রাতভর নবান্নে থেকে ঘূর্ণিঝড় দানার উপর নজরদারিতে ছিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। সাইক্লোনের প্রভাবে বাংলায় তেমন ক্ষতির খবর এখনও মেলেনি। দুপুরে সাংবাদিক বৈঠকে মুখ্যমন্ত্রী জানালেন, দুর্যোগ কাটলেও পরিস্থিতির উপর নজর রাখতে হবে। মেডিক্যাল ক্যাম্পে যেন বিষধর সাপের ছোবলের হাত থেকে রক্ষা পাওয়ার ওষুধ যথাযথ থাকে। জল নামলে ম্যালেরিয়া ও ডেঙ্গির প্রাদুর্ভাব ঠেকাতেও প্রশাসনিক আধিকারিকদের সতর্ক করে দিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী।
বাংলায় ঘূর্ণিঝড় দানার প্রভাব ততটা জোরালো নয়। তবে ভারী বৃষ্টির জেরে বহু এলাকা জলমগ্ন। গাছ ভেঙেছে। বহু মানুষ রয়েছেন ত্রাণ শিবিরে। ক্ষয়ক্ষতি কতটা হয়েছে তা জানতে সমীক্ষা করার নির্দেশ দেন মমতা। বলেন,'বৃষ্টি থামলে কালকের দিনটা পর্যন্ত অপেক্ষা করে সমীক্ষা করো। চাষিরা যাতে কোনওভাবে ক্ষতিগ্রস্ত না হয়। যথাযথ ত্রাণ দিতে হবে। কেউ যাতে না বলে আমি ত্রাণ পাইনি'।
'ছোবল মারলে এক সেকেন্ডেই...'
মমতার নির্দেশ,'এরপর মেডিক্যাল ক্যাম্প করতে হবে। কারণ ডেঙ্গি আক্রান্ত বাড়বে এবার। সাপের ওষুধ অ্যান্টি-ভেনাম যেন সব জায়গায় থাকে। এই ইঞ্জেকশনটা থাকতে হবে। যাতে কেউ মারা না যায় সাপের কামড়ে'। এরপরই মমতা বলেন,'সাগর ও জলপাইগুড়িতে একটা সাপ আছে- কালাচ সাপ। এটা ছোবল মারলেই এক সেকেন্ডে শেষ হয়ে যায়। চিকিৎসার সুযোগ থাকে না। বকখালি, নামখানায় এগুলো গুরুত্ব দিয়ে দেখে নিতে হবে'।
গাছ লাগানোর বার্তা
মমতা আরও বলেন,'বন দফতরকে সক্রিয়ভাবে কাজ করতে হবে। কিছু জেলায় গাছ ভেঙে গিয়েছে। সেগুলিতে তুলে আবার লাগিয়ে দিন। আমার নিজের বাড়িতে বড় বড় দু-তিনটে গাছ ভেঙে গিয়েছিল, আমি লাগিয়ে দিয়েছিলাম। সেগুলি ভালো আছে। ৫-৬ বছর হয়ে গেল। গাছ পরে গেলে লাগিয়ে দিলে অনেক সময় বেঁচে যায়। বিশ্ব উষ্ণায়ন চলছে। সেজন্য আমাদের এই ভাবনা মাথায় রাখতে হবে'।
ত্রাণ শিবির-নির্দেশ
বাড়িতে ফিরে যেতে না পারছে ততক্ষণ রিলিফ ক্যাম্প চালাতে হবে বলে জানিয়ে দেন মুখ্যমন্ত্রী। তাঁর বক্তব্য,'যাঁদের ঘর ভেঙেছে তাঁদের ত্রিপল একটা দিলে হবে না, তিনটে করে দিতে হবে। ম্যালেরিয়ার প্রকোপ রয়েছে উত্তরবঙ্গে। মশারি দিতে হবে। মশারিটা খুব গুরুত্বপূর্ণ। আমি নিজে থেকে উদ্যোগ নিয়ে কয়েক হাজার মশারি পাঠিয়েছি। ডেঙ্গি ও ম্যালেরিয়া যাতে না বাড়ে। টেলি মেডিসিন কাজে লাগান। জেলা থেকে কলকাতায় রেফার করবেন না'।