গত কয়েকদিন ধরেই কুণাল ঘোষকে নিয়ে নানা জল্পনা চলছে রাজনৈতিক মহলে। কুণাল নাকি তৃণমূল কংগ্রেস ছাড়তে চলেছেন। যদিও আজ সেই জল্পনাকে খারিজ করে দিলেন তৃণমূলের রাজ্য সাধারণ সম্পাদক। তিনি যে কোথাও যাচ্ছেন না, সেটা একেবারে স্পষ্ট করে দিলেন। সোমবার ফেসবুকে একটি পোস্ট করেন কুণাল। সেখানে তিনি লেখেন, 'দয়া করে আমাকে নিয়ে কেউ অকারণ জল্পনা ছড়াবেন না। আমি তৃণমূল কংগ্রেসের কর্মী ছিলাম, আছি, থাকব। শীর্ষ নেতৃত্ব আমাকে যা নির্দেশ দেওয়ার, দিয়ে রেখেছেন। আজও দিয়েছেন। আসন্ন লোকসভা নির্বাচনে উত্তর কলকাতা, পূর্ব মেদিনীপুর-সহ যেখানে দল যা দায়িত্ব দিচ্ছে, পালন করব। যাঁরা অন্যরকম চর্চা করছেন, তাঁরা ভুল করছেন। বাস্তব না বুঝে এঁরা পন্ডিতি ফলান। আমি কুণাল ঘোষ। ২ আর ২ মিলে ৪ ধরবেন না, আমি ২২ করার খেলায় বিশ্বাসী। সেই চেষ্টাই করি।'
গত ১ মার্চ এক্স হ্যান্ডেলের বায়ো থেকে রাজনৈতিক পরিচয় মুছে ফেলেন কুণাল ঘোষ। তাঁর বায়োতে লেখা রয়েছে সাংবাদিক ও সমাজকর্মী। তাই রাজনীতিতে জোর জল্পনা ছড়ায় হয়তো তৃণমূল কংগ্রেসের রাজ্য সাধারণ সম্পাদক ও মুখপাত্রের পদ ছাড়তে পারেন কুণাল। শুধু তাই নয়, এক্স হ্যান্ডেলে তিনি একটি পোস্টও করেন। যাতে নাম না করে কোনও একজনকে নিশানা করেছেন। কুণাল লিখেছেন,'নেতা অযোগ্য গ্রুপবাজ স্বার্থপর। সারাবছর ছ্যাঁচড়ামি করবে আর ভোটের মুখে দিদি, অভিষেক, তৃণমূল দলের প্রতি কর্মীদের আবেগের উপর ভর করে জিতে যাবে, ব্যক্তিগত স্বার্থসিদ্ধি করবে, সেটা বারবার হতে পারে না।' তাঁর নিশানাতে ছিলেন উত্তর কলকাতার তৃণমূলের প্রার্থী সুদীপ বন্দ্যোপাধ্যায়।
পরে সুদীপ বন্দ্যোপাধ্যায়ের বিরুদ্ধে ED ও CBI তদন্তের দাবি তোলেন কুণাল ঘোষ। প্রাক্তন তৃণমূল মুখপাত্রের দাবি, সুদীপ যখন হেফাজতে ছিলেন, তখন তাঁকে বড় অঙ্কের টাকা দেওয়া হয়েছে কিনা, এবং সেটি তিনি হাসপাতালে দিয়েছিলেন কিনা, তার তদন্ত করা উচিত। শুধু তাই নয়, কুণাল আরও বলেন, তদন্তের স্বার্থে সুদীপ বন্দ্যোপাধ্যায়কে এমন পরিস্থিতিতে গ্রেফতার করা উচিত।
পরে তৃণমূলের রাজ্য় সাধারণ সম্পাদক এবং মুখপাত্রের পদ থেকে ইস্তফা দেন তিনি। মুখপাত্র হিসাবে কুণালের ইস্তফা গ্রহণ করে নিয়েছেন দলীয় নেতৃত্ব। কিন্তু রাজ্য সম্পাদক পদে তাঁর ইস্তফা এখনও গৃহীত হয়নি। কুণালকে নিয়ে জল্পনার মাঝেই দল ও বিধায়ক পদ ছাড়েন তাপস রায়। এই ঘটনার পরে অবশ্য কুণাল ও সুদীপের মধ্যে যাবতীয় সমস্যা মিটে যায়। সুদীপের বাড়িতেও যান কুণাল।