গত কয়েকদিন ধরে নুসরত জাহানের সন্তানের বাবা কে তা তদন্ত করতে ব্যস্ত ছিলেন শহরবাসী। এরপর মুকুল রায় কেন বিজেপি ছেড়ে তৃণমূলে গেলেন তাই নিয়ে চলল জোর চর্চা। এবার অবশ্য মানুষের দৃষ্টি ঘুরে গিয়েছে শোভন-বৈশাখী আর রত্না পর্বে। বুধবারই নিজের সম্পত্তি বান্ধবী বৈশাখী বন্দ্যোপাধ্যায়কে দান করার কথা জানিয়েছিলেন কলকাতার প্রাক্তন মেয়র শোভন চট্টোপাধ্যায়। রাজ্যের প্রাক্তন দমকলমন্ত্রী দাবি করেছিলেন, স্থাবর ও অস্থাবর সম্পত্তি উইল করে, পাওয়ার অ্যাটর্নি তিনি দিয়েছেন বৈশাখী বন্দ্যোপাধ্যায়কে। দুঃসময়ে পাশে দাঁড়িয়েছেন বান্ধবী বৈশাখী বন্দ্যোপাধ্যায়, সেই কারণেই এই সিদ্ধান্ত। তারপর ২৪ ঘণ্টাও কাটেনি এবার শোভন চট্টোপাধ্যায়ের স্ত্রী রত্না চট্টোপাধ্যায়ের বিরুদ্দে লালবাজারে অভিযোগ জানালেন বান্ধবী বৈশাখী। দায়ের করলেন লিখিত অভিযোগও।
লালবাজারে গিয়ে পুলিশ কমিশনারের কাছে লিখিত অভিযোগে অধ্যাপিকা বৈশাখী বন্দ্যোপাধ্যায় দাবি করেছেন রত্না চট্টোপাধ্যায় তাঁকে পেটানোর হুমকি দিচ্ছেন। তাই তিনি নিরাপত্তা চেয়ে পুলিশের দ্বারস্থ হয়েছেন। চিঠিতে বৈশাখী লেখেন, ‘রত্না চট্টোপাধ্যায় আমাকে হুমকি দিচ্ছেন। প্রকাশ্যে সংবাদমাধ্যমে আমার বিরুদ্ধে বলছেন। বলেছেন, ল্যাম্পপোস্টে বেঁধে আমাকে ও শোভনবাবুকে পেটানো হবে।’ রত্নাকে প্রভাবশালী উল্লেখ করে বৈশাখী আরও লিখেছেন, ‘উনি এখন শুধু তৃণমূলের একজন নেত্রী নন, উনি প্রভাবশালী বিধায়ক। আগেও অভিযোগ করেছিলাম, কোনও ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি।’ বৈশাখীর কথায়," উনি এখন একজন বিধায়ক। ওঁর প্রভাব-প্রতিপত্তি আছে। আমি এতে খুবই আতঙ্কিত, ভয়ে রয়েছি। সেই কারণেই পুলিশ কমিশনারের কাছে অভিযোগ জানিয়েছি।’’ পুলিশের কাছে নিরাপত্তার আর্জিও জানান শোভনের বন্ধবী বৈশাখীদেবী।
বুধবার জামাইষষ্ঠীর দিনই ফেসবুকে নিজের নামের মধ্যিখানে শোভনের নাম জুড়ে হইচই ফেলে দিয়েছিলেন বৈশাখী বন্দ্যোপাধ্যায় । এ নিয়ে রাজ্য রাজনীতিতে জোর চর্চা শুরু হয়। ফের একবার সামনে এসে পড়ে শোভন-বৈশাখী-রত্না এই ত্রয়ীর পারস্পরিক সম্পর্ক। প্রসঙ্গেত শোভন চট্টোপাধ্যায়ের সঙ্গে তাঁর স্ত্রীর রত্না চট্টোপাধ্যায়ের বিবাহবিচ্ছেদের মামলা চলছে। এই প্রেক্ষিতে সন্তানদের বঞ্চিত করে শোভন যেভাবে নিজের সম্পত্তি বৈশাখীকে লিখে দিলেন তা তাৎপর্যপূর্ণ। প্রসঙ্গত নারদকাণ্ডে শোভন চট্টোপাধ্যায় সিবিআই-এর হাতে গ্রেফতারের পর ছুটে গিয়েছিলেন রত্না চট্টোপাধ্যায়। এসএসকেএম-এ ভর্তি থাকা অসুস্থ শোভনকেও দেখতে হাজির হয়েছিলেন রত্না ও তাঁর ছেলে। কিন্তু স্ত্রী ও সন্তানরা যেন হাসপাতালে না আসেন তার জন্য এসএসকেএম কর্তৃপক্ষকে আইনি চিঠি ধরিয়েছিলেন শোভন। এরপরেই ফেসবুক ভিডিয়োতে শোভন চট্টোপাধ্যায়কে বলতে শোনা গিয়েছে, 'বৈশাখীকে আমি স্থাবর, অস্থাবর সম্পত্তি দান করলাম। পাওয়ার অফ অ্যাটর্নিও বৈশাখীকে দিলাম। ' বান্ধবী হিসেবে পাশে থাকার জন্যই তিনি বৈশাখীকে নিয়ে ওই সিদ্ধান্ত নিয়েছেন বলে জানান তিনি।