দল ও দলনেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের প্রতি একরাশ ক্ষোভ প্রকাশ করলেন বিক্ষুব্ধ তৃণমূল নেতা ও বরানগরের বিধায়ক তাপস রায়। আজ তিনি জানান, ইডি অভিযানের পর থেকে তাঁর কথা বলেনি দল। মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্য়ায়ও এনিয়ে কোনও কথা তাঁর সঙ্গে বলেননি। গতকাল রাত থেকেই তাপস রায়কে নিয়েও তৈরি হয় নতুন জল্পনা। বরানগরের বিধায়ক তাপস রায়কে ক্রমেই বাড়ছে গুঞ্জন। সোমবার সকালে তাপস রায়ের বাড়িতে হাজির হন কুণাল ঘোষ ও ব্রাত্য বসু। ঘণ্টা দুয়েকের বেশি তাঁরা ছিলেন। তাপসের সঙ্গে বৈঠকের পর বেরিয়ে কুণাল ঘোষ বলেন, 'দলের কর্মী হিসেবে নেতাকে অনুরোধ করেছি দলে থাকার জন্য। দাদা ও ভাই হিসেবে কথা বলেছি। যদি কোনও সিদ্ধান্ত নেওয়ার থাকে, সেটা তিনিই জানাবেন।'
পরে সাংবাদিক বৈঠকে তাপস একরাশ ক্ষোভ প্রকাশ করেন। তিনি বলেন, ১২ জানুয়ারি তাঁর বাড়িতে ইডি অভিযান চালিয়েছিল। সেই থেকে তাঁর সঙ্গে দলের শীর্ষ নেতৃত্ব কোনও যোগাযোগ করেননি। তাপস বলেন, ' এত দুর্নীতি, তারপর সন্দেশখালি, ঘরে বাইরে আপমান ও উপেক্ষা। সে সব আমাকে তাড়না দিয়েছে।'
এরপরই ক্ষোভের সুরে তাপস বলেন, '২৩-২৪ বছর আমার সম্পর্ক তৃণমূলের সঙ্গে। আমি যা মনে করেছি সেটা করেছি। ১২ জানুয়ারি আমার বাড়িতে একটি ঘটনা ঘটে যায়। ইডি অভিযান চালিয়েছিল। সেই অভিযানের পর ৫২ দিন কাটলেও দল আমার পাশে দাঁড়ায়নি। ৫২ দিন হয়ে গেলেও মুখ্যমন্ত্রীও আমার কথা বলেননি। উনি শাহজাহানের পাশে দাঁড়িয়েছিলেন। বলেছিলেন যে শাহজাহানকে ইডি টার্গেট করছে। কিন্তু আমাকে নিয়ে কিছু বলেননি। আমার পাশেও দাঁড়াননি। দলের তরফে কেউ ফোন করে আমার পরিবারের লোকের সঙ্গে কথা বলেননি। সেটা সকলেই জানে। আমাকেও ডাকা হয়নি বা কেউ ফোনও করেননি। আমি ভারাক্রান্ত। এটার পেছনে কে আছে সেটা সবাই জানেন। অনেকেই বলেছে এর পেছনে আমার দলেরই কেউ আছেন। যখন আমার বাড়িতে রেড চলছে তখন স্বামী বিবেকানন্দর বাড়িতে কেউ কেউ উল্লাস করেছেন। আমাকে অনেকেই এটা বলেছেন। তবে অনেকেই এটা নিয়ে প্রতিবাদও করেছেন। ব্রাত্য ও কুণাল এসেছিল। আমার সঙ্গে কথা বলার সময়েই কুণালের কাছে শোকজের নোটিশ এসেছে। এই দলে যাদের শোকজ করা উচিত, বহিষ্কার করা উচিত, তাঁরা বহাল তবিয়তে রয়েছেন।'
বর্তমানে বরানগরের বিধায়ক তাপস রায়। সাম্প্রতিক অতীতে একাধিকবার তিনি তৃণমূল সাংসদ সুদীপ বন্দ্যোপাধ্যায়ের বিরুদ্ধে প্রকাশ্যে ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন। সুদীপই তাঁর বাড়িতে ইডি পাঠানোর ব্যবস্থা করেছিলেন, বলেও বিস্ফোরক দাবি করেন তাপস। তৃণমূলের একটি অংশ এও দাবি করে, তাপস রায় যোগ্য মর্যাদা পাননি তৃণমূল কংগ্রেসে। দীর্ঘদিন ধরেই তাঁর অভিমান এই নিয়ে। আগামী ১০ মার্চ তৃণমূল কংগ্রেসের ব্রিগেড সমাবেশ। তাপস রায়কে সে ভাবে সক্রিয় হতে দেখা যাচ্ছিল না।