Raigunj Loksabha Kendra 2024: একদা কংগ্রেসের গড় প্রিয়রঞ্জনের খাসতালুক রায়গঞ্জে লোকসভা নির্বাচন জমে উঠেছে। আগের মতো তথাকথিত হেভিওয়েট প্রার্থী এবার নেই। আগে এই আসন থেকে জেতা প্রাক্তন সাংসদ কংগ্রেসের দীপা দাশমুন্সিকে টিকিট দেয়নি দল। এখান থেকে জিতেছিলেন সিপিএম নেতা মহম্মদ সেলিম। তিনি টিকিট পেয়েছেন তবে অন্য আসন থেকে। স্থানীয় প্রভাবশালী তৃণমূল নেতা তথা ইসলামপুরের বিধায়ক ও পুর চেয়ারম্যান কানাইয়ালাল আগরওয়াল অথবা রাজ্যের প্রাক্তন মন্ত্রী আব্দুল করিম চৌধুরীকে টিকিট দেয়নি দল। বিজেপিও বর্তমান সাংসদ তথা প্রাক্তন কেন্দ্রীয় মন্ত্রী দেবশ্রী চৌধুরীকে আর টিকিট দেয়নি। ফলে মনে করা হচ্ছিল, লড়াই হবে ম্যাড়মেড়ে। কিন্তু এই আসন নজর কেড়ে নিয়েছে অন্য কারণে।
মজার বিষয় হল এই আসনে মূল লড়াই যে তিনটি দলের মধ্যে। সেই বিজেপি, তৃণমূল ও বাম সমর্থিত কংগ্রেস প্রার্থীদের তিনজনই অন্য দল থেকে বর্তমান দলে এসেছেন। ফলে বলা হচ্ছে এই আসনে দলবদলুদের লড়াই। যা মুখে মুখে ছড়িয়ে পড়েছে। আর তা নিয়ে আকর্ষণও বেড়েছে ভোটারদের মধ্যে। সব দলই এমন প্রার্থী দেওয়ায় কেউই কাউকে এই ইস্যুতে বিঁধতে পারছেন না।
এই আসন থেকে তৃণমূলের হয়ে বিজেপি থেকে আসা কৃষ্ণ কল্যাণীকে টিকিট দেওয়া হয়েছে। কংগ্রেসের টিকিটে লড়ছেন আলি ইমরান রমজ ভিক্টর। তিনি এসেছেন ফরওয়ার্ড ব্লক থেকে। এদিকে বিজেপি প্রার্থী হিসেবে কার্তিক পালের নাম ঘোষণা করা হয়। তিনি আবার কংগ্রেস থেকে বিজেপিতে যোগ দিয়েছেন। ফলে নীতির প্রশ্ন এখানে অতীত। এখানে লড়াই শুধু ভোটের কৌশলের আর নিজের প্রভাব বিস্তারের।
তৃণমূল প্রার্থী কৃষ্ণ কল্যাণী ২০২১ এর বিধানসভা নির্বাচনের আগে বিজেপিতে যোগ দেন। দেবশ্রী চৌধুরী, অর্জুন সিং সহ একাধিক বিজেপি নেতৃত্ব সেদিন সেখানে উপস্থিত ছিলেন। বিধায়ক হওয়ার কিছুদিন পরেই তিনি তৃণমূলে ঝাঁপিয়ে পড়েন।
বিজেপি প্রার্থী কার্তিক পাল ছাত্র পরিষদ করে কংগ্রেস নেতৃত্বের পছন্দের জায়গা নেন। পরে ২০১৬ সালে তৃণমূলে যোগ দেন তিনি। ২০২০তে বিজেপিতে যোগ দেন।
কংগ্রেস প্রার্থী আলি ইমরান রমজ ওরফে ভিক্টর ফরওয়ার্ড ব্লক থেকে তিনবারের বিধায়ক হয়েছিলেন। বামেরা ক্ষমতা হারানোর পর থেকে দলের সঙ্গে দূরত্ব তৈরি হয়। পরবর্তীতে ২০২২-এ কংগ্রেসে যোগ দেন।
প্রত্যেকেই অবশ্য দল বদল কিংবা অবস্থান বদলকে গুরুত্ব দিচ্ছেন না। মানুষের আস্থা অর্জন এবং নিজেদের ইমেজকেই গুরুত্ব দিচ্ছেন বলে জানিয়েছেন। অতীত নয়, বর্তমান ও ভবিষ্যতই আসল বলে দাবি তাঁদের।
দাড়িভিট কাণ্ড এখন অতীত। বিজেপির সংগঠন তেমন শক্তিশালী নয়। তবে রামমন্দির ইস্যু ও প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর ভাবমূর্তিই গেরুয়া শিবিরের সম্বল। অন্যদিকে তৃণমূলের হাতিয়ার রাজ্য সরকারের তরফে দেওয়া বিভিন্ন ভাতা ও ১০০ দিনের কাজের টাকা। তবে সমস্যা হচ্ছে দলীয় কোন্দল। কংগ্রেসের তরফে নিজেদের ভাবমুর্তি ফেরানোটাই মূল। পাশাপাশি পুরনো কংগ্রেসি ও বাম সমর্থকদের একজোট করে ভোটবাক্সে রূপান্তরিত করাটা বড় চ্যালেঞ্জ।