রক্তে ইউরিক অ্যাসিডের (Uric Acid) মাত্রা বেড়ে গেলে জয়েন্টে ব্যথা হয় এবং এই সমস্যা দীর্ঘ সময় ধরে থাকলে আর্থ্রাইটিসও হয়। আসলে, যখন কিডনি (Kidney) শরীর থেকে টক্সিন সম্পূর্ণরূপে ফিল্টার করতে অক্ষম হয় না, তখন শরীরে ইউরিক অ্যাসিড বৃদ্ধি হয়। রক্তে জমা হয়। হাড় এবং জয়েন্টগুলোর ফাঁকেও জমা হয়।
যদি আপনার শরীরে ইউরিক অ্যাসিডের পরিমাণও বাড়ে, তাহলে প্রতিদিন এই পাঁচটি ভেষজের (Herbs) মধ্যে অন্তত দুটি খাওয়ার অভ্যাস করা উচিত। খুব সস্তা এবং সহজলভ্য এই ভেষজগুলো রক্ত থেকে ইউরিক অ্যাসিড ফিল্টার করে কিডনিতে পৌঁছে দেবে এবং কিডনি সেখান থেকে প্রস্রাবের মাধ্যমে বের করে দেবে। তো চলুন জেনে নিই এই ভেষজগুলো সম্পর্কে।
আরও পড়ুন: Uric Acid Control: এই সবজি ইউরিক অ্যাসিড দ্বিগুণ বাড়িয়ে দেয়, একদম ছোঁবেন না
গুলঞ্চ
গুলঞ্চ পাতা ইউরিক অ্যাসিড কমাতে ব্যবহার করা হয়। গুলঞ্চ পাতার রস বের করে খেলে ইউরিক অ্যাসিড কমাতে সাহায্য করে। গুলঞ্চের রস খেলে জয়েন্টগুলোতে প্রদাহ কমে।
যষ্টিমধু বা লিকোরিস
যষ্টিমধু বা লিকোরিস ফোলা দূর করার পাশাপাশি এটি রক্ত পরিশোধকও বটে। যদি আপনার ইউরিক অ্যাসিড বেশি হয়, তাহলে আপনার প্রতিদিন কোনও না কোনও আকারে যষ্টিমধু বা লিকোরিস পাউডার খাওয়া উচিত। ইউরিক অ্যাসিড কমানোর পাশাপাশি এটি জয়েন্টগুলির ফোলাভাব এবং শক্ত হওয়া থেকেও মুক্তি দেয়। প্রকৃতপক্ষে, লিকোরিসে উপস্থিত গ্লাইসাইরিজিন নামক একটি যৌগ জয়েন্টের প্রদাহ কমাতে এবং ব্যথা উপশম করতে সহায়তা করে।
অশ্বগন্ধা
অশ্বগন্ধা অনেক রোগের চিকিৎসা করে এবং তার মধ্যে একটি হল ইউরিক অ্যাসিড। এতে উপস্থিত অ্যান্টি-ইনফ্লেমেটরি বৈশিষ্ট্য শরীরের ফোলাভাব ও ব্যথা কমায় এবং রক্ত থেকে ইউরিক অ্যাসিড ফিল্টার করে। জয়েন্টের ব্যথা এবং ফোলাভাব কমাতে এই ওষুধটি আশ্চর্যজনক প্রভাব দেখায়। ওজন কমানোর পাশাপাশি বাতের সমস্যাও দূর করে। অশ্বগন্ধার গুঁড়ো দুধে মিশিয়ে খেতে পারেন। রাতে ঘুমোনোর সময় দুধে এক চামচ অশ্বগন্ধা গুঁড়ো মিশিয়ে খান।
ত্রিফলা
ত্রিফলা হলো তিনটি ফলের সমাহার। সেগুলো হল হরিতকি, বহেরা আর আমলকি। তিনটি ভেষজ দিয়ে তৈরি ত্রিফলা ইউরিক অ্যাসিডের সেরা ভেষজ। আমলকি, বহেরা ও হরতকি সমপরিমাণে মিশিয়ে প্রতিদিন সকালে বা রাতে হালকা গরম জল খাওয়ার অভ্যাস গড়ে তুলুন। আপনার রক্ত থেকে ইউরিক অ্যাসিড ফিল্টার হয়ে যাবে এবং হাঁটুর ব্যথাও চলে যাবে। ত্রিফলায় রয়েছে প্রদাহ বিরোধী গুণ, যা হাড় ও জয়েন্ট সংক্রান্ত সমস্যায় খুবই উপকারী। ত্রিফলা খাওয়া প্রদাহ কমাতে সাহায্য করে। আর্থ্রাইটিস এবং অস্টিওপরোসিসের মতো সমস্যায় এটি খুবই উপকারী প্রমাণিত হতে পারে।
কাঁচা হলুদ
রক্ত থেকে ইউরিক অ্যাসিড ফিল্টার করতে কাঁচা হলুদ খুবই সহায়ক। হলুদে রয়েছে কারকিউমিন, যা প্রদাহের বিরুদ্ধে লড়াই করে। একই সঙ্গে এতে অ্যান্টি-ইনফ্লেমেটরি এবং অ্যান্টিবায়োটিক বৈশিষ্ট্যও বেশি থাকে। কাঁচা হলুদ শুকিয়ে গুঁড়ো করে খান। প্রতিদিন সকালে এই কাঁচা হলুদের ক্বাথ খাওয়া শুরু করুন এবং কিছুক্ষণের মধ্যেই আপনার জয়েন্টে থাকা ইউরিক অ্যাসিড এবং রক্ত ফিল্টার হয়ে যাবে।