ওজন কমানোর জন্য মানুষ নানাবিধ কৌশল অবলম্বন করে। খালি পেটে উষ্ণ গরম জলে মধু ও লেবু মিশিয়ে পান করলে ওজন কমে। অনেকেই প্রতিদিন সকালে খালি পেটে এই পানীয় পান করেন। ওজন কমাতে এবং শীতে শরীর উষ্ণ রাখার জন্য এটি কার্যকরী হতে পারে। কিন্তু জানেন কি, এর কিছু অপকারিতাও থাকতে পারে। কিছু মানুষের শরীরের জন্য এটি ব্যাপক ক্ষতি হতে পারে। কখনও কখনও পেটে জ্বালাপোড়া বা ব্যথা হতে পারে। জানুন ওজন কমানোর জন্য খালি পেটে উষ্ণ গরম জলে, মধু এবং লেবু মিশিয়ে খাওয়া কতটা ঠিক বা কতটা ঠিক নয়।
খালি পেটে মধু খাওয়ার উপকারিতা
চিকিৎসকেরা অনেক সময় সকালে খালি পেটে প্রথমে মধু খাওয়ার পরামর্শ দেন। কারণ এটি আপনাকে তাৎক্ষণিক শক্তি দেয় যা, সারাদিন শরীরে থাকে। এছাড়া ঘুমানোর আগে এক টেবিল চামচ মধু শুধু আরামদায়ক ঘুমই দেয় না বরং হজমশক্তির উন্নতি ঘটায় এবং শরীর ও মনকে শিথিল করে। মধু একটি চমৎকার প্রাকৃতিক ওষুধ বা আপনি এটিকে অমৃত বলতে পারেন। প্রতিদিন সকালে এক চামচ মধু, শরীর থেকে টক্সিন বের করতে সাহায্য করে।
মধু ও লেবু জল শরীরে যেভাবে কাজ করে
মধু- লেবুতে প্রচুর পরিমাণে অ্যান্টি-অক্সিডেন্ট রয়েছে যা, শরীরকে ফ্রি র্যাডিক্যালের বিরুদ্ধে লড়াই করতে সাহায্য করে। ফ্রি র্যাডিক্যাল খাবার হজমের সময় শরীরে তৈরি হয় এবং শরীরের জন্য ক্ষতিকর। তাই বিশেষজ্ঞরা প্রতিদিন এক গ্লাস জলে মধুর সঙ্গে সামান্য লেবুর রস মিশিয়ে পান করার পরামর্শ দেন। এটি একটি দুর্দান্ত মর্নিং ড্রিঙ্ক। এটি মেটাবলিজম বাড়ায় যার ফলে শরীরের চর্বি গলে।
যখন লেবু এবং মধু হালকা গরম জলের সঙ্গে মেশানো হয়, তখন এটি একটি ডিটক্স জলে পরিণত হয়। যা, ওজন কমাতে সাহায্য করে। কোষ্ঠকাঠিন্য এবং ফোলাভাব থেকে মুক্তি দেয় এবং লিভার পরিষ্কার করতেও সাহায্য করে। এটি খেলে শরীর শুধু একটি বা দুটি নয়, অসংখ্য উপকার পায়। খালি পেটে হালকা গরম জল খেলে শরীরে দারুণ প্রভাব ফেলে। এছাড়া লেবু ও মধু উভয়েরই নিজস্ব উপকারিতা রয়েছে। সেক্ষেত্রে এই তিনটি মিশিয়ে তৈরি এই পানীয় শরীরের জন্য খুবই উপকারী হয়ে ওঠে।
লেবু- মধুর এই পানীয় কীভাবে তৈরি করবেন
এই পানীয় তৈরি করার জল খুব বেশি গরম না, শুধু উষ্ণ হওয়া উচিত। এই জলে সর্বাধিক ২০০ থেকে ২৫০ মিলিলিটার মধু মেশাতে হবে। এটি ধীরে ধীরে উপভোগ করে পান করুন। প্রায় দু'মাসের মধ্যে দেখবেন পেটের মেদ কমে গেছে।
জল, লেবু ও মধুর পানীয়টি কার পান করা উচিত না?
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, যাদের পেটের আলসার এবং অ্যাসিডিটির সমস্যা আছে, তাদের এই পানীয় পান করা উচিত নয়।খালি পেটে মধু এবং লেবু জল পান করে পেটে জ্বালাপোড়া অনুভূত হয়, তাহলে বুঝতে হবে অ্যাসিডিটি বা পেটের আলসারের সমস্যা রয়েছে। এর ফলে পেটে জ্বালাপোড়াও হতে পারে এবং পরে ব্যথাও অনুভব করতে পারেন। তাই এড়িয়ে চলুন। এছাড়া কারও টনসিলের সমস্যা থাকলে, এই পানীয়টি অতিরিক্ত পরিমাণে খাওয়া থেকে বিরত থাকতে হবে।
ডায়াবেটিস রোগীদের দূরে থাকতে হবে
মধু, লেবুর জল ডায়াবেটিস রোগীদের জন্য ভাল নয়। ডায়াবেটিস রোগীদের চিনি ও মধু থেকে দূরে থাকতে হবে। যাদের ব্যারিয়াট্রিক সার্জারি আছে, তাদের ভুল করেও এই পানীয় পান করা উচিত নয়। আপনি যদি সম্প্রতি ব্যারিয়াট্রিক সার্জারি করে থাকেন যাকে ওজন কমানোর সার্জারিও বলা হয়, তাহলে এই পানীয়টি পান করা উচিত নয়। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, অপারেশনের পর মধু বা চিনি খেলে, এধরনের ব্যক্তিদের ডাম্পিং সিনড্রোম হতে পারে, যা খুবই বিপজ্জনক অবস্থা।