নির্বাচনের আগে ইভিএম নিয়ে প্রশ্ন তুলেছিল বিরোধীরা। ২০১৯ সালে ভরাডুবির পর অনেকে পুরনো ব্যবস্থা ব্যালট ফিরিয়ে আনার দাবি করেছিলেন। ২০২৪ সালে লোকসভা ভোটের ফলপ্রকাশের পর এখনও পর্যন্ত ইভিএম নিয়ে কোনও প্রশ্ন ওঠেনি। সেই প্রসঙ্গ় তুলে বিরোধীদের একহাত নিলেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। তিনি বলেন,'ইভিএম বেঁচে আছে না মরে গিয়েছে। কারণ ওরা আগে থেকে ভেবে নিয়েছিল, ভারতের গণতান্ত্রিক ব্যবস্থা নিয়ে প্রশ্ন তুলবে'।
এ দিন মোদী বলেন,'গত ৪ জুন যখন ফলপ্রকাশ হচ্ছিল, তখন আমি নিজের কাজে ব্যস্ত ছিলাম। পরে ফোন আসতে শুরু করে। ইভিএম কি জীবিত আছে নাকি মরে গিয়েছে! কারণ ওরা ভেবে রেখেছিল ইভিএম নিয়ে প্রশ্ন তুলবে যাতে ভারতের গণতন্ত্র এবং গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়ার প্রতি মানুষের বিশ্বাস উঠে যায়। ইভিএম তাঁদের চুপ করিয়ে দিয়েছে। এটাই ভারতের গণতন্ত্র ও ইভিএমের শক্তি'।
মোদী আরও বলেন,'ইন্ডি জোটের লোকেরা মনে করে এদেশের মানুষ গত শতাব্দীর। তাই ইভিএমের বিরোধিতা করে। এরা প্রযুক্তির বিরুদ্ধে। এরাই ইউপিআই এবং আধার বন্ধ করতে বারবার সুপ্রিম কোর্টে গিয়ে সমস্যা তৈরি করেছে'।
বিরোধীদের মোদীর কটাক্ষ,'আমি বিশ্বাস করি,পাঁচ বছর ইভিএমের কথা শোনা যাবে না। পাঁচ বছর পর ২০২৯ সালে আবার ইভিএম নিয়ে কথা বলবে'।
লোকসভা ভোটে একক সংখ্যাগরিষ্ঠতা পায়নি বিজেপি। শরিকদের নিয়ে সরকার গঠন করতে হচ্ছে তাদের। ভোটের ফলপ্রকাশের পর বিরোধীদের সরকার গঠনের সম্ভাবনাও তৈরি হয়েছিল। বিরোধীদের শিবিরের উৎসাহকে বিঁধেছেন মোদী। তাঁর কথায়,'দু'দিন এমন প্রচার করা হল যেন আমরা হেরে গিয়েছি। কর্মীদের মনোবল বাড়াতে এটা করতে হচ্ছেওদের। জোটের ইতিহাসে সংখ্যার হিসেবে যদি দেখেন এটা সবচেয়ে মজবুত সরকার। কিন্তু চেষ্টা করা হয়েছিল, এই বিজয়কে অগ্রাহ্য করে পরাজয়ে নিমজ্জিত করা। এই ধরনের চেষ্টা অপমৃত্যু ঘটে। তা হয়েছেও। দেশবাসী জানেন, আমি হারিনি। আমরা বিজয়কে মানতে পারি। এটাই আমাদের সংস্কার। জয় আমাদের উন্মত্ত করে না। পরাজিতদের উপহাস করার সংস্কারও নেই আমাদের। পরাজিতদের উপহাস করি না। হারলাম কোথায়? আগেও এনডিএ ছিল, আজও এনডিএ, কালও এনডিএ। কংগ্রেস ১০০ আসনও ছুঁতে পারেনি। ২০১৪, ২০১৯ আর ২০২৪ সাল যোগ করে কংগ্রেস যত আসন পেয়েছে, তার থেকে বেশি আমরা পেয়েছি। আমি স্পষ্ট দেখছি, ইন্ডির শরিকরা এবার আরও তাড়াতাড়ি ডুববে'।
শুক্রবার জাতীয় গণতান্ত্রিক জোটের (এনডিএ) সভায় তৃতীয়বারের জন্য সংসদীয় দলের নেতা নির্বাচিত হয়েছেন নরেন্দ্র মোদী। সংসদের সেন্ট্রাল হলে বিজেপি নেতৃত্বাধীন এনডিএ-র নবনির্বাচিত সাংসদের বৈঠকে এই প্রস্তাবে শিলমোহর পড়ে। বৈঠকের পর এনডিএ সরকার গঠনের দাবি জানাবে। সংসদীয় দলের নেতা নরেন্দ্র মোদী সভায় বক্তব্য রাখেন। ধন্যবাদ জানান শরিকদের। এনডিএ নেতা নির্বাচিত হওয়ার পর নরেন্দ্র মোদীর টানা তৃতীয়বারের মতো প্রধানমন্ত্রী হওয়ার পথ পরিষ্কার হয়ে গিয়েছে। তিনিই দেশের দ্বিতীয় নেতা হবেন যিনি টানা তৃতীয়বারের মতো প্রধানমন্ত্রী হিসেবে শপথ নেবেন। এর আগে এই রেকর্ডটি ছিল পণ্ডিত জওহরলাল নেহরুর নামে। প্রধানমন্ত্রী হিসেবে শপথ নেওয়ার সঙ্গে সঙ্গেই এই রেকর্ড ছুঁয়ে ফেলবেন মোদী।