scorecardresearch
 

রাজীবের দলত্যাগ BJP-র কেন্দ্রীয় নেতৃত্বের 'সেমসাইড গোল'?

জল্পনা বিগত কয়েকমাস ধরেই ছিল। শুধু কবে তিনি ছাড়বেন, সেই দিন ঘিরে ছিল ধোঁয়াশা! রবিবারই যাবতীয় জল্পনা জল ঢেলে তৃণমূলে ফিরে গেলেন রাজীব বন্দ্যোপাধ্যায়। বঙ্গের বিধানসভা নির্বাচনের আগে দিল্লিতে চাটার্ড বিমানে গিয়ে তৃণমূল ছেড়ে বিজেপিতে গিয়েছেন রাজ্যের প্রাক্তন মন্ত্রী রাজীব বন্দ্যোপাধ্য়ায়।

Advertisement
রাজীব বন্দ্যোপাধ্যায়। ফাইল ছবি রাজীব বন্দ্যোপাধ্যায়। ফাইল ছবি
হাইলাইটস
  • রাজীবের দলত্যাগ BJP-র কেন্দ্রীয় নেতৃত্বের 'সেমসাইড গোল'?
  • বিপত্তি কি বাড়ল গেরুয়া শিবিরের
  • কী বলছে বাংলার রাজনৈতিক মহল

জল্পনা বিগত কয়েকমাস ধরেই ছিল। শুধু কবে তিনি ছাড়বেন, সেই দিন ঘিরে ছিল ধোঁয়াশা! রবিবারই যাবতীয় জল্পনা জল ঢেলে তৃণমূলে ফিরে গেলেন রাজীব বন্দ্যোপাধ্যায়। বঙ্গের বিধানসভা নির্বাচনের আগে দিল্লিতে চাটার্ড বিমানে গিয়ে তৃণমূল ছেড়ে বিজেপিতে গিয়েছেন রাজ্যের প্রাক্তন মন্ত্রী রাজীব বন্দ্যোপাধ্য়ায়। গেরুয়া শিবিরের হয়ে প্রচারও চালিয়েছিলেন তিনি। কিন্তু ডোমজুড়ে প্রায় ৪৪ হাজার ভোটের ব্যবধানে পরাজিত হন তিনি। তারপর থেকে বিজেপি কোনও কর্মসূচিতে সক্রিয় ছিলেন না রাজীব।

বেসুরো ছিলেন রাজীব

উল্টে তখন বিজেপির বিরুদ্ধেই মুখ খোলেন রাজীব। বেশ কয়েকবার সমলোচনা করেন তিনি। নিশানা করেন বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারীকে। এমনকী তৃণমূল নেতা কুণাল ঘোষের বাড়িতে চা চক্রে গিয়েছিলেন তিনি। পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের মাতৃবিয়োগের পরে শিল্পমন্ত্রীর বাড়িতে যাওয়া যান রাজীব বন্দ্য়োপাধ্য়ায়। ফলে তাঁর রাজনৈতিক অবস্থান ঘিরে প্রশ্ন ঘুরপাক খাচ্ছিল অনেকদিন ধরেই।

প্রসঙ্গত, বিধানসভা নির্বাচনে বিজেপির প্রার্থী ছিলেন সব্যসাচী দত্ত। কিন্ত ভোটের হেরে যাওয়ার পরে তিনিও নিষ্ক্রিয় হয়ে পড়েছিলেন। দলের বিরুদ্ধে মুখও খুলেছিলেন সব্যসাচী। কিন্তু দেখা যায়, বিজেপির দুর্গাপুজোর উদ্যোক্তাদের মধ্যে রাখা হয় সব্যসাচীকে। তারপরেই সব্যসাচী তৃণমূলে ফিরে যান। যেদিন সব্যসাচী তৃণমূলে ফিরে যান, সেদিন রাতেই রাজীবকে জাতীয় কর্মসমিতির আমন্ত্রিত সদস্য করে বিজেপি। যা দেখে হতবাক হন অনেকেই। রবিবার সেই রাজীবই ফের ঘাসফুলে ফিরে গেলেন। রাজনৈতিক মহলের মতে, বাংলার মাটি হয়তো এখনও বুঝতে পারছেন না, বিজেপির কেন্দ্রীয় নেতারা। 

