বর্তমান জীবনযাত্রায় ওজনবৃদ্ধি হয়ে উঠেছে সমস্যার। সারাদিন অফিসে বসে কাজ, তেলেভাজা, খাওয়াদাওয়ার সময় ঠিক নেই- এসব কারণে বাড়তে থাকে ওজন। শরীরচর্চা না করাও একটা কারণ। পুজোর আগে অনেকেই ওজন কমাতে খাওয়াদাওয়া কমিয়ে দিয়েছেন। কিন্তু ওজন কিছুতেই কমছে না। এমনকি শরীরচর্চা করেও না। স্বাস্থ্যকর খাবারের অভ্য়াস দরকার। তা বলে রাতারাতি ফল মেলে না। ওজন কমানো একটা দীর্ঘস্থায়ী প্রক্রিয়া। সময় দিলে ফল দেখতে শুরু করবেন। ভুঁড়ির চর্বি কমবে। আপনি ফিট হয়ে ওঠবেন। খাদ্যাভাসে কার্বস, সুগার ও ফ্যাট কমানোর সঙ্গে কিছু গাছগাছড়ার প্রয়োগেও কমাতে পারেন ওজন। সেগুলি যোগ করুন নিজের ডায়েটে। আর রোজের বাজার যাওয়ার দরকার নেই। বরং বাড়ির ছাদেই লাগিয়ে নিন এই সব গাছ। একদম ফ্রেশ খেতে পারবেন। কী কী পাতা খাওয়া যায়-
১। কারি পাতা- দক্ষিণ ভারতে কারি পাতা অত্যন্ত জনপ্রিয়। ডাল থেকে নানা খাবারে ব্যবহার করা হয় কারিপাতা। এ রাজ্যেও কারিপাতা এখন ব্যবহার করা হচ্ছে। এই কারিপাতা ওজন কমানোর অব্যর্থ টোটকা, সেটা কি জানেন। কারিপাতায় থাকে প্রচুর পরিমাণে ক্যালশিয়াম, আয়রন, কপার এবং ভিটামিন।কারিপাতায় রয়েছে অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট। শরীরকে ভিতর থেকে সুস্থ রাখে। প্রতিরোধ করে রোগ সংক্রমণ।এতে রয়েছে অ্যালকালয়েড। যে কোনও আঘাত বা জখম তাড়াতাড়ি সেরে যায়। কারিপাতা সেদ্ধ জল চুলকানি, অল্প পোড়া, ইত্যাদি সারাতে কাজে দেয়। কারিপাতা অ্যান্টিসেপ্টিকের কাজ করে। ওজন কমাতেও সাহায্য করে কারিপাতা। খালি পেটে কারি পাতা চিবিয়ে খেলে কমে ওজন।
২। অরিগ্যানো- এতে থাকে ফ্ল্যাভিনয়েড ও পলিফেনল জাতীয় উপাদান, যা ওজন কমাতে কাজে দেয়। টবেও গাছ লাগানো যায়। এই ভেষজ শরীরে ইনসুলিন নিয়ন্ত্রণে সাহায্য করে। এমনকি ওজন নিয়ন্ত্রণ এবং কোষ্ঠকাঠিন্যের সমস্যারও সমাধান করে। সকালে উঠে চিবিয়ে খান পাতা, প্রচণ্ড উপকারী।
৩। পার্সলে- পার্সলে পাতা ডাইইউরেটিক খাবার। অর্থাৎ এটি শরীরের জলীয় ভর কমাতে সাহায্য করতে পারে। সেই সঙ্গে এই পাতায় রয়েছে ইউজিনল নামক একটি তেল। এই তেল মেটাবলিজম বৃদ্ধি করে। মেটাবলিজম বাড়লে শরীর খাবার দ্রুত হজম করে। এতে ওজন থাকে নিয়ন্ত্রণে। দেহে ফ্যাট জমে না।
৪। ধনে পাতা- ধনেপাতায় রয়েছে ম্যাগনেসিয়াম, ভিটামিন বি ও ফলিক অ্যাসিড। পাশাপাশি কোয়েরসেটিন নামক একটি উপাদানও রয়েছে এতে। এটি মেদ ঝরাতে কার্যকর। ধনে পাতাও বাড়ায় মেটাবলিজম। এর ফলে চর্বি শরীরে জমে না। এতে আছে অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট এবং ভিটামিন সি। এই উপাদানগুলো ত্বকের ক্ষতি রোধ করে। ধরে রাখে যৌবন। ধনেপাতা বেটে মুখে ও ঠোঁটে লাগিয়ে রাখুন ১৫ মিনিট। মুখে আসবে জেল্লা। ফিরবে ঠোঁটের সৌন্দর্য। কিডনি ও ডায়াবেটিস সমস্যাতেও উপকারী ধনেপাতা। শরীরে খারাপ কোলেস্টরল জমতে দেয় না। চোখের জন্যও ভীষণ উপকারী।
৫। রোজমেরি- রোজমেরিতে থাকে অ্যান্টি-অক্সিড্যান্ট। এটি দেহের মেটাবলিজম বাড়ায়। টক্সিন কমাতে সাহায্য করে। সেই সঙ্গে ওজন কমাতেও জুড়ি নেই। রোজমেরি শুধু ওজন কমাতেই নয় ত্বকের জেল্লা আনতেও কাজে দেয়। ফাইন লাইনস, বলিরেখা দূর করতেও সাহায্য করে। জলে রোজমেরি সেদ্ধ করে পেস্ট বানিয়ে নিন। এতে এক টেবিল স্পুন আ্যাপেল সিডার ভিনিগার যোগ করে বোতলে ঢেলে রাখুন। এর স্প্রে করে টোনার হিসেবে ব্যবহার করতে পারেন।
আরও পড়ুন- জলের দরে ডায়াবেটিসের ওষুধ, পুজোর আগে উপহার কেন্দ্রের