মণিপুরে মহিলাদের নগ্ন থেকে হাঁটানোর ঘটনার নিন্দা কর ট্যুইট করলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তিনি লিখেছেন, 'মণিপুরের ভয়ঙ্কর ভিডিওটি দেখে ক্ষুব্ধ, এই হৃদয়বিদারক ভিডিওতে উন্মত্ত জনতার দ্বারা দুই মহিলার সঙ্গে নির্মম আচরণ দেখানো হয়েছে।'
তিনি আরও লেখেন, 'প্রান্তিক নারীদের উপর যে হিংসা চালানো হয়েছে তা প্রত্যক্ষ করার বেদনা ও যন্ত্রণা কোনও শব্দে প্রকাশ করা যায় না। বর্বরতার এই কাজ কল্পনাতীত ও মানবতার বাইরে। দুর্বৃত্তদের এ ধরনের অমানবিক কাজের নিন্দা ও নির্যাতিতাদের বিচারের জন্য আমাদের ঐক্যবদ্ধভাবে দাঁড়াতে হবে।'
বুধবার নেটমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ে মণিপুরের একটি ভিডিও। যা গত ৪ মে তোলা বলে দাবি করেছে মণিপুর পুলিশ। ওই ভিডিওয় দেখা গিয়েছে, মণিপুরের থৌবল জেলায় নংপোক সেকমাই থানার অদূরে দুই মহিলাকে বিবস্ত্র করে ঘোরানো হচ্ছে। নির্যাতিতাদের দাবি, খুনের ভয় দেখিয়ে দুষ্কৃতীরা সে দিন কঙ্গপকপি জেলার বি ফাইনম গ্রামের প্রধানের সাহায্যে তাঁদের প্রকাশ্যে পোশাক খুলতে বাধ্য করেছিল। গত ১৮ মে ওই জেলারই সাইকুল থানায় অভিযোগ করেছিলেন নির্যাতিতা। নির্যাতিতাদের মধ্যে একজনকে গণধর্ষণ করা হয়েছে বলেও অভিযোগ। বোনকে বাঁচাতে গিয়ে খুন হয়েছেন ভাই।
ভিডিও সামনে আসত মণিপুর নিয়ে প্রথমবার মুখ খোলেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীও। তিনি বলেন,'মণিপুরের যে কোনও ঘটনা সভ্য সমাজের জন্য লজ্জার। ১৪০ কোটি মানুষের মাথা হেঁট হয়ে গিয়েছে।' ঘটনায় তিনি ব্যথিত বলেও জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী। তিনি আশ্বাস দিয়েছেন, 'আমি দেশকে বলতে চাই, দোষীদের রেয়ার করা হবে না। আইন আইনের পথেই চলবে। মণিপুরের বোনেদের সঙ্গে যা ঘটেছে তা ক্ষমা করা যায় না।'
বৃহস্পতিবার ওই ঘটনার নিন্দা করেছে সুপ্রিম কোর্টA। শীর্ষ আদালতের প্রধান বিচারপতি ডিওয়াই চন্দ্রচূড়ের নির্দেশ, অবিলম্বে কেন্দ্র ও রাজ্য সরকারকে পদক্ষেপ করতে হবে। কী পদক্ষেপ করা হয়েছে তা জানাতে হবে আদালতকে। সময়ও বেঁধে দিয়েছে সুপ্রিম কোর্ট। প্রধান বিচারপতির বেঞ্চ জানিয়েছে, 'সরকারকে আমরা অল্প সময় দিচ্ছি। কোনও ব্যবস্থা না নেওয়া হলে আমরা পদক্ষেপ করতে বাধ্য হব।' এ দিন প্রধান বিচারপতি ডিওয়াই চন্দ্রচূড় বলেন,'কোনও মহিলাকে বস্তু হিসেবে ব্যবহার করা গ্রহণযোগ্য নয়। আদালত চায়, দোষীদের বিরুদ্ধে কড়া ব্যবস্থা নিক সরকার। মিডিয়ায় যা দেখানো হয়েছে তাতে সাংবিধানিক অধিকার লঙ্ঘিত হয়েছে।' শীর্ষ আদালতের মতে, এটা অত্যন্ত বিরক্তিকর ঘটনা। ভিডিওয় যা দেখা যাচ্ছে, তা সার্বিকভাবে সাংবিধানিক ব্যবস্থার ব্যর্থতা। সেই সঙ্গে সুপ্রিম কোর্টের পর্যবেক্ষণ, সরকার ব্যবস্থা না নিলে আদালতকে হস্তক্ষেপ করতে হবে। মামলার পরবর্তী শুনানি ২৮ জুলাই।