scorecardresearch
 

ফ্যাক্ট চেক: মার্কিন অধ্যাপকের ছবি ব্যবহার করে তাজমহল নিয়ে ভুয়ো দাবি সোশ্যাল মিডিয়ায়

গ্রাফিক্স কার্ডটি শেয়ার করে এর মাধ্যমে দাবি করা হচ্ছে, পোস্টে থাকা ব্যক্তি এক ইতিহাসবিদ যিনি নাকি সম্প্রতি এক চাঞ্চল্যকর দাবি করেছেন। পোস্টের দাবি অনুযায়ী, তিনি বলেছেন যে তাজ মহল বা ছোট তাজ মহল, একটিও মোঘল আমলে তৈরি নয়। বরং এগুলো চাণ্ডেল বংশের রাজার তৈরি। 

Advertisement

সম্প্রতি সোশ্যাল মিডিয়ায় একটি পোস্ট বেশ ভাইরাল হচ্ছে। সেখানে একটি গ্রাফিক্স কার্ডের মাধ্যমে এক ব্যক্তির ছবি ব্য়বহার করা হয়েছে, সঙ্গে আগ্রার থাকায় মিনি তাজ মহলের ছবিও রয়েছে। 

গ্রাফিক্স কার্ডটি শেয়ার করে এর মাধ্যমে দাবি করা হচ্ছে, পোস্টে থাকা ব্যক্তি এক ইতিহাসবিদ যিনি নাকি সম্প্রতি এক চাঞ্চল্যকর দাবি করেছেন। পোস্টের দাবি অনুযায়ী, তিনি বলেছেন যে তাজ মহল বা ছোট তাজ মহল, একটিও মোঘল আমলে তৈরি নয়। বরং এগুলো চাণ্ডেল বংশের রাজার তৈরি। 

পোস্টে লেখা হয়েছে, "এই রাজ্যে যখন মাসিক ১০০০-১২০০ টাকার বিনিময়ে মোগল সন্তনত সওদা চালাচ্ছে তখন বিশ্ব জুড়ে মোগলদের মুখোশ খুলে দেওয়ার হিড়িক লেগে গেছে। সে হিড়িকে সামিল হলেন ঐতিহাসিক রে ভিন পিজারা। জানালেন ৭ বছর ভারতে বসবাস ও গভীর প্রত্নতাত্ত্বিক গবেষণার কথা। মেট্রোপোলে এক সাক্ষাৎকারে তাজমহল প্রসঙ্গে নিজের বক্তব্য রাখতে গিয়ে তিনি জানান তাজ এবং মিনি তাজ দুটোই চান্ডেল রাজ পার্থিব দেবের সৃষ্টি। মোগলদের এতে কোনো অবদান নেই। এগুলির একটি ছিল শিব মন্দির এবং অন্যটি বিষ্ণু মন্দির।" (আর্কাইভ)

ইন্ডিয়া টুডে ফ্যাক্ট চেক অনুসন্ধান করে দেখেছে যে এই পোস্টের তথ্য সম্পূর্ণ মনগড়া। এর সঙ্গে বাস্তবের কোনও সম্পর্কই নেই।

কীভাবে জানা গেল সত্যি

রে ভিন পিজারা নামের কোনও ইতিহাসবিদ যদি ভারতে কয়েক বছর থেকে গবেষণা চালিয়ে এমন বিস্ফোরক উক্তি করতেন, তবে সেই সংক্রান্ত খবর প্রকাশ পেত। কিন্তু বাংলা ও ইংরাজি উভয় ভাষাতেই সার্চ করে আমরা এমন কোনও খবর, বা এমন কোনও সাক্ষাৎকার পাইনি যেখানে এই বিষয়টি উল্লেখ করা হয়। 

Advertisement

এরপর আমরা খুঁজে দেখার চেষ্টা করি গ্রাফিক্স কার্ডে থাকা ওই ব্যক্তি কে। ছবিটি গুগল লেন্সে সার্চ করে আমরা দেখতে পাই একটি জার্মান ওয়েবসাইটে ওই একই ব্যক্তির ছবি রয়েছে। জার্মানি ভাষায় লেখা বিবরণী অনুবাদ করে ধরা পড়ে, ওই ব্যক্তির নাম হলো ভোলকার বেরঘান। তিনি নিউ ইর্য়কের কলোম্বিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ে ইতিহাসের অধ্যাপক ছিলেন, তবে বর্তমানে অবসর নিয়েছেন। 

সেখানে আরও লেখা হয় যে, বেরঘান জন্মসূত্রে একজন জার্মান এবং তিনি জার্মান-আমেরিকান সাংস্কৃতিক সম্পর্ক নিয়ে নানা গবেষণা করেছেন। 

এই সূত্র ধরে আমরা কলোম্বিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের ওয়েবসাইটে গিয়ে তাঁর বিষয়ে সার্চ করি এবং সেখানেই তাঁর প্রকাশনা ও গবেষণা সম্পর্কে বিশদে জানা যায়। ইতিহাস নিয়ে গবেষণার জন্য তিনি ইংল্যান্ডের রয়্যাল ইংল্যান্ড সোসাইটি থেকে বিশেষ সম্মানে ভূষিত হন। 

তাঁর প্রকাশনাগুলি মূলত আমেরিকা ও ইউরোপের ইতিহাস-কেন্দ্রিক। বিশেষত জার্মানির ইতিহাসের নানা সময়ের উত্থান-পতন নিয়ে তাঁর একাধিক প্রকাশনা রয়েছে। 

অর্থাৎ বোঝাই যাচ্ছে যে অবসরপ্রাপ্ত এক অধ্যাপকের ছবি ব্যবহার করে কীভাবে সম্পূর্ণ মিথ্যে তথ্য সোশ্যাল মিডিয়ায় ছড়িয়ে মানুষকে বিভ্রান্ত করার চেষ্টা হচ্ছে। 

ফ্যাক্ট চেক

facebook users

দাবি

ছবিতে ঐতিহাসিক রে ভিন পিজারাকে দেখা যাচ্ছে যিনি ৭ বছর ভারতে বসবাস ও গভীর প্রত্নতাত্ত্বিক গবেষণা করে জানিয়েছেন, তাজমহল এবং মিনি তাজ দুটোই চান্ডেল রাজ পার্থিব দেবের সৃষ্টি। এগুলির একটি ছিল শিব মন্দির এবং অন্যটি বিষ্ণু মন্দির।

ফলাফল

রে ভিন পিজারা নামের কোনও বিজ্ঞানীর অস্তিত্ব ইন্টারনেটে অন্তত পাওয়া যায়নি। ছবিতে থাকা ব্যক্তি হলেন ভোলকার বেরঘান। তিনি নিউ ইর্য়কের কলোম্বিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ে ইতিহাসের অধ্যাপক ছিলেন, তবে বর্তমানে অবসর নিয়েছেন। 

ঝুট বোলে কাউয়া কাটে

যত বেশি কাক তত বেশি মিথ্যে

  • কাক: অর্ধসত্য
  • একাধিক কাক: বেশির ভাগ মিথ্যে
  • অনেক কাক: সম্পূর্ণ মিথ্যে
facebook users
আপনার কী মনে হচ্ছে কোনও ম্যাসেজ ভুয়ো ?
সত্যিটা জানতে আমাদের সংখ্যা 73 7000 7000 উপর পাঠান.
আপনি আমাদের factcheck@intoday.com এ ই-মেইল করুন
Advertisement