দেবাংশু ভট্টাচার্যের বিরুদ্ধে জাতীয় মহিলা কমিশনে অভিযোগ দায়ের করলেন রেখা পাত্র। সন্দেশখালির আন্দোলনকারী তথা বসিরহাটের বিজেপি প্রার্থী রেখা রাজ্য সরকারের প্রকল্পের সুবিধা নিয়েছেন বলে দাবি করেছে তৃণমূল। যা ঘিরে শোরগোল পড়ে গিয়েছে রাজ্য রাজনীতিতে। রেখার স্বাস্থ্যসাথী কার্ডের ছবি ফেসবুকে পোস্ট করেছেন দেবাংশু। ওই কার্ড পোস্ট করে দেবাংশু দাবি করেছেন, সেটি রেখার। পরে তৃণমূলের তরফেও একই দাবি করা হয়। এই নিয়ে এবার দেবাংশুর বিরুদ্ধে গোপনীয়তার অধিকার ভঙ্গের অভিযোগ করলেন রেখা। রেখাকে নিয়ে তৃণমূলের এহেন আক্রমণের পাল্টা সরব হয়েছেন বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী। তিনি বলেছেন, 'স্বাস্থ্যসাথী কার্ডের টাকা কি তৃণমূলের পৈতৃক সম্পত্তি?'
দেবাংশুর বিরুদ্ধে কী অভিযোগ রেখার?
জাতীয় মহিলা কমিশনকে চিঠিতে রেখা লিখেছেন যে, ফেসবুকে তাঁর ব্যক্তিগত তথ্য যেমন, ফোন নম্বর, ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্ট, স্বাস্থ্যসাথী কার্ডের তথ্য পোস্ট করেছেন দেবাংশু। যার ফলে গোপনীয়তা লঙ্ঘিত হয়েছে। আইনজীবী মারফৎ কমিশনে এই চিঠি পাঠিয়েছেন রেখা।
কী বলেছেন শুভেন্দু?
বৃহস্পতিবার যাদবপুরে বিজেপির সভায় শুভেন্দু বলেন, 'কী সাহস! একজন দরিদ্র পরিবারের প্রতিবাদী মুখ,রেখা পাত্র। তাঁর স্বাস্থ্যসাথী কার্ডের ছবি সোশ্যাল মিডিয়ায় পোস্ট করেছে। স্বাস্থ্যসাথী কার্ডের টাকা কি তৃণমূলের পৈতৃক সম্পত্তি? আমরা কি বিজেপির প্রকল্প বলি? আমরা বলি ভারত সরকারের অর্থ, মোদীজি চালু করেছেন...বলছে দিদির খাবি, আর মোদীর গুণগান করবি!'
কী দাবি তৃণমূলের?
বৃহস্পতিবার রেখার স্বাস্থ্যসাথী কার্ডের তথ্য ফেসবুকে শেয়ার করেন তমলুক কেন্দ্রের তৃণমূল প্রার্থী দেবাংশু ভট্টাচার্য। পরে এক্স হ্যান্ডলে তৃণমূলের তরফে দাবি করা হয়েছে, বসিরহাটের বিজেপি প্রার্থী রেখা পাত্র রাজ্য সরকারের প্রকল্পের সুবিধা নিয়েছেন। স্বাস্থ্যসাথী কার্ড রয়েছে বলে দাবি করা হয়েছে। তৃণমূলের তরফে লেখা হয়েছে, 'হাতেনাতে ধরা পড়েছে। বসিরহাটের বিজেপি প্রার্থী ভণ্ডামি করেছেন। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের প্রকল্পের সুবিধা ভোগ করছেন, আর দিল্লির জমিদারদের সঙ্গে জুড়েছেন।' এরপরেই প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীকে কটাক্ষ করে লেখা হয়েছে, 'প্রধানমন্ত্রী পরের বার ফোন করে ওঁর (রেখা) স্বাস্থ্যসাথী কার্ডের খোঁজ নিতে ভুলবেন না। আমাদের নেত্রীর স্বাস্থ্যসাথী আয়ুষ্মান ভারত প্রকল্পকে পিছনে ফেলে দিয়েছে।'
তৃণমূলের পাল্টা সরব হয়েছেন বিজেপির আইটি সেলের প্রধান অমিত মালব্য। তিনি এক্স হ্যান্ডলে লিখেছেন, 'মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে ধিক্কার! সন্দেশখালির প্রতিবাদী মহিলাদের অবজ্ঞা করতে তৃণমূলের নীচ রাজনীতি বিজেপি প্রার্থী রেখা পাত্রের সংবেদনশীল ব্যক্তিগত তথ্য ফাঁস করেছে। যদি কোনও ঘটনা ঘটে তার জন্য দায়ী থাকবে তৃণমূল।' বাংলার স্বাস্থ্যের বেহাল দশা নিয়েও সরব হয়েছেন মালব্য।
গত মঙ্গলবার রেখাকে ফোন করেন প্রধানমন্ত্রী। ৯ মিনিটের সেই কথোপকথন প্রকাশ্যে এসেছে। এবারের ভোটে সন্দেশখালি অন্যতম বড় ইস্যু। সেই এলাকার প্রতিবাদী মুখ রেখাকে প্রার্থী করেছে বিজেপি। তার পরেই রেখার বিরুদ্ধে আক্রমণ শানাল বাংলার শাসকদল।