বাঙালির পাঁচফোড়নের অন্যতম উপাদান কিন্তু মেথি (Methi)। এই ভারতীয় মশলা স্বাস্থ্যের জন্য খুবই উপকারী। মেথির (Fenugreek Seeds) ছোট বীজও অনেক রোগের অদম্য ওষুধ। মেথি বীজে অনেক ভিটামিন এবং খনিজ পাওয়া যায়। সবুজ মেথি সবজি এবং পরোটার মধ্যে দিয়ে খাওয়া হয়। এছাড়াও মেথি বীজ গুঁড়ো আকারেও ব্যবহার করা হয়। মেথি বীজ ব্যবহার করে নানা রোগ নিরাময় করা যায়। আয়ুর্বেদেও মেথির উল্লেখ রয়েছে। রোজ সকালে খালি পেটে মেথির জলের জাদুকরী গুণ আছে।
স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞ সুনাইনা রেক বলেন, মেথির জল স্বাস্থ্যের জন্য খুবই উপকারী। এতে উপস্থিত ফাইবার এবং অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট হজম সংক্রান্ত সমস্যা দূর করতে কার্যকরী। এজন্যে প্রথমে মেথি দানা সারারাত জলে ভিজিয়ে রাখুন এবং এরপর ছেঁকে সকালে পান করুন। এটি নিয়মিত করলে আপনার স্বাস্থ্যের জন্য অনেক উপকার হবে। বিশেষজ্ঞদের মতে, মেথিতে ভিটামিন কে, থায়ামিন, ফোলিক অ্যাসিড, রাইবোফ্লাভিন, নিয়াসিন, ভিটামিন এ, বি ৬। এছাড়া খনিজের মধ্যে রয়েছে কপার, পটাশিয়াম, ক্যালশিয়াম, আয়রন, সেলেনিয়াম, জিঙ্ক, ম্যাঙ্গানিজ ও ম্যাগনেশিয়াম।
মেথি, সর্ষে ও সেলারি সমপরিমাণ নিয়ে গুঁড়ো তৈরি করুন। আপনি চাইলে এতে কিছু পরিমাণ লবণও মেশাতে পারেন। বাড়িতে যদি কারও ডায়রিয়ার সমস্যা থাকে, তাহলে তাকে এই পাউডার দিতে পারেন। এই গুঁড়ো জলের সঙ্গে খেলে অনেক উপকার মিলবে। অভ্যন্তরীণ ব্যথা থাকলেও মেথির গুঁড়ো ব্যবহার করলে উপকার পাওয়া যায়। মেথি দানা পিষে গুঁড়ো তৈরি করুন। এর মধ্যে বিটনুন মিশিয়ে হালকা গরম জলের সঙ্গে দিনে দু'বার খেলে ব্যথার উপশম হয়।
কোষ্টকাঠিন্যের সমস্যা দূর করে মেথি। এর মধ্যে প্রচুর পরিমাণে ফাইবার এবং অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট রয়েছে, যা হজম ক্ষমতা বাড়ায়। সকালে খালি পেটে মেথি ভেজানো জল খেলে কোষ্টকাঠিন্যের সমস্যাও দূর হয়। ডায়েবিটিস রুখতে সাহায্য করে মেথি ভেজানো জল। কোলেস্টেরল নিয়ন্ত্রণ করতেও মেথির উপকারী প্রমাণিত।
মেথি ব্যবহার করে ত্বকের অবাঞ্ছিত লোম দূর করতে পারেন। মেথি কিছুক্ষণ জলে ভিজিয়ে রেখে দিন, এরপর একটি পেস্ট তৈরি করুন। ত্বকে লাগিয়ে কিছুক্ষণ পর মুছে ফেলুন। এতে অবাঞ্ছিত চুল বেরিয়ে আসবে।
জলে মেথি ভাল করে ফুটিয়ে নিন। জলের পরিমাণ একটু বেশি রাখুন। এই জল ঠাণ্ডা হয়ে গেলে, তা দিয়ে চুল ধুয়ে ফেলুন। মেথির জল দিয়ে চুল ধুলে, উজ্জ্বলতা আসে। এর পাশাপাশি এটি খুশকির সমস্যাও দূর করে।