খারাপ জীবনযাপন এবং খাদ্যাভ্যাসের কারণে ওজন বৃদ্ধি একটি সাধারণ সমস্যা। এছাড়া ডায়াবেটিস ও উচ্চ রক্তচাপের মতো রোগের কারণেও স্থূলতা বাড়ে। অনেক সময় খাওয়ার নিয়ম না মেনে কিছু খাওয়ার অভ্যাসের কারণে মানুষ স্থূলতায় ভোগে। বিশেষজ্ঞদের মতে, রাতের খাবার খাওয়ার পরপরই ঘুমানো উচিত নয়। আসলে, রাতে খাবার খাওয়ার পরপরই ঘুমালে স্থূলতা বাড়ে এবং পাচনতন্ত্রকেও প্রভাবিত করে। চলুন জেনে নিই রাতের খাবারের পর কোন ভুলগুলো থেকে আমাদের সতর্ক হওয়া উচিত।
১.অতিরিক্ত জল পান করবেন না। শরীরে হাইড্রেটেড রাখতে জল পান করা খুবই গুরুত্বপূর্ণ। তবে খাবার খাওয়ার পরপরই জল খাওয়ার কথা ভাবা উচিত। স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞদের মতে, যখনই খাবার শরীরে যায়, তা হজম হতে অন্তত দুই ঘণ্টা সময় লাগে। এর মধ্যে জল পান করলে তা হজমে প্রভাব ফেলে। তাই খাবার খাওয়ার অন্তত ৪৫ থেকে ৬০ মিনিট পর জল পান করা উচিত। খাবার খাওয়ার আগে জল পান করতে চাইলে আধা ঘণ্টা আগে জল পান করা উচিত।
২. খাওয়ার পরপরই ঘুমানো, খাওয়ার পরপরই ঘুমালে খাবার ঠিকমতো হজম হয় না, যার ফলে ওজন বেড়ে যায়, অ্যাসিড রিফ্লাক্স এবং হজমের সমস্যা যেমন বুকজ্বালা, গ্যাস অ্যাসিডিটি, ফোলাভাব। খাওয়া ও ঘুমের মধ্যে অন্তত ৩ থেকে ৪ ঘণ্টার ব্যবধান থাকা জরুরি। অতএব, আপনার ঘুমের রুটিনের তিন-চার ঘন্টা আগে আপনার রাতের খাবার খাওয়ার চেষ্টা করুন।
৩. ক্যাফেইন সেবন: কিছু লোক চা এবং কফির প্রতি এতটাই অনুরাগী যে তারা তাদের ক্লান্তি দূর করতে সকাল এবং সন্ধ্যা উভয় সময়ই এটি গ্রহণ করে। এমনকি খাবার খাওয়ার পরপরই চা-কফি খান। ক্যাফিন, যা প্রায়শই কফি এবং চায়ের মতো পানীয়গুলিতে পাওয়া যায়। বিশেষজ্ঞদের মতে, খাওয়ার পরপরই ক্যাফেইন সেবন করলে পাচনতন্ত্রের ক্ষতি হতে পারে। শরীর খাবার হজম করতে পারে না, যার কারণে গ্যাস ও অ্যাসিডিটির মতো সমস্যা হতে শুরু করে। সেই সঙ্গে ওজনও বাড়তে থাকে।
৪. রাতের খাবার দেরিতে খান: বেশির ভাগ মানুষই রাতের খাবার দেরিতে খাওয়ার ভুল করেন। আসলে, অনেক সময় মানুষের সারাদিনের কাজ শেষ করতে দেরি হয়ে যায় বা অনেক সময় মানুষের দেরি করে খাওয়ার অভ্যাস থাকে। এমন পরিস্থিতিতে মানুষ খাবার খেয়েই ঘুমিয়ে যায়। এটি সবচেয়ে বড় ভুল, যা আপনার ওজন বাড়ায়। আপনার ঘুমানোর অন্তত ২-৩ ঘন্টা আগে রাতের খাবার খাওয়া উচিত, যাতে আপনার পরিপাকতন্ত্র খাবার হজম করার জন্য যথেষ্ট সময় পায়। অতএব, আপনার খাবার ৭-৮ টার মধ্যে খাওয়া উচিত এবং ১০-১১ টার মধ্যে ঘুমানো উচিত, যাতে আপনি সকালে সঠিক সময়ে ঘুম থেকে উঠতে পারেন।
রাতের খাবারের পর এই বিষয়গুলো মাথায় রাখুন- দেরি করে খাওয়া যদি আপনার বাধ্যতামূলক হয়ে থাকে, তাহলে নিশ্চিত হয়ে নিন যে আপনি এমন খাবার খান যা সহজে হজম হয়। রাতের খাবারে ফাইবারের পরিমাণ বাড়াতে হবে। রাতের খাবারে শাকসবজি এবং সালাদ অন্তর্ভুক্ত করা উচিত যাতে খাবার হজম হতে কোনো সমস্যা না হয়। - রাতের খাবারের পরপরই কাজে যেতে ভুলবেন না। কয়েক কদম হাঁটলেও খাওয়ার পর সোজা বিছানায় যাবেন না।