বিধানসভা নির্বাচনের ফল ঘোষণা হয়েছে প্রায় ২ মাস কেটে গিয়েছে। কিন্তু এখনও দলত্যাগী নেতাদের বিষয়ে কোনও সিদ্ধান্ত নেয়নি তৃণমূল। সরলা মুর্মু, সোনালি গুহ, দীপেন্দু বিশ্বাস থেকে শুরু করে একঝাঁক নেতা ফের ঘাসফুলে আসতে চেয়েছেন। যদিও তৃণমূলের তরফ থেকে কোনও সংকেত দেওয়া হয়নি? ব্যতিক্রম শুধু একমাত্র মুকুল রায়। তিনি দলনেত্রীর উপস্থিতিতে তৃণমূলে যোগ দেন। তবে প্রশ্ন উঠছে, মুকুলকে দলে নিলেও, বাকিদের বেলায় কেন ধীরে চলো নীতি নিয়েছে তৃণমূল?
এক্ষেত্রে একটি বিষয় সামনে এসেছে। জানা গিয়েছে, দল ঐক্যমতে না আসা পর্যন্ত কোনও নেতাকে ফিরিয়ে আনা হবে না। এখনই সব নেতাকে ফিরিয়ে আনলে উল্টে তৃণমূলে অসন্তোষ বাড়তে পারে। তবে অন্য ছবি দেখা যাচ্ছে কর্মীদের বিষয়ে। বিধানসভা নির্বাচনের পরে বিভিন্ন জায়গায় কর্মীদের মধ্যে বিজেপি থেকে তৃণমূলে ফেরার পালা শুরু হয়েছে। এমনকি বেশ কিছু পঞ্চায়েতও দখল করেছে তৃণমূল। কিন্তু তাদের বেলায় তৃণমূলের তরফে কোনও বাধা আসেনি। আদতে, আগামী দিনের জন্য মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের আরও সেনার প্রয়োজন। কিন্তু বিজেপিতে গিয়ে নির্বাচনে যারা হেরেছেন, তাদের ফিরিয়ে নিতে সম্ভবত চায় না তৃণমূল। প্রায় ১৪৩ জন দলত্যাগী নেতা ভোটে দাঁড় করিয়েছিল বিজেপি। তার মধ্যে মাত্র ৬ জন জিতেছেন। এর মধ্যে অবশ্যই রয়েছেন শুভেন্দু অধিকারী। জানা যাচ্ছে, দলত্যাগী নেতাদের ফের ফিরিয়ে নেওয়ার থেকে তৃণমূলের নজরে রয়েছে বিজেপির বিধায়করা। ইতিমধ্যে মুকুল রায় বেশ কয়েকজনকে ফোনও করেছেন। কারণ বিধায়ক ভাঙিয়ে আনলে বিধানসভায় দুর্বল হবে বিরোধীরাই।
ফলে এখনই যে দলত্যাগী নেতাদের সামন তৃণমূল দরজা খুলছে তা নয়। অন্যদিকে,এই দলত্যাগী নেতা নিয়েই বিজেপিতে অবিশ্বাসে বাতাবরণ সৃষ্টি হয়েছে। এক তৃণমূলত্যাগী বিজেপি নেতার কথায়, এখন খুব কঠিন পরিস্থিতি হয়ে গিয়েছে। মুকুলদা তৃণমূলে ফিরে যাওয়ার পরে বিজেপির চোখে আমাদের বিশ্বাসঘাতক করে তুলেছে। শুধুমাত্র শুভেন্দু ও অন্য কয়েকজনকে সেই নজরে দেখা হচ্ছে না। বিজেপিতে আদি বনাম নব্য সংঘাত অনেকদিনের। বিধানসভা নির্বাচনের পরে সেটা যেন আরও মাথা চাড়া দিয়ে উঠেছে। তার মধ্যে অবশ্যই রয়েছে একশ্রেণীর দলত্যাগী নেতা। বিধানসভা নির্বাচনের পরে তারা ফের তৃণমূলে ফিরতে চাইছেন। অনেকে সরাসরি আবেদনও করে দিয়েছেন। তবে যা জানা যাচ্ছে, আপাতত পুরো বিষয়টি নিয়ে ধীরে চলো নীতি নিয়েছে রাজ্যের শাসকদল তৃণমূল কংগ্রেস।