অনেক শিশুই প্রচণ্ড জেদি ও একরোখা হয়। যে কোনও বিষয়ে তাদের বোঝানো খুব কঠিন। এই ধরনের শিশুদের বাবা-মায়েরা খুব চিন্তায় থাকেন, কীভাবে শিশুর জেদকে কমানো যায়? কীভাবে জেদি শিশুকে বশে আনা যায়? জেদি শিশুকেও আপনি আয়ত্তে আনতে পারবেন। তবে সেজন্য কয়েকটি বিষয় রাখতে হবে-
সব জিনিসে না নয়- অনেক বাবা-মা সন্তানকে সবকিছুতে না বলতে শুরু করেন, যে কারণে শিশু জেদি হয়ে যায়। সবকিছুতে বাধা দেওয়ার অভ্যাস ত্যাগ করুন। কখনও কখনও শিশুকে যা চায় তা করতে দিন। আপনি তাকে যতই আদর করে বুঝিয়ে বলুন না কেন, সে একরোখা হয়ে যাবে। তাই শিশুকে সবসময় না বলবেন না। মাঝে মাঝে তার মনের মতো কাজ করতে দিন।
বকা নয়- কিছু অভিভাবক শিশুদের বকাঝকা করতে গিয়ে ভুল শব্দ ব্যবহার শুরু করেন। যা শিশুদের উপর খারাপ প্রভাব ফেলে। তাই শিশুদের সবসময় মাথা ঠান্ডা রেখে বোঝান। তাদের ভাল কথা বলুন। ভাল করে বোঝালে শিশুরা আত্মবিশ্বাসী, সুখী হয়। তারা ভাল আচরণ করতে সাহায্য করে। যখনই শিশুর সঙ্গে কথা বলবেন চোখে চোখে রেখে কথা বলুন। কেন আপনি অপছন্দ করছেন বিষয়টি, তা শিশুকে ভাল করে বুঝিয়ে দিন। বকঝকা করলে সে আরও একরোখা হয়ে যাবে।
শিশুর সঙ্গে জোরে কথা নয়- কোনও কিছু বোঝানোর সময় শিশুর সঙ্গে খুব জোরে কথা বলবেন না। শিশুর সঙ্গে সবসময় শান্ত মনে কথা বলুন। তাকে মানসিক চাপে ফেলবে না। প্রতিটি কথাবার্তায় শিশুকে চিৎকার করা বন্ধ করুন। তাদের সঙ্গে উচ্চস্বরে কথা বলবেন, এমনকি শিশু কোনও ভুল করে ফেললেও না।
শিশুর সামনে ঝগড়া নয়- আপনি যদি চান ধৈর্য,নম্রতা এবং সহনশীলতা সন্তানের ভিতরে আসুক, তাহলে আগে নিজেকে পরিবর্তন করুন। অনেক সময় বাবা-মায়েরা ছোট ছোট বিষয় নিয়ে সন্তানদের সামনে ঝগড়া শুরু করেন, যা শিশুর মনে খারাপ প্রভাব ফেলে। তারপর সেও একই পথ অনুসরণ করতে থাকে। তাই শিশুর সামনে কখনও ঝগড়া করবেন না।
শিশুর অন্তরে করুণা-শিশুকে বিনয়ী ও ধৈর্যশীল করে তুলতে হলে শিশুর ভিতরে মমতা সৃষ্টি করতে হবে। তাকে অসহায়কে সাহায্য করতে শেখাতে হবে। শিশুর মধ্যে ভুল স্বীকার করার অভ্যাস গড়ে তুলতে হবে। সে নিজের ভুল অন্যের উপর চাপিয়ে দেওয়া থেকে বিরত থাকবে। ভুল স্বীকার করলে তাকে বকবেন না। বরং তাকে শেখান। শিশুকে মানুষ করে তুলতে হলে উদার করে তুলুন। ভাগ করে খেতে শেখান। এসবই জেদি শিশুকে ধীরে ধীরে স্বাভাবিক করে তুলবে।