Loksabha Election 2024: এই প্রথম চুপচাপ ভোটেই নির্বাচিত হবেন পাহাড়ের লোকসভা নির্বাচন। এতদিন খাতায় কলমে একাধিক দল থাকলেও এক দলীয় রাজনীতিই এখানে আধিপত্য লাভ করেছে। এক সময় সুবাস ঘিসিংয়ের জিএনএলএফ এবং পরে বিমল গুরুংয়ের নেতৃত্বে গোর্খা জনমুক্তি মোর্চাই শেষ কথা বলেছে। কিন্তু ২০১৭ সালের পর থেকে পরিস্থিতি বদলেছে। বিমল সরে গিয়েছেন আড়ালে, তার জায়গায় মাথা তুলেছে একের পর নতুন নেতা ও দল। যাদের সবার কিছু না কিছু গ্রহণযোগ্যতা রয়েছে নিজ নিজ এলাকায়। যা এবারের দার্জিলিং পাহাড়ের ভোটকে আলাদা মাত্রা এনে দিয়েছে। ফলে কে জিতবে ভোটের দোরগোড়ায় দাঁড়িয়েও বলা যাচ্ছে না।
মূল লড়াই রয়েছে বিজিপিএম সমর্থিত তৃণমূল এবং বিজেপির মধ্যে এটা সবাই জানে। তবে ভোটে খেলা জমিয়ে দিয়েছে কং-বাম জোট। এমন একজনকে প্রার্থী করেছে তারা, যাঁর রাজনৈতিক যোগাযােগ নতুন হলেও সামাজিক সংগঠনের অভিজ্ঞতা দীর্ঘদিনের। পাশাপাশি দার্জিলিং পাহাড়ের বাইরেও উত্তর-পূর্ব ভারতের একাধিক রাজ্য ও উত্তর ভারতের বেশ কিছু রাজ্যে ছড়িয়ে থাকা গোর্খা সংগঠনের মধ্য়ে তাঁর প্রভাব রয়েছে। ফলে তাঁকেও বাতিল করা যাচ্ছে না। তাঁর সঙ্গে সমর্থন রয়েছে হামরো পার্টিরও। ফলে খেলা জমে উঠেছে। এবার তাই কেউ আগে বলে দিতে পারছেন না এই দলই জিতবে। যা এর আগের ভোটগুলিতে চোখ বুজে বলে দেওয়া যেত।
পাহাড়ে এর আগে কংগ্রেস, সিপিএম, বিজেপি সব দলই পালা করে সাংসদ পেয়েছে। কিন্তু কোনও দলের ভূমিকাতেই পাহাড়ের মানুষ সন্তুষ্ট নন। বিজেপির উপর তাঁদের আশা ছিল, তারা প্রতিশ্রুতি রক্ষা করবে। কিন্তু আসলে তারাও কথা রাখেনি বলে অভিযোগ স্থানীয় জনতা ও রাজনৈতিক দলগুলির। ফলে এবার একটা পালাবদলের পরিস্থিতি রয়েছে। তার উপর এতদিন পাহাড়ে যখন যে দল ক্ষমতায় ছিল, তাদের একক প্রভাব ছিল। এখন পাহাড়ে একাধিক দলের দাপট রয়েছে। একেক নির্বাচনে একেক দল জিতেছে। যদিও দল ভাঙিয়ে এখন সবই বিজিপিএম। তবে তাতে পাহাড়ের মানুষের কতটা সম্মতি রয়েছে তা ফের নির্বাচন এলে বোঝা যাবে। তবে বিজেপির পক্ষে এবার দার্জিলিং লোকসভা জয় সহজ হবে না।
তৃণমূলের দার্জিলিং লোকসভা কেন্দ্রের প্রার্থী গোপাল লামা। প্রাক্তন ডাব্লুবিসিএস অফিসার গোপাল লামার প্রশাসনিক দক্ষতা সর্বজনস্বীকৃত। তার পাশাপাশি তিনি জেন্টলম্যান হিসেবে জেলায় পরিচিত। তাঁকে প্রার্থী করে তৃণমূল এক ঢিলে দুই শিকার করেছে। প্রথমত ভূমিপুত্র ইস্যুতে আগে থেকেই কিছুটা এগিয়ে শুরু করবে তারা। অন্যদিকে অনিত থাপা মনোনীত প্রার্থী গোপাল লামাকে প্রার্থী করায় অরাজনৈতিক ব্যক্তিত্ব হিসেবে প্রার্থী হিসেবে তাঁর বিরুদ্ধে কোনও অস্ত্র নেই বিরোধীদের। যদিও বিজেপির প্রার্থী হিসেবে রাজু বিস্তার বিরুদ্ধে পাহাড়ের দাবিকে মান্যতা না দেওয়া ও প্রতিশ্রুতি না রাখার অভিযোগ রয়েছে। যদিও সেটা খুব একটা জোরালো নয়। বিজেপির সাংগঠনিক ভোট কিছুটা রয়েছে। এদিকে বিমল গুরুং সহ বিনয় তামাং, অজয় এডওয়ার্ডরা কংগ্রেসের প্রশংসা করেছেন কথা রাখার ক্ষেত্রে। সেখানে তাঁদের কিছু ভোট থাকবে। কিন্তু সেটা কতটা, তা কেউ জানে না।