অধীর চৌধুরীকে চরম বার্তা দিয়েছিলেন মল্লিকার্জুন খাড়গে। রবিবার পশ্চিমবঙ্গে দলের সদর দফতর বিধানভবনে খাড়গের ছবিতে কালি লেপে দেওয়া হয়েছিল। ওই ঘটনায় এবার পুলিশের দ্বারস্থ হল প্রদেশ কংগ্রেস। এন্টালি থানায় অভিযোগ দায়ের করা হয়েছে। অভিযোগপত্রে বলা হয়েছে, দোষীদের শীঘ্রই খুঁজে বের করা হোক।
জাতীয়স্তরে তৃণমূলের সঙ্গে জোট রাখতে আগ্রহী কংগ্রেসের শীর্ষ নেতৃত্ব। কিন্তু রাজ্যে ক্রমাগত মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে আক্রমণ করে চলেছেন প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি। সেই আবহে সংঘাত তৈরি হয় অধীর ও খাড়গের মধ্যে। রবিবার প্রদেশ কংগ্রেসের সদর দফতরে খাড়গের ছবিতে কালি লেপে দেওয়া হয়। সেই সঙ্গে লিখে দেওয়া হয়,'তৃণমূলের দালাল'। ঘটনা জানাজানি হতেই দুধ দিয়ে ধুইয়ে কালি মোছেন মধ্য কলকাতার কংগ্রেস নেতারা।
গোটা ঘটনায় অধীর ঘনিষ্ঠদের বিরুদ্ধে উঠেছিল অভিযোগের আঙুল। তবে কংগ্রেস দাবি করে, বহিরাগতরা এ কাজ করেছে। সোমবার এন্টালি থানায় অভিযোগপত্রে লেখা হয়েছে, এই ষড়যন্ত্রের পিছনে থাকা দোষীদের খুঁজে বের করা হোক। কংগ্রেসের মুখপাত্র কেতন জয়সওয়াল বলেন,'কোনও প্রকৃত কংগ্রেস কর্মী এ কাজ করতে পারেন না। মল্লিকার্জুন খাড়গে আমাদের নেতা, তিনি সর্বভারতীয় সভাপতি। তাঁর ছবিতে কালি লেপে দিয়েছে তৃণমূলের লোকেরা'।
কংগ্রেসের অভিযোগ উড়িয়ে দিয়েছে তৃণমূল কংগ্রেস। এন্টালির তৃণমূল বিধায়ক স্বর্ণকমল সাহা বলেন,'কংগ্রেসের অর্ন্তদ্বন্দ্বের কারণেই এমনটা ঘটেছে। মল্লিকার্জুন খাড়গের কথা অধীরবাবুরা মানতে পারছেন না। আমাদের দলের ছেলেরা ভোটের কাজে ব্যস্ত'।
খাড়গে বনাম অধীর
ইন্ডিয়া জোটকে বাইরে থেকে সমর্থন করবেন বলে জানিয়েছিলেন মমতা। যার প্রেক্ষিতে অধীর চৌধুরী বলেছিলেন,'আগামী দিনে বিজেপিকেও সমর্থন করতে পারেন মমতা'। অধীরের এই মন্তব্য নিয়ে সাংবাদিক বৈঠকে মল্লিকার্জুন খাড়গের বক্তব্য জানতে চাওয়া হয়। খাড়গে সাফ জানান,'মমতাজি প্রথমে বলেছিলেন বাইরে থেকে সমর্থন করবেন। এর আগেও একাধিক দল বাইরে থেকে সমর্থন করেছে। ২০০৪ সালে ইউপিএ সরকারকে বাইরে থেকে সমর্থন করেছিল বামেরা। কিন্তু অতিসম্প্রতি তিনি জানিয়েছেন, ইন্ডিয়া জোট সরকারে এলে তিনি শামিল হবেন। ফলে এটা স্পষ্ট তিনি আমাদের সঙ্গে আছেন'।
খাড়গে আরও বলেন,'অধীররঞ্জন চৌধুরী সিদ্ধান্ত নেওয়ার কেউ নন। সিদ্ধান্ত আমরা নিই। কংগ্রেস দল এবং হাইকম্যান্ড সিদ্ধান্ত নেয়। আমরা যে সিদ্ধান্ত নেব, সেটাই মেনে চলতে হবে'। কিন্তু অধীরের বক্তব্যের সঙ্গে পার্টি লাইনের মিল হচ্ছে না কেন? খাড়গে বলেন,'হাইকম্যান্ড আমরা। আমরা যে সিদ্ধান্ত নেব, সেটা মেনে চলতে হবে। কারও না পোষালে বাইরে যেতে পারেন।
খাড়গের মন্তব্যে অধীরের প্রতিক্রিয়া,'আমার বিরোধিতা নৈতিক। কংগ্রেসকে যে খতম করবে আমি তাঁকে খাতির করতে পারি না! এ লড়াই আমি কোনওভাবে থামাতে পারি না'।