চলে গেলেন রামকৃষ্ণ মঠ ও মিশনের অধ্যক্ষ স্বামী স্মরণানন্দ মহারাজ। মৃত্যুকালে তাঁর বয়স হয়েছিল ৯৫ বছর। মঙ্গলবার রাত ৮ টা বেজে ১৪ মিনিটে তাঁর জীবনাবসান হয়। রামকৃষ্ণ মিশন সেবা প্রতিষ্ঠানেই শেষ নিশ্বাস ত্যাগ করেন। দীর্ঘদিন ধরে বার্ধক্যজনিত অসুখে ভুগছিলেন। চলতি বছরের ২৯ জানুয়ারি তিনি হাসপাতালে ভর্তি ছিলেন।
রামকৃষ্ণ মঠ ও মিশনের ষোড়শ অধ্যক্ষ ছিলেন স্বামী স্মরণানন্দ মহারাজ। স্বামী আত্মস্থানন্দের জীবনাবসানের পর ২০১৭ সালের ১৭ জুলাই রামকৃষ্ণ মঠ ও মিশনের প্রেসিডেন্টের দায়িত্ব পান স্বামী স্মরণানন্দ মহারাজ। গতবার অর্থাৎ ২০২২ সালেও অসুস্থ ছিলেন তিনি। চলতি বছর অসুস্থ ছিলেন। তাঁকে দেখতে হাসপাতালে গেছিলেন খোদ প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ও তাঁকে দেখতে যান।
এর আগে তিনি যখন অসুস্থ ছিলেন তখন প্রায় একমাস ভর্তি ছিলেন কলকাতার রামকৃষ্ণ মিশন সেবা প্রতিষ্ঠান হাসপাতালে। স্নায়ু এবং অন্য বিভাগের চিকিৎসকদের পর্ষবেক্ষণে ছিলেন তিনি। তারপর শারীরিক অবস্থার উন্নতিও হয়েছিল। তবে সম্প্রতি ফের অসুস্থ হয়ে পড়েন তিনি। ২৯ জানুয়ারি মূত্রনালীতে সংক্রমণের কারণে তাঁকে হাসপাতালে ভর্তি করানো হয়। পরে শ্বাসকষ্ট শুরু হয় তাঁর। চলতি মাসের ৩ তারিখ থেকে তাঁকে ভেন্টিলেটরে দেওয়া হয়।
স্বামী স্মরণানন্দ মহারাজের প্রয়াণে শোকপ্রকাশ করেছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তিনি এক্স হ্যান্ডেলে লেখেন, 'রামকৃষ্ণ মঠ ও মিশনের শ্রদ্ধেয় সভাপতি শ্রীমৎ স্বামী স্মরণানন্দজি মহারাজের মৃত্যুসংবাদে আমি গভীরভাবে শোকাহত। এই মহান সন্ন্যাসী তাঁর জীবদ্দশায় রামকৃষ্ণদেবের দর্শনকে প্রচার করেছেন, আধ্যাত্মিক নেতৃত্ব দিয়েছেন। আমি তাঁর সমস্ত সহযাত্রী সন্ন্যাসী, অনুগামী ও ভক্তদের প্রতি গভীর সমবেদনা জানাই।'
প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীও শোকপ্রকাশ করেন। তিনি লেখেন, 'শ্রীমৎ স্বামী স্মরণানন্দ জি মহারাজ, রামকৃষ্ণ মঠ এবং রামকৃষ্ণ মিশনের শ্রদ্ধেয় সভাপতি আধ্যাত্মিকতা এবং সেবায় তাঁর জীবন উৎসর্গ করেছিলেন। অগণিত হৃদয় ও মননে অমলিন ছাপ রেখে গেছেন। তাঁর সহানুভূতি ও প্রজ্ঞা প্রজন্মকে অনুপ্রাণিত করবে। কয়েক বছর ধরে তাঁর সঙ্গে আমার খুব ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক ছিল। আমি ২০২০ সালে বেলুড় মঠে আমি তাঁর সঙ্গে কথা বলেছিলাম। কয়েক সপ্তাহ আগে কলকাতায় আমি হাসপাতালে গিয়ে তার স্বাস্থ্যের খোঁজখবর নিয়েছিলাম।আমার ভাবনা বেলুড় মঠের অগণিত ভক্তদের সঙ্গে। ওম শান্তি।'
১৯২৯ সালে তামিলনাড়ুর তাঞ্জাভুর জেলার আন্দামি গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন স্বামী স্মরণানন্দ। ১৯৯৭ সালে রামকৃষ্ণ মঠ ও মিশনের সাধারণ সম্পাদক হয়েছিলেন। ২০০৭-এ সহ অধ্যক্ষ হন, এরপরে ২০১৭-তে স্বামী আত্মস্থানন্দের প্রয়াণের পরে ওই বছরের ১৭ জুলাই মঠ ও মিশনের অধ্যক্ষ নির্বাচিত হন স্বামী স্মরণানন্দ।