রাজীবকে তোপ বিজেপির

রাজীব জোড়াফুল শিবিরে ফিরে যাওয়ার পরেই তাঁর বিরুদ্ধে মুখ খুলতে শুরু করেছে বিজেপির রাজ্য নেতারা। দলের প্রাক্তন রাজ্য সভাপতি তথা বর্তমানে সর্বভারতীয় সহ সভাপতি দিলীপ ঘোষ বলেন, "আমাদের দলে এখনো অনেক লোক রয়েছে, যাদের বিষয়ে খোঁজ নিচ্ছি আমরা। নির্বাচনের সময় কিছু লোক আমাদের দলে থেকেও অন্য দলের হয়ে কাজ করেছে। আমরা তাদের খুঁজে বের করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেব।" রাজীবকে বিঁধে বিজেপির বর্তমান রাজ্য সভাপতি সুকান্ত মজুমদার রবিবার বলেন, "ওনার কথায় না বিজেপির কেউ গুরুত্ব দেন, না পশ্চিমবঙ্গবাসী গুরুত্ব দেন। যদি উনি এতোই গুরুত্বপূর্ণ হতেন, তাহলে ৫০ হাজার ভোটে হারতেন না।" 

Advertisement

কী বলছেন রাজনৈতিক মহল

এ বিষয়ে রাজনৈতিক বিশ্লেষক দীপন মজুমদার বলেন, "এটা ঘরের ছেলে ঘরে ফিরে যাওয়ার মতো। অনেকদিন ধরেই তিনি বেসুরো ছিলেন। তার পরেও আমি জানি না কেন বিজেপির জাতীয় কর্মসমিতিতে তাঁকে জায়গা দেওয়া হল। বিজেপির কেন্দ্রীয় নেতারা সরাসরি এই কমিটি বানায় না। এই বিষয়ে তাঁরা রাজ্য নেতাদের কাছে সুপারিশ চায়। তাই রাজ্য নেতাদের সুপারিশেই রাজীব বন্দ্যোপাধ্যায় বিজেপির কেন্দ্রীয় কমিটিতে ছিলেন। এমনি এমনি কেউ যেতে পারেন না। আমি যতদূর জানি, বিজেপিতে এটাই নিয়ম। বিজেপি ভোটে হেরে যাওয়ার পরে বিভিন্ন রকম নেতা বিভিন্ন রকম কথা বলছেন। তখন তৎকালীন বিজেপি সভাপতি দিলীপ ঘোষ একটি শৃঙ্খলা রক্ষা কমিটি তৈরি করেছিলেন। সেই কমিটি আজ পর্যন্ত শো-কজ করতে পারেনি। রাজীব বন্দ্যোপাধ্যায় এতো বেসুরো মন্তব্য করেছেন, তার পরেও কোনও পদক্ষেপ নেওয়া হয়নি। আজকে যদি সেই কমিটি হাত তুলে দেয়, আমার মনে হচ্ছে তাতে ঠিক করছেন না। কারণ আসল দোষ তাঁদেরই। আপনি যখন বুঝেই গিয়েছেন দলে অনেক গদ্দার রয়েছেন, তাহলে আপনি কেন তাঁদের বার করছেন না? শাস্তি কেন দিচ্ছেন না? সমস্যা এখানেই। আমার মনে হয় বিজেপির দিলীপ ঘোষ কিংবা অন্য কারোর মেরুদণ্ড শক্ত বলে। না হলে সিদ্ধান্ত নেওয়া খুব একটা কঠিন হত না। এটা নিয়ে এখনই কোনও পদক্ষেপ না নেওয়া হয়, তাহলে রাজীব বাবুর মতো অনেক বাবু-দিদিরা ভবিষ্যতে দল ছাড়তে পারেন। 

Advertisement