আলিপুরদুয়ার কাঁটা ক্রমশ বিঁধতে শুরু করেছে বিজেপির পায়ে। মনোজ টিগ্গাকে আলিপুরদুয়ার লোকসভা কেন্দ্রে প্রার্থী ঘোষণার পর থেকেই অসন্তোষ বাড়ছে জন বার্লার সমর্থক ও অনুগামীদের মধ্যে। বৃহস্পতিবার রাতে জলপাইগুড়ির গয়েরকাটা চা বাগানে জন বার্লার সমর্থনে পোস্টার পড়েছে। তাঁকে এই কেন্দ্রে বিজেপির প্রার্থী করার দাবি জানানো হয়েছে হাতে লেখা সেই পোস্টারে।
সম্প্রতি, বিজেপি তাদের প্রথম দফার প্রার্থী তালিকা ঘোষণা করেছে। আলিপুরদুয়ার লোকসভা কেন্দ্রের সাংসদ জন বার্লা। তবে এবার বার্লাকে টিকিট দেওয়া হয়নি। বদলের প্রার্থী হিসেবে মাদারিহাটের বিধায়ক মনোজ টিজ্ঞার নাম ঘোষণা করা হয়েছে। আর তাপর থেকেই ক্ষোভে ফুঁসছেন জন বার্লা ও তাঁর অনুগামীরা। গয়েরকাটারে চা বাগানে জন বার্লার সমর্থনে এবং মনোজ টিজ্ঞার বিরুদ্ধে পোস্টার পড়েছে। কোনও পোস্টারে লেখা, 'মনোজ টিগ্গা কো দূর হঠাও, জন বার্লাকো সংসদ বানাও’। কোথাও পোস্টারে লেখা, 'জন বার্লাকে সাংসদ দেখতে চাই।'
যদিও জন বার্লার বক্তব্য, কারা এই পোস্টার দিয়েছেন সে সম্পর্কে তিনি কিছুই জানেন না। তাঁর আরও দাবি, এই চা বাগানে তাঁর কোনও সংগঠনও নেই। তবে নিজের ক্ষোভের কথা চাপা রাখেননি বার্লা। তিনিও পাল্টা চাপ বাড়াচ্ছেন দলের ওপরে। উত্তরবঙ্গের একাধিক চা বাগানে তাঁর সমর্থনে প্রচার চলছে। সূত্রের খবর, পরিস্থিতির সুযোগ নিয়ে তৃণমূলের তরফে বার্লার সঙ্গেও যোগাযোগ করা হচ্ছে। বুধবার আলিপুরদুয়ার লোকসভা কেন্দ্রের মাদারিহাট রেল স্টেশনে কাঞ্চনকন্যা এক্সপ্রেসের স্টপেজ চালু হয়। সে অনুষ্ঠান উপলক্ষে আমন্ত্রিত ছিলেন বিধায়ক মনোজ টিগ্গা এবং বর্তমান সাংসদ ও কেন্দ্রীয় মন্ত্রী জন বার্লা। সেখানে মনোজকে দেখে তেলেবেগুনে জ্বলে ওঠেন জন। তাঁর দিকে আঙুল তুলে বার্লাকে বলতে শোনা যায়, 'আমার সঙ্গে উনি ছল করেছেন। উনি এখানে থাকলে আমি থাকব না।' স্টেশন থেকে বেরোনোর সময় বলেন, ‘নো ভোট টু মনোজ’।
যদিও মনোজ এসব নিয়ে কোনও পাল্টা মন্তব্যের রাস্তায় হাঁটেননি। বর্তমানে মাদারিহাটের বিধায়ক মনোজ টিগ্গা। পেশায় শিক্ষক মনোজের এলাকায় ভাল মানুষ বলে সুনাম রয়েছে। দুর্নীতিরও তেমন কোনও অভিযোগ নেই। আজতক বাংলাকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে মনোজ বলেছেন, 'জন বার্লার সঙ্গে আমার কোনও বিরোধ নেই। অগ্রজ ও বর্তমান মন্ত্রী ও সাংসদ হিসেবে জনের অভিজ্ঞতা কাজে লাগাতে চাই।' কিন্তু জন তো তাঁর প্রকাশ্যে বিরোধিতা করছেন, এ বিষয়ে জিজ্ঞাসা করা হলে তিনি বলেন, 'দল সব জানে। দু-একদিন দিন দেখব। তারপর পরবর্তী পদক্ষেপ ঠিক করব। জনকে সঙ্গে নিলে লাভ বা ক্ষতি হবে কি না, সেটা নিয়ে ভাবছি না। আমি দলের প্রার্থী। দল যেভাবে নির্দেশ দেবে পরবর্তী নীতি ঠিক করব।'