শূন্যের গেরো কাটাতে পারল না বামেরা। ২০১৯ সালের পর ২০২১, এবার ২০২৪ সালেও একই হাল বাম শিবিরের। শুধু যে হতাশাজনক ফল, তাই নয়! সিপিএমের দু'জন প্রার্থী ছাড়া বাকি সব আসনে জামানত জব্দ হয়েছে প্রার্থীদের। রাজ্যে ২৩টি আসনে প্রার্থী দিয়েছিল সিপিএম। এর মধ্যে দু'টি আসনেই জামানত বাঁচাতে পেরেছে তারা।
তরুণ ও প্রবীণ ভারসাম্য রেখে এবার প্রার্থী দিয়েছিল বামেরা। যাদবপুরে সৃজন ভট্টাচার্য, শ্রীরামপুরে দীপ্সিতা ধরদের টিকিট দেওয়া হয়েছিল। তাঁরা জিততে পারেন বলে অনেকে আশা করেছিলেন। তবে দুজনেই জামানত খুঁইয়েছেন। এই তালিকায় আছেন ডায়মন্ড হারবারের প্রতীকুর রহমান এবং তমলুকের সায়ন বন্দ্যোপাধ্যায়। এই ভরাডুবির মাঝে মুখরক্ষা করেছেন দুই প্রবীণ- মুর্শিদাবাদে মহম্মদ সেলিম এবং দমদমে সুজন চক্রবর্তী। এছাড়া বামফ্রন্টে শরিকদের কারও জামানত বাঁচেনি। তিন প্রার্থী আরএসপি-র, দুই প্রার্থী সিপিআই-র এবং দুই প্রার্থী ফরওয়ার্ড ব্লকের। সকলেই জামানত খুঁইয়েছেন।
দেশের নির্বাচনে যে কেউ প্রার্থী হতে পারেন। তবে প্রার্থী হওয়ার জন্য নির্দিষ্ট পরিমাণ অর্থ জামানত হিসেবে রাখতে হয়। লোকসভা ভোটে সেই অর্থ ২৫ হাজার টাকা। নির্বাচন কমিশনের নিয়ম অনুযায়ী, মোট যত ভোট পড়েছে কোনও কেন্দ্রে তার ছ'ভাগের এক ভাগ ভোট পেলেই জামানত বাঁচবে। জামানত রক্ষা করতে না পারলে ২৫ হাজার টাকা ফেরত পাওয়া যায় না। তা নির্বাচন কমিশনের ঘরেই থাকে। সেই অঙ্কে ২৫ হাজার টাকা করে ২১ জন প্রার্থীর জামানত জব্দ হয়েছে সিপিএমের। সবমিলিয়ে ৫ লক্ষ ২৫ হাজার টাকা।
মুর্শিদাবাদের সিপিএম প্রার্থী মহম্মদ সেলিমকে নিয়ে আশা করেছিল বাম নেতৃত্ব। সেলিম জিততে পারেননি। তবে বাম প্রার্থীদের মধ্যে দ্বিতীয়স্থানে থেকেছেন তিনিই। সেলিমের প্রাপ্ত ভোট ৫ লক্ষ ১৮ হাজার ২২৭। ভোটের হার ৩৩.৬২ শতাংশ। দমদমে সুজন চক্রবর্তী পেয়েছেন ২৪০৭৮৪ ভোট। দমদমে সৌগত রায় এবং শীলভদ্র দত্তের জয় পরাজয়ের ব্যবধান ৭০,৬৬০। বিরোধী ভোট ভাগ হওয়ায় সুবিধা হয়েছে তৃণমূল প্রার্থীর।
রাজ্যে সিপিএমের ভোটের হার ৫.৬৭ শতাংশ। আর কংগ্রেসের ভোটের হার ৪.৬৮ শতাংশ। দুই দল সমঝোতা করে ভোটে লড়েছিল। ২০১৯ সালে সিপিএম পেয়েছিল ৬.২৮ শতাংশ ভোট। ফলে ৫ বছরে ভোট কমেছে সিপিএমের। কয়েকটি আসনে তারা চতুর্থস্থানেও চলে গিয়েছে। বসিরহাট ও মথুরাপুরে তৃতীয়স্থানে শেষ করেছে আইএসএফ।