scorecardresearch
 

Dilip Ghosh: 'কাঠিবাজি রাজনীতির অঙ্গ', হেরে কাকে নিশানা দিলীপের?

লোকসভা ভোটে হারতেই রাজ্য নেতৃত্বকে নিশানা করলেন দিলীপ ঘোষ। কাঠিবাজি, চক্রান্ত ছিল বলে দাবি করেছেন তিনি। এবার লোকসভা ভোটে মেদিনীপুর আসন থেকে সরিয়ে বর্ধমান-দুর্গাপুর আসনে দিলীপ ঘোষকে প্রার্থী করে বিজেপি।

Advertisement
'কাঠিবাজি রাজনীতির অঙ্গ', হেরে কাকে নিশানা দিলীপের? 'কাঠিবাজি রাজনীতির অঙ্গ', হেরে কাকে নিশানা দিলীপের?
হাইলাইটস
  • লোকসভা ভোটে হারতেই রাজ্য নেতৃত্বকে নিশানা করলেন দিলীপ ঘোষ
  • কাঠিবাজি, চক্রান্ত ছিল বলে দাবি করেছেন তিনি

লোকসভা ভোটে হারতেই রাজ্য নেতৃত্বকে নিশানা করলেন দিলীপ ঘোষ। কাঠিবাজি, চক্রান্ত ছিল বলে দাবি করেছেন তিনি। এবার লোকসভা ভোটে মেদিনীপুর আসন থেকে সরিয়ে বর্ধমান-দুর্গাপুর আসনে দিলীপ ঘোষকে প্রার্থী করে বিজেপি। সেখানে তাঁকে লড়াইয়ে নামতে হয় তৃণমূলের কীর্তি আজাদের বিরুদ্ধে। যদিও এই আসনে জেতার বিষয়ে আশাবাদী ছিলেন দিলীপ। তবে, ভোটের ফল আসতেই চিত্রটা পরিষ্কার হয়ে গিয়েছে। কীর্তি আজাদের কাছে প্রায় ১ লক্ষ ৩৮ হাজার ভোটে হেরেছেন দিলীপ। 

আজ দিলীপ লোকসভা ভোটে বিজেপির খারাপ ফল নিয়ে মন্তব্য করেছেন। তিনি বলেন, 'পার্টি চলতে থাকে, লড়াই চলতে থাকে, নেতা পরিবর্তন চলতে থাকে। রেজাল্টেরও পরিবর্তন হতে থাকে। এটা ঠিক যে আমরা ২১ সাল অবধি এগিয়েছি। যার কারণে ১৮ সাংসদ, ৭৭ জন এমএলএ পেয়েছি। তারপর আটকে গেছি। আমরা এগোতে পারিনি ৩-৪ বছর। সেটা ভাবা দরকার। আমার মনে হয় লড়াইয়ে কোথাও না কোথাও ফাঁক থেকেছে। লড়াই সেভাবে হয়নি, সব কর্মীরা নামেননি। গতি যেন রুদ্ধ না হয়ে যায় তার জন্য চিন্তা ভাবনা করার দরকার আছে। তাহলে কর্মীরা হতাশ হয়ে যাবে। 

পদ থেকে আপনাকে অপসারণ এবং আপনার আসন বদলেই কি প্রভাব পড়েছে? জবাবে দিলীপ বলেন,'অসম্ভব কিছু না। সব সিদ্ধান্তের প্রভাব পড়ে। বাংলার মানুষ বলবেন এইগুলো ঠিক হয়েছে না ভুল হয়েছে। আমাকে দল যখন যা বলেছে আমি নিষ্ঠার সঙ্গে করেছি। পুরো ইমানদারি দিয়ে করেছি। ফাঁকি রাখিনি। এবার বর্ধমানে হেরে যাওয়া কঠিন সিট ছিল। যারা সেখানে সেদিন ছিলেন তারাও মেনেছেন একটা জায়গায় অন্তত লড়াই হয়েছে। দলের পলিসির ওপর অনেক কিছু নির্ভর করে। যারা আমাকে ওখানে পাঠিয়েছেন তাঁরা ভাববেন।'

