুনেছি অনেকদিন ধরে, কার্তিক মহারাজ। ভারত সেবাশ্রম সঙ্ঘকে শ্রদ্ধা করতাম। আমার শ্রদ্ধার তালিকায় দীর্ঘদিন ধরে আছেন। যে লোকটা বলছেন, তৃণমূল কংগ্রেসের এজেন্ট বসতে দেব না। তাঁকে আমি সাধু বলতে পারি না। কারণ তিনি সরাসরি রাজনীতি করে দেশটার সর্বনাশ করছেন। আসানসোলের একটা রামকৃষ্ণ মিশন আছে। আমি রামকৃষ্ণ মিশনকে সাহায্য করেছি। সিপিএম খাবার বন্ধ করে দিয়েছিল, তখন আমি পাশে দাঁড়িয়েছিলাম। ইসকনকে ৭০০ একর জমি দিয়েছি। ইসকনের একটি মিশন আর মন্দির আছে। দিল্লি থেকে নির্দেশ এসেছে, বিজেপিকে ভোট দেওয়ার জন্য বলো। সাধুসন্তরা কেন এ কাজ করবে?'