থাইরয়েড (Thyroid) হল একটি প্রজাপতি আকৃতির গ্রন্থি যা ঘাড়ের সামনের কলার হাড়ের কাছে অবস্থিত। থাইরয়েডের সবচেয়ে সাধারণ কারণ হল অটোইমিউন থাইরয়েড ডিজিজ (AITD / Autoimmune Thyroid Disease)। থাইরয়েড রোগীদের ওজন সংক্রান্ত অনেক সমস্যা দেখা যায়। সমীক্ষা অনুসারে, থাইরয়েডের ঝুঁকি পুরুষদের তুলনায় মহিলাদের দশগুণ বেশি।
থাইরয়েডের সমস্যা থাকলে ওজন বাড়তে শুরু করে। হাইপোথাইরয়েডিজমের (Hypothyroidism) সমস্যায় থাইরয়েড গ্রন্থি খুব কম পরিমাণে হরমোন তৈরি করে। অন্যদিকে, থাইরয়েড যদি শরীরে অনেক বেশি হরমোন তৈরি করে, তাহলে ওজন অনেকটাই কমতে শুরু করে। একে হাইপারথাইরয়েডিজম (Hyperthyroidism) বলে। থাইরয়েড এমন একটি সমস্যা যা যে কোনও বয়সেই হতে পারে। এমনকী শিশু বা নবজাতকও এই রোগে আক্রান্ত হতে পারে।
থাইরয়েডের কারণে স্থূলতা, ক্লান্তি, ঠাণ্ডা ও কোষ্ঠকাঠিন্যের পাশাপাশি শুষ্ক ত্বক, মুখের ফুলে যাওয়া, কোলেস্টেরলের মাত্রা বেড়ে যাওয়া, জয়েন্ট শক্ত হয়ে যাওয়া এবং ব্যথা, বিষণ্ণতা ইত্যাদি সমস্যা দেখা দেয়। এই রোগের কারণে ওজন বেড়ে যাওয়ায় আরও নানা ধরনের স্বাস্থ্য সংক্রান্ত সমস্যার সম্মুখীন হতে হয়। শারীরিকভাবে সুস্থ থাকার জন্য ওজন নিয়ন্ত্রণে রাখা গুরুত্বপূর্ণ। থাইরয়েডের সমস্যা থাকলেও ওজন কমাতে পারেন। এর জন্য আপনার খাদ্যাভ্যাসে কিছু পরিবর্তন আনতে হবে।
আপনিও যদি থাইরয়েডের রোগী হন এবং ওজন কমাতে চান, তাহলে আপনার খাদ্যতালিকায় সেলেনিয়াম, জিঙ্ক এবং আয়োডিন সমৃদ্ধ জিনিস অন্তর্ভুক্ত করা গুরুত্বপূর্ণ। জানুন কোন ধরনের খাবার খেয়ে থাইরয়েড রোগীরা ওজন কমাতে পারেন।
ডিম
ডিমের হলুদ অংশে জিঙ্ক এবং সেলেনিয়াম রয়েছে। সেই সঙ্গে ডিমের সাদা অংশে প্রোটিন থাকে। যারা থাইরয়েডের সমস্যায় ভুগছেন এবং ওজন কমাতে চান তাদের জন্য ডিম একটি খুব ভাল বিকল্প হতে পারে।
বাদাম ও বীজ
বাদাম ও বীজ সেলেনিয়াম এবং জিঙ্কের ভাল উৎস। যা, থাইরয়ডে সর্বোত্তম কাজ করতে সহায়তা করে। চিয়া সিডস, কুমড়োর বীজ জিঙ্ক সমৃদ্ধ। এগুলি স্ন্যাকসের জন্য দারুণ। এগুলি খেলে আপনার পেট অনেকক্ষণ ভরা থাকে ফলে বেশী খাওয়ার প্রয়োজন হয় না।
শাকসবজি
টমেটো, ক্যাপসিকামের মতো সবজিতে প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন সি থাকে। এগুলি খেলে থাইরয়েড নিরাময় হয়। এছাড়াও ফাইবার ও অ্যান্টি অক্সিডেন্ট সমৃদ্ধ হওয়ায় ওজন কমাতে সাহায্য করে।
ডাল ও মটরশুঁটি
শরীরে প্রোটিন দেওয়ার পাশাপাশি ডাল ও মটরশুঁটি মেটাবলিজম উন্নতিতে সাহায্য করে। এগুলি খেলে দীর্ঘক্ষণ পেট ভরা থাকে এবং ওজন কমাতে সাহায্য করে।
জল এবং ক্যাফেইন মুক্ত খাবার
আপনি অতিরিক্ত পরিমাণে জল পান করে আপনার ওজন কমাতে পারেন। বেশি জল পান করলে শরীরে ফোলাভাব কমে যায় এবং হরমোন নিয়ন্ত্রণে থাকে। এছাড়া বেশী জল পান করলে শরীর থেকে সব টক্সিন সহজেই বের হয়ে যায়।