scorecardresearch
 

হঠাত্‍ শুভেন্দুর ছন্দপতন! সৌগতকে হোয়্যাটসঅ্যাপ, 'আমাকে মাফ করবেন'

শুভেন্দু অধিকারী তৃণমূলেই থাকছেন। ২০২১ সালের বিধানসভা নির্বাচনে বিরোধীদের সব অপপ্রচার উড়িয়ে দলবদ্ধ ভাবেই লড়াই হবে। মঙ্গলবার বৈঠকের শেষে এমনটাই দাবি করেছিল তৃণমূল নেতৃত্ব। এই বৈঠকের যিনি হোতা সেই সৌগত রায়, সুর চড়িয়ে দাবি করেছিলেন ২ ঘণ্টার বৈঠকে মান-অভিমানের পালা মিটে গিয়েছে। তৃণমূল শিবির যখন অনেকটাই নিশ্চিন্ত ছিল বরফ গলছে মনে করে তখনি নতুন করে বোমা ফাটালেন শুভেন্দু অধিকারী। হাইভোল্টেজ বৈঠকের ১৪ ঘণ্টা কাটতে না কাটতেই সেই সৌগত রায়কেই হোয়াটসঅ্যাপ করলেন শুভেন্দু।

Advertisement
Suvendu Adhikari Suvendu Adhikari
হাইলাইটস
  • মঙ্গলবার হাইভোল্টেজ বৈঠকের পর চুপ ছিলেন
  • অবশেষে বুধবার দুপুরে জবাব দিলেন শুভেন্দু অধিকারী
  • অভিমান যে মেটেনি তা দলীয় নেতৃত্বের কাছে স্পষ্ট করলেন

শুভেন্দু অধিকারী তৃণমূলেই থাকছেন। ২০২১ সালের বিধানসভা নির্বাচনে বিরোধীদের সব অপপ্রচার উড়িয়ে দলবদ্ধ ভাবেই লড়াই হবে। মঙ্গলবার বৈঠকের শেষে এমনটাই দাবি করেছিল তৃণমূল নেতৃত্ব। এই বৈঠকের যিনি হোতা সেই সৌগত রায়, সুর চড়িয়ে দাবি করেছিলেন ২ ঘণ্টার বৈঠকে মান-অভিমানের পালা মিটে গিয়েছে। তৃণমূল শিবির যখন অনেকটাই নিশ্চিন্ত ছিল বরফ গলছে মনে করে তখনি নতুন করে বোমা ফাটালেন শুভেন্দু অধিকারী। হাইভোল্টেজ বৈঠকের ১৪ ঘণ্টা কাটতে না কাটতেই সেই সৌগত রায়কেই হোয়াটসঅ্যাপ করলেন শুভেন্দু। স্পষ্ট জানিয়ে দিলেন ‘আর একসঙ্গে কাজ করা সম্ভব নয়।’ যা নতুন করে মোড় ঘুরিয়ে দিল রাজ্য রাজনীতির।

মাস্টারস্ট্রোক নাকি বুমেরাং! এখনও মমতার কতটা আস্থার পাত্র PK

মঙ্গলবার রাতে শুভেন্দু অধিকারী ও অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় মুখোমুখি বসে প্রায়  দু’ঘণ্টা বৈঠক করেন। হাইপ্রফাইল এই বৈঠকে চলে খানা-পিনাও। দুই সেনাপতির মধ্যে বরফ গলাতে হাজির ছিলেন সৌগত রায় ও সুদীপ বন্দ্যোপাধ্যায়ের মত দলের পোড়খাওয়া দুই নেতাও। আর ছিলেন প্রশান্ত কিশোর। অভিষেকের পর যাকে নিয়ে শুভেন্দুর সমস্যা রয়েছে বলেই ওয়াকিবহল মহলের দাবি। বৈঠকের পর আশার প্রদীপ জ্বলেছিল ঘাসফুল শিবিরে। বৈঠক চলাকালীন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সঙ্গেও কথা হয় শুভেন্দুর। নেত্রীকে প্রণামও জানান নন্দীগ্রামের বেতাজ বাদশা। এরপরেই এক সুখী পরিবারের ছবি সামনে তুলে ধরেছিলেন সাংসদ সৌগত রায়। কিন্তু বুধবার দুপুর গড়াতে না গড়াতে সেই প্রদীপ নিভিয়ে দিলেন শুভেন্দু নিজেই। সূত্রের খবর, সৌগত রায়কে একটি হোয়াটসঅ্যাপ করেন বিধয়াক।  সেখানে তিনি  লেখেন- ‘আমার বক্তব্যের এখনও সমাধান হয়নি। সেই সমাধান না করেই আমার ওপর সব চাপিয়ে দেওয়া হচ্ছে। ৬ ডিসেম্বর আমার সাংবাদিক সম্মেলন করার কথা ছিল। সাংবাদিক সম্মেলন করে সব জানাতাম। কিন্তু তার আগেই আপনারা সংবাদমাধ্যমকে সব জানিয়ে দিলেন। ফলে একসাথে কাজ করা মুশকিল। আমাকে মাফ করবেন।’

