অমিত মিত্রকে মন্ত্রী করার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। সোমবার অমিতবাবু শপথ নিয়েছেন। তাঁকে দেওয়া হয়েছে অর্থ দপ্তরের দায়িত্ব। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এমন সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। তবে অমিতবাবু একুশের বিধানসভা ভোটে লড়েননি।
ফলে তাঁকে মন্ত্রী থাকতে গেলে এখন ভরসা করতে হবে উপনির্বাচনের ওপর। তাঁর কেন্দ্র ছিল খড়দা। সেখান থেকে তৃণমূল প্রার্থী হয়েছিলেন কাজল সিনহাকে। তিনি জিতেছিলেন। তবে ভোটের ফল প্রকাশের আগে তাঁর মৃত্যু হয়। ফলে নিজের জয় দেখে যেতে পারেননি। মনে করা হচ্ছে, অমিত মিত্র ওই কেন্দ্র থেকে উপনির্বাচনে দাঁড়াতে পারেন।
অর্থমন্ত্রী পদটিকে অত্যন্ত গুরুত্ব বলে মনে করা হয়। অনেকে এমনও মনে করেন মুখ্যমন্ত্রীর পর দ্বিতীয় গুরুত্বপূর্ণ পদ হল অর্থমন্ত্রীর। কোনও রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী এবং অর্থমন্ত্রী- দু'জনেই উপনির্বাচনের জিতে এসে নিজেদের পদ ধরে রাখছেন, এমন নজির দেখা যায়নি বলেই মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা।
মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় নন্দীগ্রাম কেন্দ্র থেকে দাঁড়িয়েছিলেন। তবে তিনি জিততে পারেননি। হেরে গিয়েছিলেন বিজেপির শুভেন্দু অধিকারীর কাছে। ফলে তাঁকে মুখ্যমন্ত্রী থাকতে হলে ছ'মাসের মধ্যে উপনির্বাচনের জিতে আসতে হবে। একই কথা বলা চলে অর্থমন্ত্রী অমিত মিত্রর ক্ষেত্রেও।
একুশের বিধানসভা ভোটের ফলাফল প্রকাশিত হওয়ার পর এমনই সম্ভাবনা দেখা দিচ্ছে। কিন্তু নিয়ম অনুসারে তিনি ৬ মাসের জন্য মুখ্যমন্ত্রী পদে থাকতে পারবেন। তবে ওই সময় কালে তাঁকে ভোটে জিতে আসতে হবে। ইতিমধ্যে তিনি মুখ্যমন্ত্রী পদে শপথও নিয়ে নিয়েছেন। নিজের কাজও শুরু করে দিয়েছেন।
এবারের ভোটে সবথেকে বেশি আলোচনা হয়েছে নন্দীগ্রাম বিধানসভা কেন্দ্র নিয়ে। কারণ সেখান থেকে তৃণমূলের প্রার্থী ছিলেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। অন্যদিকে, তাঁর বিরুদ্ধে লড়েছিলেন বিজেপির শুভেন্দু অধিকারী।
যিনি এক সময়ে তৃণমূলে ছিলেন এবং মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের অন্যতম 'কাছের মানুষ' বলে পরিচিত ছিলেন। শুভেন্দু মমতাকে হারিয়ে দিয়েছেন। এর ফলে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে মুখ্যমন্ত্রী পদে থাকতে হলে উপনির্বাচনের জিতে আসতে হবে। তিনি কোন কেন্দ্র থেকে ভোটে দাঁড়ান, তা নিয়ে এবার নতুন করে চর্চা শুরু হয়েছে।
লোকসভা বা রাজ্যসভার সদস্য, এমন বেশ কয়েকজন এবারের ভোটে দাঁড়িয়েছিলেন। তাঁদের অনেকে জিতেছেন। ফলে সেখানে উপনির্বাচন হবে, এমনই বলছেন বিশেষজ্ঞরা। দেখে নেওয়া যাক, কোথায় কোথায় এমন হতে পারে।
মানস ভুঁইয়া রাজ্যসভার সাংসদ। তিনি ভোটে দাঁড়িয়েছিলেন এবং জিতেছেন সবং কেন্দ্র থেকে। দীর্ঘদিন সেখানকার বিধায়ক ছিলেন। এবারের ভোটে তাঁর ভাল ফল হয়েছে। অর্থাৎ তিনি ভোটে জিতেছেন। ফলে তাঁকে কোনও একটা পদ ছাড়তে হবে। হয় রাজ্যসভা, নয় বিধানসভা।
বিজেপি তাদের ৪ জন সাংসদকে ভোটের ময়দানে নামিয়েছিল। তাঁদের মধ্যে দু'জন হেরেছেন এবং দু'জন জিতে গিয়েছেন। জয়ী প্রার্থীরা হলেন কোচবিহারের সংসদ নিশীথ প্রামাণিক এবং রানাঘাটের সাংসদ জগন্নাথ সরকার।
নিশীথ বিধানসভা ভোটে দাঁড়িয়েছিলেন কোচবিহারের দিনহাটা থেকে। তিনি হারিয়ে দিয়েছেন তৃণমূলের উদয়ন গুহকে। উদয়ন দিনহাটার বিদায়ী বিধায়ক ছিলেন। তবে তিনি হার মেনেছেন নিশীথ প্রামাণিকের কাছে। যিনি আগে ছিলেন তৃণমূলেই।
নদীয়ার রানাঘাটের সাংসদ জগন্নাথ সরকার ভোট দাঁড়িয়েছিলেন। শান্তিপুর কেন্দ্র থেকে তিনি ভোটে লড়েছেন। এবং জিতেও গেছেন। তিনি হারিয়েছেন সেখানকার বিদায়ী বিধায়ক অজয় দে-কে। তার তাই সম্ভাবনা তৈরি হয়েছে উপনির্বাচনের।