প্রচারের মাঝে আন্দামানে পাঠানো

দিলীপ বলেন, 'কালাপানি কাকে বলে আমি জানি। চক্রান্ত এবং কাঠিবাজি রাজনীতির অঙ্গ। আমি ব্যাপারটা সেভাবেই নিয়েছি। তার পরেও যথেষ্ট পরিশ্রম করেছি। কিন্তু সফলতা আসেনি। রাজনীতিতে সবাই কাঠি নিয়ে ঘুরতে থাকে। আমি যেটুকু রাজনীতি বুঝি, দেশে বহুবার এরকম উত্থান পতন হয়েছে। রাজীব গান্ধীর মৃত্যুর পর বিজেপি ২ টো সিট পেয়েছিল। অটল বিহারী বাজপেয়ীর মতো লোককে খারাপ ভাবে হারতে হয়েছিল। বাজপেয়ী সরকার চলে যাওয়ার আগে মমতার মাত্র ৮টা সিট ছিল। উনি বাড়িয়ে ক্ষমতায় এসেছেন। আমার কর্মী যাঁরা তাঁদের এই উত্থান পতনকে সঙ্গী করেই এগোতে হবে। ব্যক্তিগত রেষারেষির এবং ভুল পলিসির জন্য এইভাবে হাজার হাজার কর্মীর আত্মত্যাগ বিফলে চলে গেলে পরবর্তী কালে তাঁদের দলের কাজে লাগানো মুশকিল হয়ে যাবে। মানুষের পার্টির ওপর আস্থা চলে যাবে। নেগেটিভ রেজাল্ট হলে মন খারাপ হয়। ২০২১ এর ভোট পরবর্তী সন্ত্রাসের পর অনেক কর্মী বসে গিয়েছিলেন। কিন্তু পার্টির কথা ভেবে আবার নির্বাচনের আগে ফিরে এসেছিলেন। তাঁরা কাল থেকে অনেকেই ঘরছাড়া। কারণ তাঁরা আগের অভিজ্ঞতা থেকে ভয় পাচ্ছেন। আমাকে দেখে অনেকে বেরিয়েছিল। যদি আবার সেরকম পরিস্থিতি হয় তাহলে আগামী দিনে পার্টি আরও ৫ বছর পিছিয়ে যাবে। পার্টির এবার ভাবা উচিত। যে কর্মীরা পার্টির জন্য বেরোয় তাঁরা যেন তাদের সংকটে পার্টিকে পাশে পায়। এটাও পার্টিকে দেখতে হবে। '

Advertisement

রামমন্দির ও ফৈজাবাদে পার্টির হার

দিলীপের কথায়, 'রামমন্দির আন্দোলন যখন প্রথম শুরু হয় তখন ওখানে সিপিআই জিতত। তারপর বিনয় কাটিহারকে ওখানে নিয়ে এসে জেতা হয়। রামমন্দির নিয়ে এত আন্দোলন এবং মন্দির বানিয়ে দেওয়া, তারপরেও কেন হেরেছি? কারণটা পৌরাণিক। অযোধ্যার লোক রামকে ছাড়েনি। সীতাকে বনবাসে পাঠিয়েছেন। মোদী কে? যোগী কে?'

ইন্ডিয়া জোটের সক্রিয়তা

দিলীপ বলেন, 'নাইডু এবং নীতীশবাবুর মতো পাল্টিরাম যারা আছেন তাঁদের ওপর ভরসা করা মানেই বেইমানি। বারবার ঠকতে হয়। এরা বিজেপির সাপোর্ট নিয়ে জিতে আসেন। তারপর বিজেপি ছেড়ে অন্যের সঙ্গে হাত মেলান। এটা দল দেখবে। তবে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের কথায় কেউ বিশ্বাস করে না। সন্দেশখালির আন্দোলনটা রাজনৈতিক ছিল না। সাধারণ মানুষের আন্দোলন ছিল। পরে এটাকে বিজেপি টেক আপ করেছে। আমরা তাঁদের ন্যায় দেওয়ার চেষ্টা করেছি। কালও অত্যাচার হয়েছে। এরপর ওই মহিলারা ওখানে আর থাকতে পারবে কি না জানি না। এই আন্দোলন সারা দেশে নজির গড়েছিল। ওটা আমাদের পুরনো গড়। তৃণমূল জমানাতেও আমরা ওখানে ভাল ভোট পেতাম। কিন্তু আরও ভাল রেজাল্ট হবে ভেবেছিলাম। হয়নি।'

Advertisement