ওবিসি সংরক্ষণ নিয়ে বিজেপিকে তীব্র আক্রমণ শানান তৃণমূল নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। এদিন দমদম লোকসভার পানিহাটির জনসভা থেকে ওবিসি সংরক্ষণ সার্টিফিকেট বাতিল প্রসঙ্গে গর্জে ওঠেন মমতা। বুধবার, ২০১০ সালের পর তৈরি হওয়া সমস্ত OBC সার্টিফিকেট বাতিল করেছে কলকাতা হাইকোর্ট।
বলেন, "বারবার বলেছে মুসলিমরা নাকি জিতে গিয়ে তফসিলিদের সংরক্ষণ তুলে দেবে। হিন্দু-মুসলমানে ভাগাভাগি করে দিচ্ছেন দেশের প্রধানমন্ত্রী। সারা বিশ্ব শুনলে নিন্দা করবে এবং এটাই আজ কোর্টকে দিয়ে করিয়েছে। কোর্টের সবাই খারাপ নয়, আমি কোর্টকে সম্মান করি, কিন্তু যে ব্যক্তি এই রায় দিয়েছে ওবিসি সংরক্ষণ থেকে মুসলিমদের বাদ দিতে হবে, আমি এই রায় মানি না, মানব না। ওবিসি রিজার্ভেশন চলবে। এর জন্য উচ্চতর কোর্টে যেতে হলে যাব। এরা আমায় চেনে না। আমি মাথা নত করার লোক নই। আমি বারবার বলেছি কেন মুসলিমরা তফসিলিদের চাকরি কাড়তে যাবে? তাদের রিজার্ভেসনে ভাগ বসাতে যাবে।"
হাইকোর্টের নির্দেশ নিয়ে তিনি আরও বলেন, "এদের এত খারাপ ভাবার কারণ নেই, তুমি পছন্দ করো না বলে। মুসলিমরা এত খারাপ নয়। মোদীবাবু জেনে রাখুন, আপনি আগুন নিয়ে খেলছেন। আপনাকে করতে দেব না। মুসলিমদের নামে দোষ দেবেন না। শুধু সংখ্যালঘুদের বাদ দিলেন, এটা কখনও আইন হয়? আইনে কখনও ভেদাভেদ হতে পারে না।"
ওবিসি সংরক্ষণ সার্টিফিকেট বাতিল প্রসঙ্গে আরও বলেন, "২০১২ সাল থেকে চলছে একটা আইন। আর একজন বিচারক বলছে আরএসএসে ছিলাম, কেউ বলছে আমি আরএসএসের। কেউ বলছে আমি বিজেপি। আমি যখন ওবিসি রিজার্ভেশন করেছিলাম, আইন মেনে করেছিলাম। সার্ভে করে করেছিলাম। উপেন বিশ্বাস তখন সার্ভের কমিটির চেয়ারম্যান ছিলেন। কমিশন থেকে রিপোর্ট এনে করেছিলাম। তখন কোর্টে কেস হয়েছিল, করেছিল বিজেপি, সিপিএম, হেরে গিয়েছিল। ওবিসি নিয়ে তুমি দেখবার কে? সার্ভে করেছ? দেখেছ কমিশন? কোনটা করা উচিত? তুমি গভর্মেন্ট চালাবে না সরকার চালাবে? ঠিক করে নাও।"
এদিন তাঁর নিশানায় ছিল সিপিএম প্রার্থীও। বলেন, "এই নির্বাচনে মোদীবাবুকে হারানো জরুরি। এখানে সিপিএমের কেউ কেউ যাদবপুর থেকে এসে দাঁড়িয়েছেন আর বড় বড় জ্ঞান দিচ্ছেন। এরা হল বিজেপির এক নম্বর দালাল।"
উল্লেখ্য, বুধবার কলকাতা হাইকোর্টে বিচারপতি তপোব্রত চক্রবর্তী ও বিচারপতি শেখর মান্থ্যর ডিভিশন বেঞ্চ জানিয়েছে, ২০১০ সালের পর থেকে যে ওবিসি সার্টিফিকেটগুলি তৈরি হয়েছে, তা আইনানুগ হয়নি। সেই কারণেই এগুলি বাতিল করা হচ্ছে। কলকাতা হাইকোর্টের রায় অনুযায়ী আরও বলা হয়েছে, বাতিল হওয়া ওবিসি সার্টিফিকেট আর কোনও কাজে ব্যবহার করা যাবে না। তবে না, যাঁরা ইতিমধ্যেই এই সার্টিফিকেটের মাধ্যমে সংরক্ষণ নিয়ে চাকরি পেয়েছেন, তাঁদের ভয়ের কারণ নেই। তাঁদের সার্টিফিকেট বাতিল হবে না।