Advertisement

বার বার বেসুরো মদন, দল চাইলে ব্যবস্থা নেবে: সৌগত

অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের সঙ্গে টানাপড়েনের কারণেই শুভেন্দু মন্ত্রীত্ব ছেড়েছেন বলেই ধারণ রাজনৈতিক মহলের। তিনি যে দলের নেতৃত্বের একাংশের প্রতি রুষ্ট তা গত ৩০ অক্টবরের সভাতেই ইঙ্গিত দিয়েছিলেন শুভেন্দু। তাঁকে বলতে শোনা গিয়েছিল, 'প্যারাসুটেও নামিনি, লিফটেও চড়িনি, ধাপে ধাপে এই জায়গায় উঠেছি'। যার পাল্টা জবাব গত রবিববার নিজের লোকসভা কেন্দ্রের জনসভায় দিয়েছিলেন অভিষেক। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের দুই সেনাপতির মধ্যে লড়াই যে বেশ জম্পেশ জমেছে তা আঁচ করতে পারছিলেন সকলেই। মন্ত্রীত্ব ছাড়ার পর শুভেন্দু এবার দল ছা়ড়েন কিনা সেদিকেই ছিল দৃষ্টি। এরমাঝেই গত সোমবার রাজ্যের প্রাক্তন মন্ত্রীকে দেখা গিয়েছিল প্রকাশ্যে খোল বাজিয়ে, কীর্তন গেয়ে সকলকে কৃষ্ণনামের মাহাত্ম্য শুনাতে। শুভেন্দুর হরিনাম কী ইঙ্গিত দিচ্ছে সেদিকেই নজর ছিল রাজনৈতিক বিশেষজ্ঞদের। তারমাঝেই মঙ্গলবারের বৈঠক রাজনীতির অলিন্দে নতুন করে ঝড় তুলে দিল। 

Suvendu Adhikari
Suvendu Adhikari

বাংলার মসনদে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের বসার পেছনে নন্দীগ্রাম আন্দোলনের অবদান অনস্বীকার্য। আর এই আন্দোলনে অধিকারী পরিবারের ভূমিকা ভোলার নয়। তাই শুভেন্দু একের পর এক পদ ছাড়তেই কালীঘাটে তাঁর নিজস্ব বাসভবনে জরুরি বৈঠকে বসেছিলেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।  শুভেন্দু অধিকারীর ‘মানভঞ্জন’ করতে তার সঙ্গে বৈঠক করেন সাংসদ সৌগত রায়ও৷ আর তার শেষ চেষ্টা হিসাবেই মঙ্গলবার আয়োজন করা হয়েছিল  শুভেন্দু -অভিষেক ‘হাইভোল্টেজ’বৈঠকের। মধ্যস্থতাকারী সৌগত রায় বৈঠকের শেষে দাবি করেছিলেন মান-অভিমানের পালা মিটে গিয়েছে। যদিও সেদিন শুভেন্দুর তরফে কোনও প্রতিক্রিয়া পাওয়া যায়নি। তবে  অবশেষে জবাব দিলেন নন্দীগ্রামের বেতাজ বাদশা।

মন্ত্রীত্ব ছাড়লেও এতদিন দল ছাড়ার কথা কখনও বলেননি শুভেন্দু। সরাসরি কাউকে বিষদগারও করেননি। কিন্তু বুধবার দুপুরে সৌগত রায়কে পাঠান হোয়াটসঅ্যাপে ক্ষোভ উগরাতে দেখা গেল বিধায়ককে। শুভেন্দু দাবি করেছেন, তাঁর বক্তব্যের সমাধান না করেই তার উপর চাপিয়ে দেওয়ার চেষ্টা করছে তৃণমূল নেতৃত্ব। এমনকি ৬ ডিসেম্বর তিনি সাংবাদিক বৈঠক করতেন। তার আগেই সংবাদমাধ্যমের সামনে সব বলে দেওয়া হল। এরপরেই একসঙ্গে কাজ করা সম্ভব নয় বলেই জানাচ্ছেন  তিনি। এটা যে শুভেন্দুর অদূর ভবিষ্যতে তৃণমূল ত্যাগের স্পষ্ট ইঙ্গিত এমনটাই মনে করছে রাজনৈতিক বিশেষজ্ঞ মহল।


 

Advertisement