মোট আসন ৫৪৩। জাদু সংখ্যা ২৭৩। অর্থাৎ কেন্দ্রে সরকার গঠনের জন্য দরকার ২৭৩টি আসন। ২০১৪ এবং ২০১৯ সালে একক সংখ্যাগরিষ্ঠতা পেয়েছিল বিজেপি। ফলে অঙ্ক কষার দরকারই পড়েনি। তবে এবার নানা সম্ভাবনার উপর দাঁড়িয়ে কেন্দ্রের সরকার গঠন। যেখানে কিং মেকার হিসেবে উঠে এসেছেন দুই ব্যক্তি। প্রথমজন চন্দ্রবাবু নাইডু, দ্বিতীয়জন হলেন নীতীশ কুমার। দু'জনেই আবার কংগ্রেস আর বিজেপির সঙ্গে ঘর করেছেন। ফলে এখনও দিল্লিতে কার সরকার, সেনিয়ে এখনও রয়েছে নানা অঙ্কের খেলা।
১০ বছর সরকার চালানোর পর একক সংখ্যাগরিষ্ঠতা পায়নি বিজেপি। তারা জিতেছে ২৪০টি আসনে। অর্থাৎ সরকার গঠনের জন্য প্রয়োজনীয় ২৭৩টি আসনের চেয়ে ৩৩টি কম। বড় ধাক্কা দিয়েছে দু'টি রাজ্য। উত্তরপ্রদেশে বিজেপি পেয়েছে মাত্র ৩৩টি আসন পেয়েছে। গতবারের চেয়ে ২৯টি কম। অন্যদিকে, বাংলায় বিজেপি পেয়েছে ১২টি আসন। গতবারের চেয়ে ৬টি কম। ২০১৯ সালের তুলনায় ৩৫ আসন কমিয়ে দিয়েছে দুই বড় রাজ্যই। সেই ঘাটতিই বিজেপির সামনে সরকার গঠনের পথকে কণ্টকাকীর্ণ করে তুলেছে। দুই বড় শরিকের উপর নির্ভর করতে হচ্ছে। অন্ধ্রপ্রদেশের তেলুগু দেশম পার্টি জিতেছে ১৬টি আসনে। অন্যদিকে, বিহারে ১২টি আসনে জয়লাভ করেছে জেডিইউ। এনডিএ জোটের মিলিত আসন সংখ্যা ২৯২। ফলে মোদীকে তৃতীয়বার টানা ক্ষমতায় আসতে নীতীশ এবং চন্দ্রবাবুকে সঙ্গে নিতেই হবে। আর কোনও উপায়ান্তর নেই।
এবার আসা যাক, ইন্ডি জোটের কত দরকার সরকার গঠনের জন্য? খাতায় কলমে ইন্ডিয়া মঞ্চ পেয়েছে ২৩৪টি আসন। এর মধ্যে কংগ্রেস জিতেছে ৯৯টি আসনে। তার পর ক্রমান্বয়ে সমাজবাদী পার্টি (৩৭ আসন), তৃণমূল কংগ্রেস (২৯ আসন) এবং ডিএমকে (২২ আসন)। সিপিএম ও আরজেডি ৪টি আসন করে আসন পেয়েছে। মোদ্দা কথা, ইন্ডি জোটের সরকার গঠনের জন্য দরকার ৩৯টি আসন।
ফলে ইন্ডি জোটকে সরকার গঠনের জন্য নীতীশ ও চন্দ্রবাবু নাইডুর সমর্থন নিশ্চিত করতেই হবে। দুজনের মিলিত আসন সংখ্যা ২৮। আরও ১১টি আসন দরকার হবে ইন্ডি জোটের। সেটা করতে এলজেপি (৫টি আসন), ওয়াইএসআর কংগ্রেস (৪টি) এবং শিন্ডের শিবসেনার (৭টি) সমর্থন দরকার।
ফলে সরকার গঠনের সম্ভাবনা দুই শিবিরের কাছেই রয়েছে। কিন্তু সেই সম্ভাবনা বেশি বিজেপির। কারণ, তারা ২৪০টি আসন জিতেছে। নীতীশ, চন্দ্রবাবু আর চিরাগ পাসোয়ানকে সঙ্গে নিলেই তাঁরা কাঙ্ক্ষিত লক্ষ্য পেয়ে যাবে। যে পথে এগিয়ে গিয়েছে বিজেপি। তাহলে বিরোধীদের কি একেবারেই সম্ভাবনা নেই? রাজনীতিতে তা বলা সম্ভব নয়। কারণ চন্দ্রবাবু নাইডু ও নীতীশ কুমার এর আগেও একাধিকবার শিবির বদল করেছেন। এই ক'দিন আগেও নীতীশ ছিলেন ইন্ডি জোটে। উপসংহারে বলা যায়, যে শিবির অঙ্ক মেলাতে সফল হবে, তারাই সরকার গঠন করবে।