পৃথিবীতে এমন অনেক মানুষ আছেন, যাঁরা ভিতর থেকে দুঃখ কষ্টে জর্জরিত থাকলেও প্রকাশ্যে তাঁদের হাসতে দেখা যায়। তাই কাউকে হাসতে দেখলে, আসলে তাঁর মনের মধ্যে কী চলছে তা জানা যায় না। কারণ উদাস থাকা, গুমরে গুমরে বাঁচা যেমন কষ্টের লক্ষণ, তেমনই খুব বেশি হাসিখুশিভাবও হতে পারে স্মাইলিং ডিপ্রেশানের সংকেত।
স্মাইলিং ডিপ্রেশান কী?
ন্যাশনাল সুইসাইড প্রিভেনশন পলিসি নিয়ে কর্মরত সিনিয়র সাইকিয়াট্রিস্ট ডক্টর সত্যকান্ত ত্রিবেদী বলেন, স্মাইলিং ডিপ্রেশান চিকিৎসাগতভাবে নির্ণয় করার ব্যাধি নয়। এটি আসলে এমন একটি শব্দ যা মানসিক স্বাস্থ্য পেশাদাররা বিষন্ন ব্যক্তিদের বর্ণনা করতে ব্যবহার করেন। এই ব্যাধিতে আক্রান্ত ব্যক্তিরা তাঁদের উপসর্গ লুকিয়ে রাখেন। তাঁরা সর্বদা সামাজিক পরিমণ্ডলে হাসেন যাতে মানুষ তাঁদের দুঃখী বা দুর্বল মনে না করেন। তাঁরা নিজের সম্পর্কে কথা বলতেও পছন্দ করেন না।
বয়স-লিঙ্গও ফ্যাক্টর
ডক্টর সত্যকান্ত আরও জানাচ্ছেন বিভিন্ন বয়সে ব্যক্তির পরিস্থিতির পার্থক্যে প্রতিক্রিয়াও ভিন্ন হয়। উদাহরণস্বরূপ, যখন কেউ প্রাপ্তবয়স্ক বয়সের দিকে অগ্রসর হন তখন তিনি কলেজে যেতে শুরু করেন। তখন তাঁর সুনাম তৈরি হচ্ছে। তাঁর একটা পরিচয় আছে। এমতাবস্থায় তিনি যদি তাঁর ভেতরে কোনও ধরনের ভয় বা মানসিক আঘাতের বিষয়ে কথা বলেন, তাহলে মানুষ তাঁর ভুলত্রুটি বিচার করতে পারেন। অনেক সময় যুবকরা ট্রমার মুখোমুখি হওয়া সত্ত্বেও ট্রমা পরবর্তী উদ্বেগের সঙ্গে লড়াই করেন।
এক্ষেত্রে নারীরাও এগিয়ে। অনেক সময় প্রসব-পরবর্তী বিষন্নতা বা অন্য কোনও পরিস্থিতিতে মহিলারা দুশ্চিন্তার শিকার হয়। কিন্তু, কর্মক্ষেত্র বা সমাজের সামনে তিনি নিজেকে প্রকাশ করতে অক্ষম। তিনি নিজেকে দুর্বল দেখাতে চান না। এমন পরিস্থিতিতে তিনি তাঁর মনের অবস্থা লুকানোর জন্য হাসির সাহায্য নেন।
এই ধরনের মানুষদের মধ্যে যে যে লক্ষণগুলি দেখা যায়
১. অতিরিক্ত খাওয়া, অতিরিক্ত পার্টি করা, অতিরিক্ত কেনাকাটা করা বা মাদকের প্রতি আসক্তি
২. হঠাৎ ওজন বৃদ্ধি, বর্ধিত অলসতা
৩. সব সময় অলস বা ক্লান্ত বোধ করা, একা থাকলে একাকী বোধ করা
৪. রাতে অল্প বা ঘুম না হওয়া
৫. ভিতরে অসহায় বোধ, প্রায়ই কান্না পায়
৬. আনন্দদায়ক জিনিসের প্রতি আগ্রহ হারিয়ে ফেলা
৭. ভিতরে মন খারাপ, কিন্তু হাসি অব্যাহত
আরও পড়ুন - মঙ্গল-শুক্র-সূর্যের ত্রিমুখী গোচর, এই ৪ রাশির সাফল্য ধরা দিল বলে...