সম্পত্তি বানানো এতই সোজা !
আপনার কত সম্পত্তি রয়েছে ? তার জন্য কত পরিশ্রম করতে হয়েছে ? আজীবন হাড়ভাঙা পরিশ্রম ও বুদ্ধি খাটিয়ে একটু থিতু হয়েছেন, শুনলেন আপনার চেয়ে ঢের বেশি অর্থ উপার্জন করেছে কিছু পায়রা ! তাহলে কেমন লাগবে ? নিশ্চয় অবাক হচ্ছেন। হওয়ারই কথা। ভারতে একটি এলাকায় এমন কিছু পায়রা রয়েছে যাদের সম্পত্তির হদিশ জানলে চোখ কপালে উঠতে বাধ্য।
সম্পত্তির পরিমাণ জানেন !
তা কি সম্পত্তি আছে জানেন কী ! আছে ১২৬ বিঘা জমি। ১০ বিঘা জমিতে প্রতিষ্ঠিত ৪০০টি গোশালার মালিকও এই কবুতরগুলো। ৩০ লাখ টাকা রয়েছে ব্যাঙ্কে। সেই সঙ্গে কবুতরের নামে ২৭ টি দোকান রয়েছে এলাকায়। সেই দোকান ভাড়া দিয়েই প্রতি মাসে ট্রাস্টের আয় ৮০ হাজার টাকা। এই টাকা থেকে প্রতি দিন তিন বস্তা খাবারের ব্যবস্থা করা হয় কবুতরগুলোর জন্য।
কাঁড়ি কাঁড়ি টাকা
যাদের নামে কাঁড়ি কাঁড়ি টাকা। তাঁদের কোনও হেলদোল নেই। তারা তো দুবেলা খেতে পেলেই খুশি। আর কি চাই। বাইরের জগতের উৎপাত ছাড়াই খাবার মিলছে। এমন ভাগ্য এ জগতে কটি প্রাণীর হয় ! কোটিপতি কবুতর ! এটা কি সম্ভব ! রাতের ঘুম হারাম করে, মাথার ঘাম পায়ে ফেলে, নাওয়া-খাওয়া ভুলে রাত দিন উপার্জন করেও কোটিপতি হওয়া ভারতের বেশিরভাগ মানুষের কাছেই আকাশ কুসুম কল্পনা। অথচ টাকার মূল্য না বুঝেই কোটিপতি এক কবুতরে দল !
রাজস্থানেই রয়েছে সেই কোটিপতিরা
এই অভূতপূর্ব কোটিপতি পায়রারা আছে কোথায় ! ভারতেই এমন একটি জায়গা আছে যেখানে সব কবুতরই কোটিপতি। তাদের নামে আছে বিঘা বিঘা জমি, ব্যাংকে সেভিংস অ্যাকাউন্ট এবং সেই অ্যাকাউন্টে লাখ লাখ টাকা। রাজস্থানের নাগৌর জেলার একটি শহর যশনগর। কোটিপতি কবুতরবৃন্দের বাস ওই যশনগরেই। ৪০ বছর আগে যশনগরের এক শিল্পপতি কবুতরের নামে একটি ট্রাস্ট চালু করেন। ট্রাস্টের নাম রাখেন ‘কবুতর ট্রাস্ট’। সামর্থ অনুযায়ী যে কেউ স্বেচ্ছায় এই ট্রাস্টে দান করতে পারেন বলে ঘোষণা করে দেওয়া হয়।
দানের টাকাতে উল্লাস
এই ৪০ বছর ধরে পাখিপ্রেমী শিল্পপতি থেকে শুরু করে সাধারণ মানুষ নিজেদের সামর্থ্য অনুযায়ী দান করে আসছেন এই ট্রাস্টে। অল্প অল্প করে টাকা জমতে জমতে কোটিপতি হয়ে উঠেছে কবুতরগুলো। বিশেষ কোনও পরিশ্রম না করেই।
ছোট্ট ট্রাস্ট থেকে কোটি টাকার সম্পত্তি
কবুতরের প্রতি ভালোবাসা থেকে ওই ট্রাস্ট প্রথম চালু করেছিলেন শিল্পপতি সজ্জনরাজ। তার পর বংশ পরম্পরায় প্রতিষ্ঠানটির দায়িত্ব নিয়ে কাজকর্ম এগিয়ে নিয়েছে তার পরিবার। সজ্জনরাজ এই কাজে পাশে পেয়েছিলেন সে সময়ের পঞ্চায়েত প্রধান রামদিন চোটিয়া এবং তার গুরু মরুধর কেশরীকে। কবুতরের গুরুত্ব বুঝিয়ে তাদের দেখভাল করার জন্য গ্রামবাসীদের অনুপ্রাণিত করেছিলেন প্রধানত এই দু’জন।
ফোঁটায় ফোঁটায় সমুদ্র
গ্রামবাসী কেউ কবুতরের জন্য খাবারের ব্যবস্থা করতেন, কেউ সামর্থ্য অনুযায়ী টাকা দিতেন কবুতর ট্রাস্টে। পাশাপাশি শিল্পপতিদের বড় অঙ্কের দান তো আছেই। এ ভাবে একটু একটু করে জমতে জমতে কবুতর ট্রাস্টের টাকার পরিমাণ কোটির অঙ্ক ছাড়িয়ে গেছে।