scorecardresearch
 

Arjun Singh: অর্জুনকে টিকিট দিচ্ছে BJP? ব্যারাকপুরের সাংসদের 'সাবধানী' জবাব

জল্পনার অবসান ঘটালেন সাংসদ অর্জুন সিং। সেই সঙ্গে বিজেপিতে যোগ দিয়ে ফের ভোটে লড়বেন কি না, এই প্রশ্নেরও জবাব দিলেন ব্যারাকপুর শিল্পাঞ্চলের 'বাহুবলী' নেতা। 

Advertisement
বিজেপিতে যোগ দিচ্ছেন অর্জুন সিং। বিজেপিতে যোগ দিচ্ছেন অর্জুন সিং।
হাইলাইটস
  • জল্পনার অবসান ঘটালেন সাংসদ অর্জুন সিং।
  • বিজেপিতে যোগ দিচ্ছেন অর্জুন।
  • অর্জুনের মন্তব্যে সরগরম রাজনীতি।

জল্পনার অবসান ঘটালেন অর্জুন সিং। ফের বিজেপিতেই যোগদান দিচ্ছেন ব্যারাকপুরের সাংসদ। বৃহস্পতিবার বারবেলায় একথা ঘোষণা করে দিলেন অর্জুন। লোকসভা নির্বাচনে তৃণমূলের প্রার্থীতালিকায় ঠাঁই না পাওয়ার পর থেকেই অর্জুনের গলায় অসন্তোষের সুর শোনা গিয়েছিল। তার পর থেকেই তাঁর বিজেপিতে প্রত্যাবর্তনের জল্পনা জোরালো হচ্ছিল। এদিন নিজেই সেই জল্পনার অবসান ঘটালেন সাংসদ। সেই সঙ্গে বিজেপিতে যোগ দিয়ে ফের ভোটে লড়বেন কি না, এই প্রশ্নেরও জবাব দিলেন ব্যারাকপুর শিল্পাঞ্চলের 'বাহুবলী' নেতা। 

বিজেপিতে কি ভোটের টিকিট পাবেন?

এই প্রশ্নের জবাবে অর্জুনের কৌশলী জবাব, 'বিজেপির নির্বাচন কমিটি রয়েছে, তারা ঠিক করবে।' ব্যারাকপুর থেকেই কি প্রার্থী হবেন? সাংসদের জবাব, 'দল ঠিক করবে কে প্রার্থী হবেন। প্রার্থী কেন্দ্রীয় নেতৃত্ব ঠিক করেন। এতে আমার হাত নেই।'

আরও পড়ুন

খুব শীঘ্রই তিনি বিজেপিতে যোগ দেবেন বলে এদিন জানিয়েছেন অর্জুন। বলেছেন, 'তৃণমূল ছেড়ে দিয়েছি। বিজেপিতে যোগ দিচ্ছি। দিল্লি বা কলকাতায় যোগদান পর্ব হতে পারে। আজ না কাল, সেটা দেড়টার পর জানাব।' এতেই শেষ নয়, নয়া চমকও দিয়েছেন তিনি। বলেছেন, 'আমার সঙ্গে আরও এক বড় নেতা বিজেপিতে যোগ দেবেন।' তবে কে সেই 'বড় নেতা', তা অবশ্য খোলসা করেননি অর্জুন। তাঁর সঙ্গে ব্যারাকপুরের হাজার হাজার কর্মী বিজেপিতে যোগ দেবেন বলেও জানিয়েছেন এই দাপুটে নেতা। 

এদিন সাংসদ এ-ও বলেন, 'আনুষ্ঠানিক ঘোষণা (বিজেপিতে যোগদানের) হয়ে গেলেই প্রথমে নৈহাটির বড়মার আশীর্বাদ নিতে যাব। হনুমান মন্দিরে পুজো দেব। তারপরে প্রচার শুরু করব।' কেন নৈহাটিতে যাবেন, সেই কারণেরও ব্যাখ্যা দিয়েছেন অর্জুন। এই প্রসঙ্গে ব্যারাকপুরের তৃণমূল প্রার্থী তথা রাজ্যের মন্ত্রী পার্থ ভৌমিককে আক্রমণ করে বলেছেন, 'ওখানকার যিনি বিধায়ক, তাঁকে প্রার্থী করা হয়েছে। কত মানুষের ক্ষতি করেছেন। মানুষের যাতে ভাল হয়, তাই নৈহাটির বড়মার মন্দিরে পুজো দেব।'

