তপশিলি জাতি-উপজাতিদের সংরক্ষণ কেড়ে মুসলিমদের দিয়ে দেবে কংগ্রেস। আদিবাসীবহুল ঝাড়গ্রামে গিয়ে এ কথাই বললেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। বলেন,'কংগ্রেস মুসলিমদের সংরক্ষণ দেবে। এরা ১০০ শতাংশ সাম্প্রদায়িক। তাও আবার এসসি, এসটি আর ওবিসি-দের সংরক্ষণ কেড়ে। আপনাদের সংরক্ষণ লুঠে নেবে। কংগ্রেসের এই মুসলিম লিগের চিন্তাভাবনার পর্দাফাঁস করে দিয়েছি'।
খারাপ আবহাওয়ার কারণে কপ্টার উড়তে পারেনি। তাই তমলুকে সভা করতে পারলেন না প্রধানমন্ত্রী। ঝাড়গ্রামের সভা থেকেই তমলুকের মানুষকেও সম্বোধন করলেন মোদী। আর সেখানে উঠে এল মুসলিম সংরক্ষণের প্রসঙ্গ। আদিবাসী, প্রান্তিক মানুষদের সংরক্ষণ কেড়ে মুসলিমদের দিতে চাইছে বলে অভিযোগ করেন নরেন্দ্র মোদী। তিনি বলেন,'রাহুল গান্ধীর একটি পুরনো ভিডিওয় তাঁকে বলতে শোনা যাচ্ছে, মুসলিমদের সংরক্ষণ দেবে কংগ্রেস। সেই সময়ের প্রধানমন্ত্রী মনমোহন সিং বারবার বলেছেন, দেশের সম্পদের উপর প্রথম অধিকার মুসলিমদের। এসসি, এসটি আর ওবিসিদের সংরক্ষণ কেড়ে নিতে চায় ওরা। কর্নাটকে ওবিসি-দের সংরক্ষণ দেওয়া হয়েছে মুসলিমদের'।
সেই সঙ্গে তৃণমূলকেও নিশানা করেন মোদী। বলেন,'ভোটব্যাঙ্কের চিন্তা করছে তৃণমূল। সীমান্তবর্তী এলাকায় বাঙালিদের জনসংখ্যা কমছে। বাড়ছে অনুপ্রবেশকারীদের সংখ্যা। অনুপ্রবেশকারীরা কাদের জমি দখল করে রয়েছে? দলিত, আদিবাসী ও প্রান্তিক মানুষদের জমি দখল করেছে এই অনুপ্রবেশকারীরা। এই দখলকৃত জমিকে আইনসম্মত করতে চায়। আপনাদের জমি, টাকা-পয়সা ভোটজিহাদ যারা করছে, তাদের দিয়ে দেবে। আপনাদের সম্পদ কেউ কেড়়ে নেবে, এটা কি হতে দিতে পারেন?'
আদিবাসী মহিলা দ্রৌপদী মুর্মুকে রাষ্ট্রপতি হতে বাধা দিয়েছিল তৃণমূল। সে কথা মনে করিয়ে দিয়েছেন মোদী। তাঁর কথায়,'আদিবাসীদের এগিয়ে যেতে আটকেছে কংগ্রেস আর তৃণমূল সরকার। দেশে প্রথমবার মহিলা আদিবাসীকে রাষ্ট্রপতি বানিয়েছে বিজেপি। সেই মহিলাকে আটকাতে একজোট হয়েছিল তৃণমূল, কংগ্রেস আর বামেরা। দেশের আদিবাসী মেয়েকে রাষ্ট্রপতি হতে বাধা দিয়েছিল। কিন্তু মোদীর সামনে সব চেষ্টাই ব্যর্থ হয়েছে। নিজেদের দলের নেতাকে তাঁর বিরুদ্ধে প্রতিদ্বন্দ্বী করেছিল তৃণমূল। আদিবাসী মহিলাকে রাষ্ট্রপতি হতে দেয়নি যারা, তাদের ভোট চাওয়ার অধিকার আছে? আপনাদের সঙ্গে বিশ্বাসঘাতকতা করেছে। নির্বাচনে ওদের জবাব দিন'।
জলপাইগুড়ির সেবক রোডে রামকৃষ্ণ মিশন আশ্রম ভবনে দুষ্কৃতী হামলার কথাও তুলে ধরেন মোদী। তাঁর বক্তব্য,'জলপাইগুড়িতে রামকৃষ্ণ মিশনের আশ্রমে গতকাল রাতে ভাঙচুর করা হয়েছে। আশ্রমের কর্মচারীদের হুমকি দেওয়া হয়েছে। এই বাংলাকে কোন দিকে নিয়ে যাচ্ছে তৃণমূল সরকার! রামকৃষ্ণ মিশনকে হুমকি, আশ্রমে ভাঙচুর হতে পারে কখনও দেশবাসী ভেবেছিল? ভোটব্যাঙ্ককে খুশি করতে সীমা ছাড়িয়েছে তৃণমূল সরকার। রামকৃষ্ণ মিশনের উপর হামলা সহ্য করবে না বাংলা। গোটা দেশ জানে, আমার জীবন গড়ার নেপথ্যে রয়েছে রামকৃষ্ণ মিশন। আমার সঙ্গে রামকৃষ্ণ মিশনের গভীর যোগ। প্রধানমন্ত্রী হওয়ার পরও রামকৃষ্ণ মিশনের সন্ন্যাসীদের সঙ্গে রাত্রিবাস করেছি'।