সকালে প্রথমে কী খাওয়া উচিত এবং কী খাওয়া উচিত নয়, তা নিয়ে মানুষের মধ্যে অনেক বিভ্রান্তি রয়েছে। কেউ কেউ সকালে ঘুম থেকে ওঠার সঙ্গে সঙ্গে বাদাম খান, আবার কেউ কেউ ফল বা এক কাপ চা দিয়ে তাদের সকাল শুরু করেন। কিন্তু আপনি কি জানেন যে, কোন জিনিসগুলি সকালে খাওয়া স্বাস্থ্যকর বলে মনে করা হয়? দিনটা ভাল করার জন্য ব্রেকফাস্ট খুবই গুরুত্বপূর্ণ বলে মনে করা হয়। অনেকেই ব্রেকফাস্ট বাদ দেন, না জেনেই। কিংবা এই ধারণা থেকে যে, এতে ওজন কমানো সম্ভব।
কিছু খাবার আছে যা, খাওয়ার পরে দীর্ঘ সময়ের জন্য তৃপ্ত বোধ করা সম্ভব। সকালে কী খাবেন, তা নিয়ে যদি আপনিও বিভ্রান্তিতে থাকেন, তবে জানুন চিকিৎসক বা পুষ্টিবিদরা কোন কোন স্বাস্থ্যকর খাবারের কথা বলেন।
ডিম - ডিম থেকে সহজে নানা রকম স্বাস্থ্যকর ব্রেকফাস্ট তৈরি করা যায়। এটি প্রোটিনের একটি খুব ভাল উৎস। তবে এটি হজম হতে সময় লাগে। যার কারণে, ডিম খাওয়ার পরে পেট দীর্ঘ সময়ের জন্য ভরা থাকে। ডিমকে কোলিনের খুব ভাল উৎস হিসেবেও বিবেচনা করা হয়। যা, আপনার মস্তিষ্ক এবং লিভারের জন্য খুবই উপকারী।
গ্রীক ইয়োগার্ড বা দই - গ্রীক ইয়োগার্ড দ্রুত ব্রেকফাস্টের জন্য একটি খুব ভাল বিকল্প। গ্রীক দইতে খুব কম ক্যালোরি থাকে এবং এটি প্রোটিনের একটি ভাল উৎস। ১ কাপ দইতে ২৫ গ্রাম প্রোটিন এবং ১৪৯ ক্যালোরি থাকে। এছাড়াও এটি ক্যালসিয়াম, ভিটামিন বি ১২, জিঙ্ক, পটাসিয়াম এবং ফসফরাসের মতো উপকারী পুষ্টিতে সমৃদ্ধ।
পেঁপে - সকালে খালি পেটে পেঁপে খাওয়া খুবই ভাল বলে মনে করা হয়। পেঁপে পেট পরিষ্কার করতে সাহায্য করে। পেঁপে খাওয়ার সময়ও কিছু বিষয়ে খেয়াল রাখতে হয়। এটি খাওয়ার পর অন্তত এক ঘণ্টা অন্য কিছু খাওয়া উচিত নয়। পেঁপে খেলে খারাপ ও হৃদরোগের ঝুঁকি কমে।
ওটসমিল - ওটসকে খুব ভাল ব্রেকফাস্ট হিসেবে বিবেচনা করা হয়। ওটসে একটি অনন্য ফাইবার পাওয়া যায় যাকে গ্লুটেন বলা হয়। এই ফাইবার কোলেস্টেরলের মাত্রা কমাতে সাহায্য করে। এর সঙ্গে, আপনার পেট দীর্ঘ সময়ের জন্য ভরা থাকে, যাতে আপনি অতিরিক্ত খাওয়া এড়াতে পারেন। ওটস আয়রন, বি ভিটামিন, ম্যাঙ্গানিজ, ম্যাগনেসিয়াম, জিঙ্ক এবং সেলেনিয়ামের একটি ভাল উৎস।
পনির - ব্রেকফাস্টের জন্য পনির খুব ভাল। এক কাপ পনিরে ২৪ গ্রাম প্রোটিন পাওয়া যায়। ব্রেকফাস্টে পনির খেলে আপনার পেট অনেকক্ষণ ভরা থাকে। পনিরে ক্যালোরির পরিমাণ খুবই কম। এক কাপ পনিরে ১৮০ ক্যালোরি পাওয়া যায়।
গমের আটার তৈরি টোস্ট- সকালে খালি পেটে গমের আটার তৈরি টোস্ট খেতে পারেন। গমের আটা দিয়ে তৈরি টোস্টে ফাইবারের পরিমাণ খুব বেশি। ফলে এটি খুব ধীরে ধীরে হজম হয় এবং রক্তে শর্করার মাত্রা দ্রুত বৃদ্ধি রোধ করে। টোস্টের সঙ্গে পিনাট বাটার, ডিম, অ্যাভোকাডো খেতে পারেন।
গ্রিন টি - সকালে গ্রিন টি খাওয়া আপনার জন্য খুবই উপকারী হতে পারে। গ্রিন টি-তে উপস্থিত ক্যাফেইন আপনার শরীর ও মেজাজ ঠিক রাখে। এক কাপ গ্রিন টি-তে ৩৫ থেকে ৭০ মিলিগ্রাম ক্যাফেইন পাওয়া যায়। গ্রিন টি খেলে শুধু মেজাজই ভাল হয় না, দুশ্চিন্তাও কম হয়।
চিয়া সিডস - চিয়া সিডস অত্যন্ত পুষ্টিকর এবং ফাইবার সমৃদ্ধ খাবারের একটি বড় উৎস। চিয়া বীজ খেলে আপনার পেট অনেকক্ষণ ভরা থাকে এবং খিদে কম লাগে। এটি আপনার রক্তে শর্করার মাত্রা ঠিক রাখতে সাহায্য করে।