নারদা মামলায় রাজ্যের মন্ত্রী ফিরহাদ হাকিমকে আটক করল সিবিআই। কলকাতার চেতলা থেকে তাঁকে আটক করেছে সিবিআই। ফিরহাদের দাবি, নারদা কেসে অ্যারেস্ট করছে। আমরা কোর্টে দেখে নেব। এঁরা সিবিআই। সিবিআই নিয়ে যাচ্ছে নারদা কেসে। তবে সিবিআই সূত্রে খবর, তাঁকে আটক করা হয়েছে। গ্রেফতার করা হয়নি।
সোমবার তাঁর বাড়িতে যায় সিবিআই। সেখানে ছিল কেন্দ্রীয় বাহিনী। চেতলার বাড়ি থেকে তাঁকে আটক করা হয়। এরপর ক্ষোভে ফেটে পড়েন তৃণমূল কর্মী, সমর্থকেরা। তাঁরা এলাকায় বিক্ষোভ দেখান।
সিবিআইকে বাধা দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে তৃণমূল কংগ্রেসের কর্মীদের বিরুদ্ধে। আটকে পড়ে গাড়ি। তবে ফিরহাদ তাঁদের আটকান।
এদিকে, নারদকান্ডে অভিযুক্ত তৎকালীন চার বিধায়কের বিরুদ্ধে চার্জশিট পেশ করতে পারবে সিবিআই। এই মর্মে অনুমতি দিয়েছেন রাজ্যপাল জগদীপ ধনখড়। এর মধ্যে তিনজন তৃণমূলের এবং একজন বিজেপির। অনেকের মতে, এই অনুমতি দিয়ে রাজ্যপাল বুঝিয়ে দিলে, তিনি রাজ্যের সঙ্গে সঙ্ঘাতের পথেই চলবেন।
কোন চার বিধায়কের বিরুদ্ধে চার্জশিট পেশ করার অনুমতি দেওয়া হয়েছে
যে ৪ বিধায়কের বিরুদ্ধে অনুমতি দেওয়া হয়েছে, তাঁরা হলেন সুব্রত মুখোপাধ্যায়, ফিরহাদ হাকিম, মদন মিত্র এবং শোভন চট্টোপাধ্যায়।
এঁদের মধ্যে প্রথম তিনজন একুশের ভোটে দাঁড়িয়েছিলেন। এবং জিতেছেন। ঘটনা হল, তাঁরা মন্ত্রীও হয়ে গিয়েছেন। সোমবার তাঁরা মন্ত্রী পদে শপথ নিয়েছেন। তবে শোভন চট্টোপাধ্যায় তৃণমূল ছেড়ে বিজেপিতে যোগ দিয়েছিলেন। এবার তিনি ভোটে দাঁড়াননি। তবে এখন তিনি বিজেপির থেকে দূরে রয়েছেন যেন।
আইনজীবীদের মতে, যেহেতু এখনও বিধানসভার গঠন করা হয়নি। তাই এই ক্ষেত্রে রাজ্যপাল অনুমতি দিতে পারেন। নারদ কাণ্ড ঘটেছিল ২০১৬ সালে।
২০১৬ সালে বিধানসভা ভোটের আগে নারদকাণ্ডের কথা প্রকাশ্যে আসে। সেখানে বেশ কয়েকজন তৃণমূল নেতার নাম জড়িয়ে যায়। অভিযোগ, তারা তাঁরা টাকা নিয়েছিলেন। এবং সেই সংক্রান্ত ভিডিয়ো প্রকাশিত হয়। এঁদের মধ্যে কয়েকজন মন্ত্রী এবং সাংসদও ছিলেন।
এই স্টিং অপারেশন করেছিলেন সাংবাদিক ম্যাথু স্য়ামুয়েল। তাঁর দাবি তৃণমূলের তৎকালীন সংসদ এই অপারেশনের জন্য অর্থ দিয়েছিলেন। এদিকে, নারদকান্ডে যাদের নাম জড়িয়েছিল তাঁরা হলেন মুকুল রায়, শুভেন্দু অধিকারী, সৌগত রায়, কাকলি ঘোষ দস্তিদার, প্রসূন বন্দ্যোপাধ্যায়, অপরূপা পোদ্দার।
এছাড়া অভিযুক্তদের মধ্যে নাম রয়েছে সুব্রত মুখোপাধ্যায়, ফিরহাদ হাকিম, মদন মিত্র, শোভন চট্টোপাধ্যায়, সুলতান আহমেদের ভাই ইকবাল আহমেদ, শঙ্কুদেব পান্ডা, পুলিশকর্তা এস এম এইচ মির্জা।
এদিকে, তৃতীয় বার মুখ্যমন্ত্রী পদে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের শপথ নেওয়ার অনুষ্ঠানেই তাল কাটল। রাজভবনে রাজ্যপাল জগদীপ ধনখড় রাজ্যের আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেন।
সঙ্গে সঙ্গে কার্যত পাল্টা জবাব দেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। এমন ঘটনা সাধারণত দেখা যায় না বলে মত রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের। এর পর তৃণমূলও একই কথা বলে। তাদের বক্তব্য, নতুন সরকার গঠন হতে না হতেই রাজ্যপাল এ হেন মন্তব্য করছেন।