বিজেপির নবান্ন অভিযানে পুলিশি নির্যাতনের অভিযোগে তদন্ত রিপোর্ট জেপি নাড্ডার কাছে জমা দিল দলের পাঁচ সদস্যের দল। ওই রিপোর্টে সিবিআই তদন্তের দাবি করা হয়েছে। নবান্ন অভিযানে পুলিশের বিরুদ্ধে নির্যাতনের অভিযোগ করেছে রাজ্যের বিরোধী দল। তা খতিয়ে দেখতে পাঁচ সদস্যের একটি দল গঠন করে কেন্দ্রীয় নেতৃত্ব। প্রত্যাশিতভাবে তৃণমূল জানিয়েছে, ওই দিন বিজেপি নেতারাই পুলিশকে আক্রমণ করেছে। গাড়ি জ্বালিয়েছে। তা সত্ত্বেও সংযম দেখিয়েছে পুলিশ।
কলকাতায় এসে আহত বিজেপি নেতানেত্রীদের সঙ্গে দেখা করে ওই পাঁচ সদস্যের দল। দিল্লিতে গিয়ে শনিবার দলের সর্বভারতীয় সভাপতি জেপি নাড্ডার কাছে রিপোর্ট জমা দিয়েছে তারা। ওই রিপোর্টে বলা হয়েছে, ওই দিন তৃণমূলের নির্দেশেই কাজ করেছে রাজ্য পুলিশ। তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিযেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের 'কপালে গুলি মারা'র মন্তব্যের কথাও রয়েছে ওই রিপোর্টে।
গত ১৩ সেপ্টেম্বর বিজেপি নবান্ন অভিযানের জেরে কলকাতা ও হাওড়ার একাংশ রণক্ষেত্র হয়ে ওঠে। পুলিশের বিরুদ্ধে অতিসক্রিয়তার অভিযোগ করেন বিজেপি নেতারা। এরপর দেখতে পাঁচ সদস্যের একটি তথ্যানুসন্ধান দল রাজ্যে পাঠান জেপি নাড্ডা। ওই দলে ছিলেন বিজেপি সাংসদ ব্রিজ লাল, রাজ্যবর্ধন সিং রাঠৌর, অপরাজিতা সারঙ্গি, সমীর ওঁরাও এবং সুনীল জাখর। সেই দলটিই শনিবার নাড্ডাকে রিপোর্ট পাঠিয়েছে। তাতে একাধিক অভিযোগ করা হয়েছে। বলা হয়েছে, এ রাজ্যে আইনশৃঙ্খলা নেই। বিজেপির শান্তিপূর্ণ আন্দোলনে বাধা দিতে পুলিশকে কাজে লাগিয়েছে শাসলক দল। পাথর ছোড়া, ওয়াটার ক্যানন, রবার বুলেট, টিয়ার গ্যাস, লাঠির ব্যবহার করে , সাংবিধানিক অধিকার ও মানবাধিকার লঙ্ঘন করা হয়েছে। প্রায় ৭৫০ জন মানুষ ও বিজেপি কর্মী আহত। অনেকে আইসিইউ-তে। ৫৫০ জনকে গ্রেফতার করা হয় ওই দিন। ৬০ জন এখনও হাজতে। সিদ্ধনাথ গুপ্ত, দময়ন্তী সেন, প্রবীণ কুমার ত্রিপাঠীর মতো পুলিশ আধিকারিকেরা কর্তব্যে গাফিলতি করেছেন বলে অভিযোগ করা হয়েছে ওই রিপোর্টে। ওই দিন বেআইনি কাজ করেছিল রাজ্য পুলিশ। তাতে মদত ছিল তৃণমূল।
১৪ সেপ্টেম্বর আহত পুলিশ কর্তাকে দেখতে এসএসকেএমে গিয়েছিলেন তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। বেরিয়ে তিনি বলেছিলেন,'তিনি থাকলে মাথায় গুলি করতেন।'ওই মন্তব্যের কথা রিপোর্টে উল্লেখ করে বলা হয়েছে, এতে স্পষ্ট শাসক দলের মদতেই সেদিন বিজেপি কর্মীদের উপর অত্যাচার হয়েছে।
বিজেপির কেন্দ্রীয় দলের রিপোর্টের অভিযোগ উড়িয়ে দিয়েছে তৃণমূল। দলের রাজ্যসভার সাংসদ শান্তনু সেনের কথায়,'সেদিন কারা গুন্ডামি করেছিল, সেটা সারা দেশ দেখেছে। পুলিশের উপরে হামলা হয়েছিল। তা সত্ত্বেও সহনশীল ছিল পুলিশ। সেনিয়েই মন্তব্য করেছিলেন অভিষেক। তা-ও ঘটনার পরের দিন।'
আরও পড়ুন- ভেস্তে যেতে পারে পুজোর আগে শনি-রবির বাজার, কোথায় কোথায় বৃষ্টি?