আলিপুর আবহাওয়া দফতরের রিপোর্ট বলছে শুক্রবারের পর থেকেই দক্ষিণবঙ্গে বাড়বে বৃষ্টির পরিমাণ। উত্তরবঙ্গও খুব একটা রেহাই পাবে বলে খবর নেই যদিও। সৌজন্যে বঙ্গপোসাগরে তৈরি হওয়া নিম্নচাপ। ফলে, আগামী শনি ও রবিবার কার্যত বঙ্গবাসীকে গৃহবন্দী হয়েই কাটাতে হবে বলেই আপাতত মনে হচ্ছে। এই পরিস্থিতিতে, হাতে ও পাতে গরম কিছু পড়লে কি মন্দ হয়? আর তা যদি হয় খিচুড়ি তাহলে তো কথাই নেই। তবে, এ খিচুড়ি যে সে খিচুড়ি নয়, কথা হচ্ছে মাংসের খিচুড়ি নিয়ে। বানাতে জানেন? না জানলেও ক্ষতি নেই। আমরা শিখিয়ে দেবো সহজেই।
কী কী লাগবে বানাতে?
আপনি যদি তিন থেকে চার জনের মতো পরিমাণে খিচুড়ি বানাতে হলে আপনাকে নিতে হবে-
* ২৫০ থেকে ৩০০ গ্রাম সেদ্ধ চাল
* ২০০ গ্রাম মুসুর ডাল
* ৩০০ গ্রাম একদম ছোটো করে কেটে নেওয়া পাঁঠার মাংস (তবে তা কখনই কিমা করবেন না)
* ২টি পেঁয়াজ কুচি করে কেটে নিতে হবে
* ২টি আলু ছোটো করে কেটে নিতে হবে।
* ১টি টমেটো পেস্ট
* ১ চা চামচ আদা বাটা
* ১/২ চা চামচ রসুন বাটা
* স্বাদ মতো নুন
* ১ চা চামচ হলুদ গুঁড়ো
* ১ চা চামচ লঙ্কা গুঁড়ো
* ১ চা চামচ জিরা গুঁড়ো
* কাঁচা লঙ্কা কুচি (ঝালের পরিমাপ অনুসারে)
* সর্ষের তেল (প্রয়োজন অনুযায়ী)
* ১/২ চা চামচ গরম মশলা গুঁড়ো
* ১-২ টি তেজপাতা
* গোটা গরম মশলা (সামান্য পরিমাণে)
মাংসের খিচুড়ির প্রণালী
উপকরণগুলি জোগাড় হয়ে গেলে এবার মন দিয়ে আগে পদ্ধতিটা দেখে নিন।
স্বাদ যাতে ভাল হয় তার জন্য আগে ছোটো করে কেটে নেওয়া মাংসে আদা-রসুন বাটা, নুন, হলুদ গুঁড়ো, লঙ্কা গুঁড়ো, জিরা গুঁড়ো এবং সামান্য সর্ষের তেল দিয়ে মেখে রাখুন ২০ থেকে ২৫ মিনিট। এতে, মাংস নরম হবে এবং সহজে সেদ্ধ হয়ে যাবে।
মাংসে মশলা মিশতে মিশতে, অন্যদিকে চাল, ডাল ভাল করে ধুয়ে জল ঝরিয়ে নিন। এরপর, একটি পাত্রে কিছুটা সর্ষের তেল দিয়ে সেটাকে গরম করে নিন। তাতে দিয়ে দিন সামান্য পরিমাণে গোটা গরম মশলা ও একটি তেজপাতা। কিছুটা নেড়েচেড়ে নিয়ে তাতে দিন কুচো করে কেটে নেওয়া পেঁয়াজ। এবার পেঁয়াজ লাল করে ভাজা হতেই দিয়ে দিন বাকি আদা-রসুন বাটা।
কিছুটা ভাজা হতেই দিয়ে দিন টমেটো পেস্ট। পেঁয়াজ, আদা-রসুন বাটা এবং টমেটো থেকে কাঁচা গন্ধ চলে গেলে তাতে দিয়ে দিন ম্যারিনেট করে রাখা মাংস। কিছুটা কষিয়ে এরপর একে একে দিন ধুয়ে রাখা চাল, ডাল, হলুদ গুঁড়ো, জিরে গুঁড়ো, লঙ্কার গুঁড়ো এবং স্বাদ অনুসারে নুন। এরপর সব কিছু দিয়ে ভাল করে কষিয়ে নিতে হবে।
মশলার সঙ্গে প্রতিটি উপকরণ মিশে গেলে, তাতে দিয়ে দিন পরিমাণ মতো জল (চাল ও ডাল মিলিয়ে পরিমাণ যতটা নিচ্ছেন তার আড়াই গুণ জল দিতে হবে প্রথমে। জল দেওয়ার সময় সেটিকে কিছুটা গরম করে দিলে স্বাদ ভাল হয়)। প্রথমে ৫-৭ মিনিট পাত্রে ঢাকা দিয়ে উপকরণগুলিতে ফুঁটতে দিন। এবার যোগ করুণ কেটে রাখা আলু। এরপর গোটা রান্নাটাই ঢাকা ছাড়া করতে হবে। ক্রমাগত একটি হাতা বা খুন্তির দিয়ে নাড়তে থাকুন উপকরণগুলি। এতে, পাত্রের নিচে ধরে যাওয়ার সম্ভবনা কমে যায়।
সবটা সেদ্ধ হয়ে এলে উপর দিয়ে ছড়িয়ে দিন গুঁড়ো গরম মশলা। সঙ্গে ধনে পাতা থাকলে তাও গার্নিশিয়ের জন্য ছড়িয়ে সার্ভ করতে পারেন। সঙ্গে একটি ডিমের অমলেট বা আলু ভাজা দিয়েই উদরস্থ করতে পারেন বর্ষার সময়ে এই সুস্বাদু ডিসটি।
যারা পাঠাঁর মাংস খেতে পছন্দ করেন না, তাদের ক্ষেত্রে এই একই পদ্ধতি মুরগির মাংসে ব্যবহার করতে পারেন।