ভোটের মুখে দলবদলের হিড়িক বাংলার রাজনীতিতে নয়া ঐতিহ্য। যার নির্যাস, এবার তৃণমূল কংগ্রেসের (TMC) প্রবীণ বিধায়ক তাপস রায়েরও (Tapas Roy) দল ছাড়ার জল্পনা। এখনও পর্যন্ত বিভিন্ন সূত্রের খবর, তাপস রায় সম্ভবত তৃণমূল ছেড়ে বিজেপি-তে যোগ দিতে চলেছেন। সূত্রের খবর, আজ (সোমবার) বা মঙ্গলবারের মধ্যেই হয়তো দল ছাড়ার কথা ঘোষণা করতে পারেন তাপস। ইতিমধ্যেই বিজেপি নেতৃত্বের সঙ্গে একপ্রস্থ বৈঠক সেরে ফেলেছেন তাপস রায়। বিজেপি-তে যোগ দিলে লোকসভা নির্বাচনে উত্তর কলকাতায় প্রার্থী হতে পারেন তাপস রায়। এমন চর্চাও তুঙ্গে বঙ্গ রাজনীতিতে।
ব্রিগেডের আগে সক্রিয় নন তাপস রায়
বর্তমানে বরানগরের বিধায়ক তাপস রায়। সাম্প্রতিক অতীতে একাধিকবার তিনি তৃণমূল সাংসদ সুদীপ বন্দ্যোপাধ্যায়ের বিরুদ্ধে প্রকাশ্যে ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন। সুদীপই তাঁর বাড়িতে ইডি পাঠানোর ব্যবস্থা করেছিলেন, বলেও বিস্ফোরক দাবি করেন তাপস। তৃণমূলের একটি অংশ এও দাবি করে, তাপস রায় যোগ্য মর্যাদা পাননি তৃণমূল কংগ্রেসে। দীর্ঘদিন ধরেই তাঁর অভিমান এই নিয়ে। আগামী ১০ মার্চ তৃণমূল কংগ্রেসের ব্রিগেড সমাবেশ। তাপস রায়কে সে ভাবে সক্রিয় হতে দেখা যাচ্ছে না। ৩০ জানুয়ারি মহাত্মা গান্ধীর মৃত্যুদিনে শ্রদ্ধার্ঘ অর্পণ করে তৃণমূল কংগ্রেস। তার মূল আয়োজনের দায়িত্ব থাকে সুব্রত বক্সী ও তাপস রায়ের উপরেই। কিন্তু এবারে সুব্রত বক্সীকে তাপস জানিয়ে দেন, 'তুমিই দেখে নাও ব্যাপারটা'। সুদীপের বিরুদ্ধে যখন একের পর এক তোপ দাগছেন তাপস রায়, তখন তাঁর মানভঞ্জন করতে তাঁর বাড়িতে কুণাল ঘোষক যেতে দেখা গিয়েছে। দীর্ঘক্ষণ দুজনের বৈঠক হয়েছে।
তবে দল ছেড়ে তিনিও বিজেপি-র পথেই?
সূত্রের খবর, আজই হয়তো শুভেন্দু অধিকারী ও সুকান্ত মজুমদারের সঙ্গে বৈঠক করবেন তাপস রায়। তারপরেই আজকালের মধ্যে ইস্তফার কথা ঘোষণা করবেন। যদিও দল ছাড়া বা বিজেপি-তে যোগদানের কথা নিজে মুখে এখনও খোলসা করেননি বরানগরের বিধায়ক। সংবাদমাধ্যমকে তিনি বলেছেন, 'বড় ঘটনা কত সময়েই ঘটে যায়। এই যে বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায় ইস্তফা দিতে চলেছেন, রাজনীতিতে নামছেন, এও কি ভাবতে পেরেছিল। আমার ব্যাপারে কে কী বলছে জানি না। কোনও কিছু লুকোনোর নেই। যদি কিছু করি, সেটা সকলকে জানিয়েই করব।'
আমার বাড়িতে ইডি ঢোকাচ্ছে
গত শনিবার সাংবাদিক সম্মেলন করে তাপস রায় নাম না-করে উত্তর কলকাতার সাংসদ সুদীপ বন্দ্যোপাধ্যায়কে একহাত নিয়েছেন। তাঁর কথায়, 'উত্তর কলকাতায় প্রার্থী হিসেবে আমার নাম উঠে আসছে। আমি যাতে টিকিট না পাই, তাই আমার বাড়িতে ইডি ঢোকাচ্ছে। রাজ্যসভা, লোকসভা, রাজ্য মন্ত্রিসভার অন্তত ৪০ জন আমাকে এই কথা বলেছে। ১২ তারিখ আমার বাড়িতে ইডি (ED) তল্লাশি চলছে। আর তখন উত্তর কলকাতায় স্বামীজির বাড়িতে তৃণমূল নেতানেত্রীরা উল্লাস করছিলেন। অনেক যুব নেতানেত্রীও ছিলেন। তবে হ্যাঁ, তাঁরা প্রতিবাদও জানিয়েছিলেন।'