টানা সপ্তমবারের মতো বিশ্বের সবচেয়ে সুখী দেশের খেতাব জিতেছে ফিনল্যান্ড। বুধবার জাতিসংঘের 'ওয়ার্ল্ড হ্যাপিনেস রিপোর্ট' অনুযায়ী, সুখী দেশের তালিকায় নর্ডিক দেশগুলো আধিপত্য বজায় রেখেছে। ফিনল্যান্ডের পর এই তালিকায় রয়েছে ডেনমার্ক, আইসল্যান্ড ও সুইডেনের নাম। গবেষকরা বলছেন, প্রকৃতির সঙ্গে ফিনল্যান্ডের মানুষের সংযোগ এবং স্বাস্থ্যকর কর্ম-জীবনের ভারসাম্যই তাদের সুখের মূল কারণ। ফিনল্যান্ডের মানুষরা অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধির বাইরেও জীবনে সাফল্য দেখতে পায়। সামাজিক নিরাপত্তা, সরকারী প্রতিষ্ঠানের প্রতি আস্থা, কম দুর্নীতি, সুশিক্ষা এবং স্বাস্থ্যসেবাও তাদের মঙ্গলে অবদান রাখে। অন্যদিকে, সমীক্ষায় অন্তর্ভুক্ত ১৪৩টি দেশের তালিকায় আফগানিস্তান সুখী দেশের র্যাঙ্কিংয়ের একেবারে নীচে রয়েছে।
আমেরিকার র্যাঙ্কও কমেছে, বড় দেশগুলো শীর্ষ ২০ তে নেই
এক দশকেরও বেশি সময়ের মধ্যে প্রথমবারের মতো ২০টি সুখী দেশের তালিকা থেকে ছিটকে গিয়ে যথাক্রমে ২৩ ও ২৪ তম স্থানে নেমে এসেছে আমেরিকা ও জার্মানি। গত বছর র্যাঙ্কিংয়ে আমেরিকা ছিল ১৬তম স্থানে। কোস্টারিকা এবং কুয়েত ১২ তম এবং ১৩তম র্যাঙ্কিং নিয়ে শীর্ষ ২০ তে জায়গা করে নিয়েছে।
এ বছর কানাডা ১৫তম স্থানে, ব্রিটেন ২০তম, জার্মানি ২৪তম এবং ফ্রান্স ২৭তম স্থানে রয়েছে। প্রতিবেদনটি এমন একটি পরিবর্তনকে হাইলাইট করে যেখানে সবচেয়ে সুখী দেশগুলি আর বিশ্বের বৃহত্তম দেশগুলির অন্তর্ভুক্ত নয়। ১.৫ কোটির বেশি জনসংখ্যা নিয়ে শুধুমাত্র নেদারল্যান্ডস এবং অস্ট্রেলিয়া শীর্ষ ১০ তে রয়েছে এবং কানাডা এবং আমেরিকা ৩০ কোটির বেশি জনসংখ্যা নিয়ে শীর্ষ ২০ তে রয়েছে।
২০০৬-২০১০ সাল থেকে সবচেয়ে সুখী দেশের তালিকায় উল্লেখযোগ্য পরিবর্তন দেখা গিয়েছে। সুখী দেশের এই তালিকায় আফগানিস্তান, লেবানন এবং জর্ডনের র্যাঙ্কিংয়ে পতন হয়েছে, অন্যদিকে সার্বিয়া, বুলগেরিয়া ও লাটভিয়ার মতো পূর্ব ইউরোপের দেশগুলোর র্যাঙ্কিং বেড়েছে।
সুখী দেশগুলির র্যাঙ্কিং নির্ধারণ করা হয় জীবন নিয়ে। নাগরিকদের সন্তুষ্টির পাশাপাশি মাথাপিছু মোট দেশজ উৎপাদন (জিডিপি), সমাজ ও জনগণের পারস্পরিক সহায়তা, সুস্থ আয়ু, স্বাধীনতা, উদারতা এবং দুর্নীতির মতো বিষয়গুলির দ্বারা।
সুখী দেশের তালিকায় ভারতের স্থান কত?
সুখের সূচকে ভারত গত বছরের মতো ১২৬তম স্থানে রয়েছে, যেখানে ভারতের প্রতিবেশী দেশ চিন রয়েছে ৬০তম, নেপাল ৯৩তম, পাকিস্তান ১০৮তম, মায়ানমার ১১৮তম, শ্রীলঙ্কা ১২৮তম এবং বাংলাদেশ ১২৯তম স্থানে। যদি দেখা যায়, সুখী দেশের তালিকায় ভারতের চেয়ে এগিয়ে পাকিস্তান।
ভারতের বয়স্ক জনগোষ্ঠীর মধ্যে জীবন সন্তুষ্টির একটি আকর্ষণীয় প্রবণতা দেখা গেছে। এটা বিশ্বাস করা হয় যে বয়স্ক জনসংখ্যা শুধুমাত্র উচ্চ আয়ের দেশগুলিতে সুখী, যেখানে ভারতে, বয়স্ক পুরুষরা জীবন নিয়ে বেশি সন্তুষ্ট। তবে বয়স্ক ভারতীয় মহিলারা বয়স্ক পুরুষদের তুলনায় কম খুশি। বিশ্বের প্রায় প্রতিটি অঞ্চলেই নারীরা পুরুষদের তুলনায় কম সুখী ছিল। বয়স বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে তাদের সুখের মাত্রা আরও কমে যায়। ভারতে, শিক্ষার স্তর এবং বর্ণও সুখের ক্ষেত্রে বড় ভূমিকা পালন করে। যারা কম শিক্ষিত এবং এসসি, এসটি জাতি থেকে এসেছেন, তাদের আনন্দের মাত্রা কম বলে জানা গিয়েছে। বিশ্বের যুব জনসংখ্যা (বয়স ৩০ এবং নীচে) সম্পর্কে কথা বললে, লিথুয়ানিয়া, ইজরায়েল, সার্বিয়া, আইসল্যান্ড, ডেনমার্ক শীর্ষ পাঁচটি দেশের মধ্যে। যেখানে এ ক্ষেত্রে সাত নম্বরে ছিল ফিনল্যান্ড। ভারতের যুব জনসংখ্যা সুখের দিক থেকে ১২৭তম স্থানে।
শীর্ষ ১০ দেশ (বিশ্বব্যাপী):
শীর্ষ ১০ দেশ (এশিয়া):