Advertisement

অর্জুন তৃণমূলে নেতা ছিলেন। ২০১৯ সালে লোকসভা নির্বাচনের আগে টিকিট বণ্টন নিয়ে সেবারও অসন্তোষ প্রকাশ করেছিলেন ব্যারাকপুর শিল্পাঞ্চলের 'বাহুবলী' নেতা অর্জুন। সেবার দীনেশ ত্রিবেদীর সঙ্গে অর্জুনের দ্বন্দ্ব প্রকাশ্যে এসেছিল। তারপরেই তৃণমূল ছেড়ে বিজেপিতে যোগ দেন অর্জুন। সেবার দীনেশকে প্রার্থী করেছিল তৃণমূল। বিজেপিতে গিয়ে ব্যারাকপুরে প্রার্থী হন অর্জুন। ২০১৯ সালের লোকসভা ভোটে ব্যারাকপুর থেকে পদ্ম প্রতীকে লড়ে জয়ী হন এই দাপুটে নেতা। কিন্তু তার পরে ২০২২ সালে বিজেপি ছেড়ে ফের তৃণমূলে প্রত্যাবর্তন ঘটে অর্জুনের। গত রবিবার ব্রিগেডে জনগর্জন সভা থেকে রাজ্যের ৪২টি লোকসভা আসনে প্রার্থী ঘোষণা করে তৃণমূল। ঠাঁই পাননি অর্জুন। ব্যারাকপুর থেকে ভোটে লড়ছেন পার্থ ভৌমিক। এরপরেই অর্জুনের গলায় ক্ষোভের সুর শোনা যায়। যার জেরে ফের তাঁর দলবদলের জল্পনা জোরালো হয়। অর্জুন  জানান, লোকসভার টিকিট না দেওয়ায় তাঁকে বিধানসভা ভোটে বরানগর থেকে দাঁড় করানোর প্রস্তাব দিয়েছে তৃণমূল। সম্প্রতি ওই কেন্দ্রের বিধায়ক পদ থেকে ইস্তফা দিয়ে বিজেপিতে যোগ দিয়েছেন তাপস রায়। তাপসের কেন্দ্র তাঁকে দেওয়ার প্রস্তাব তৃণমূল দিয়েছে বলে দাবি করেছেন অর্জুন। এই প্রস্তাব প্রত্যাখ্যান করে অর্জুন জানিয়েছেন, তিনি ব্যারাকপুর ছাড়তে চান না। ব্যারাকপুরকে যে তিনি মনে-প্রাণে ভালবাসেন, সেই বার্তা ফেসবুকে তুলে ধরেছেন স্থানীয় সাংসদ। ফেসবুকে লিখেছেন, 'আমি সর্বদা ব্যারাকপুরের মানুষের সেবা করেছি এবং শেষ নি:শ্বাস পর্যন্ত করব।'


তৃণমূলকে নিশানা করে অর্জুন বলেছেন, 'তৃণমূলে আমার প্রয়োজন ফুরিয়েছে। তাই দল আমায় ছুড়ে ফেলে দিয়েছে। দলের উপর বিশ্বাস ভেঙে গিয়েছে।' তাঁর 'গলা কাটা হয়েছে' বলেও মন্তব্য করেছেন অর্জুন। অর্জুনের অফিস থেকে মমতা এবং অভিষেক বন্দ্যোপাপাধ্যায়ের ছবি সরিয়ে রাখা হয়েছে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর ছবি।

অর্জুনকে কি স্বাগত জানাবে বিজেপি?

এই প্রসঙ্গে মঙ্গলবার মেদিনীপুরের বিজেপি সাংসদ দিলীপ ঘোষ বলেন, 'এরকম অনেক নেতাই ত্রিশঙ্কু হয়ে গিয়েছেন। পশ্চিমবঙ্গের রাজনীতিতেও এখন পরিষ্কার হচ্ছে। মোদীর নেতৃত্বে দুর্নীতিগ্রস্ত নেতাদের রাজনীতির জামা গায়ে পরে ঘুরে বেড়ানো বন্ধ হয়ে যাবে। উনি কোথায় যাবেন, সেটা এখন আর ওঁর হাতে নেই।' বিজেপি রাজ্য সভাপতি সুকান্ত মজুমদার বলেছেন, 'অর্জুনের বোধদয় হয়েছে।'

অন্য দিকে, অর্জুন প্রসঙ্গে বুধবার শিলিগুড়িতে সাংবাদিক বৈঠকে মুখ্যমন্ত্রী তথা তৃণমূলনেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, 'ও তো বিজেপিরই সাংসদ। ওখানেই তো রয়েছেন।' এরপর সরব হন অর্জুনও। অবশেষে সব জল্পনার অবসান ঘটিয়ে নিজেই বিজেপিতে যোগদানের কথা জানালেন অর্জুন। এখন দেখার, বিজেপিতে যোগদানের পর ফের ব্যারাকপুর থেকে পদ্ম প্রতীকে ভোটে লড়েন কিনা তিনি।
 

Advertisement