লোকসভা ভোটের শেষ দফার আগে মুখ খুললেন মনমোহন সিং। পঞ্জাবের মানুষকে 'খোলা চিঠি' দিলেন প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী। তাতে বিজেপির বিরুদ্ধে সরব হয়েছেন। তিনি বলেন, 'বিগত দশ বছরে, বিজেপি সরকার পঞ্জাব, পঞ্জাবি এবং পঞ্জাবের সংস্কৃতির নিন্দা করতে আর কিছু বাকি রাখেনি।'
কৃষক আন্দোলনের প্রসঙ্গ তুলে তিনি বলেন, '৭৫০ জন কৃষক, যাঁদের বেশিরভাগই পঞ্জাবের, তাঁরা কয়েক মাস ধরে দিল্লি সীমান্তে আন্দোলনে শহিদ হয়েছেন। শুধু লাঠি ও রাবার বুলেটেই ক্ষান্ত হননি, সংসদে প্রধানমন্ত্রী আমাদের কৃষকদের 'আন্দোলনজীবী' এবং 'পরজীবী' (প্যারাসাইট) বলে লাঞ্ছিত করেছেন।'
কৃষকদের পক্ষে মনমোহন বলেন, 'ওঁদের একমাত্র দাবি ছিল, বিনা পরামর্শে তাঁদের ওপর আরোপিত তিনটি কৃষি আইন প্রত্যাহার করা।'
প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী ডঃ মনমোহন সিং-এর পঞ্জাবের জনগণের উদ্দেশে বলেন, 'মোদীজি ২০২২ সালের মধ্যে আমাদের কৃষকদের আয় দ্বিগুণ করার প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন। গত ১০ বছরে তাঁর নীতির ফলে আমাদের কৃষকদের উপার্জন হ্রাস পেয়েছে। দেশে কৃষকদের মাসে গড় আয় খুবই কম। দিনে ২৭ টাকা আয়। এদিকে দেশে কৃষক প্রতি ঋণ গড়ে ২৭,০০০ টাকা।'
কৃষি আইনের সমালোচনা করে মনমোহন সিং বলেন, 'জ্বালানি ও সার সহ ইনপুটের উচ্চ বাড়ছে, ৩৫টি কৃষি সরঞ্জামের উপর জিএসটি এবং কৃষি রফতানি ও আমদানিতে উদ্ভট সিদ্ধান্ত নেওয়ার ফলে আমাদের কৃষক পরিবারগুলির সঞ্চয় নষ্ট হয়ে গিয়েছে।'
মনমোহন সিং দেশের অর্থনৈতিক পরিস্থিতি নিয়েও উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন। তিনি বলেন, 'গত ১০ বছরে, দেশের অর্থনীতি অকল্পনীয় অস্থিরতার সম্মুখীন হয়েছে। ডিমনেটাইজেশন বিপর্যয়, ত্রুটিপূর্ণ জিএসটি এবং কোভিড মহামারী চলাকালীন চরম অব্যবস্থার দেশে একটি কঠিন পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়েছে।
কিন্তু এই সমস্যাগুলি নিয়ে ভোটের বাজারে সেভাবে কথা হচ্ছে না বলে আক্ষেপ প্রকাশ করেছেন প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী। তিনি বলেন, 'এই নির্বাচনী মরসুমে আমি রাজনৈতিক আলোচনাগুলি পুঙ্খানুপুঙ্খভাবে অনুসরণ করেছি। মোদিজি হিংসা ছড়ানো, বিভাজনকারী বক্তব্য রাখছেন। মোদিজিই প্রথম প্রধানমন্ত্রী, যিনি জনসাধারণের কাছে বক্তৃতার মর্যাদা কমিয়ে দিয়েছেন। অতীতে কোনও প্রধানমন্ত্রী সমাজের একটি নির্দিষ্ট অংশ বা বিরোধী দলকে লক্ষ্য করে এমন বিদ্বেষপূর্ণ, অসংসদীয় এবং রাফ শব্দ উচ্চারণ করেননি। তিনি আমাকে নিয়েও কিছু মিথ্যা কথা বলেছেন। আমি জীবনে কখনও এক সম্প্রদায়কে অন্য সম্প্রদায়ের থেকে আলাদা করিনি। এটাতে শুধুমাত্র বিজেপির প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রীর কপিরাইট আছে।'