Holong Tourist Lodge: ৬৮ বছরের পুরনো ডুয়ার্সের মাদারিহাটের জলদাপাড়ায় হলং বনবাংলো পুড়ে ছাই হয়ে গিয়েছে কয়েদিন আগেই। প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী জ্যোতি বসু থেকে শুরু করে বর্তমান মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের প্রিয় ছিল এই বাংলো। এ ছাড়াও বহু সাধারণ মানুষ, পর্যটনপ্রেমী ও বিখ্যাত ব্যক্তিরা এখানকার ঢাউস উইন্ডো দিয়ে জন্তু-জানোয়ারের আনাগোনা দেখেননি এমন নয়। বাংলো পুড়ে যাওয়ার পরেও ঐতিহ্য ও সৌন্দর্যের টান ভুলতে পারছেন না পর্যটকরা। উত্তরবঙ্গের বিভিন্ন জায়গা থেকে পুড়ে যাওয়া বাংলো দেখতেই ছুটে আসছেন সকলে। তুলছেন ছবি, সঙ্গে সেলফি।
এই মুহূর্তে জঙ্গল বন্ধ। তবে জঙ্গলের আশপাশ দিয়ে ঘুরে বেড়াতে কোনও বাধা নেই। তাই আশপাশে ও ডুয়ার্সে ঘুরতে ঘুরতেই জলদাপাড়া গেটের সামনে দাঁড়িয়ে হলং বাংলোর খোঁজ নিচ্ছেন পর্যটকরা। এক ঝলক দেখতে চান তাদের প্রিয় হলং বনবাংলোতে। পুড়ে যাওয়া ধ্বংসস্তুপ সরিয়ে শেষবারের মতো স্মৃতি হাতড়ে নিতে চান।
জলদাপাড়ার হলং বনবাংলোয় অগ্নিকাণ্ড নিয়ে রাজ্যের কাছে প্রাথমিক রিপোর্ট জমা দিল বন দফতর। যদিও এই রিপোর্ট নিয়ে কোনও মন্তব্য করতে চাননি দফতরের কর্তারা। তবে তাঁরা শুক্রবারেও দাবি করেছেন, এখনও তাঁদের সন্দেহ, বিদ্যুতের ‘শর্ট সার্কিট’ থেকেই হলং বনবাংলোয় আগুন লেগেছে। এই অগ্নিকাণ্ডের ঘটনার পূর্ণাঙ্গ তদন্তের জন্য ছয় সদস্যের একটি দলও গঠন করা হয়েছে। দু-এক দিনের মধ্যেই ওই দল তদন্তের কাজ শুরু করবে বলে রাজ্যের প্রধান মুখ্য বনপাল (বন্যপ্রাণ) দেবল রায় সংবাদমাধ্যমকে জানিয়েছেন।
১৯৬৭ সালে মাদারিহাটে জলদাপাড়া জঙ্গলের ভিতর বাংলোটি তৈরি হয়। বিভিন্ন বন্যজন্তু ও পাখিদের সান্নিধ্য উপভোগ করার জন্য দেশ-বিদেশের পর্যটকদের কাছে অত্যন্ত প্রিয় ছিল এই বনবাংলো। জঙ্গলের নিস্তব্ধতায় কিছুটা সময় কাটাতে এসেছেন অনেক নামী-দামি মানুষ। প্রায় ৬৮ বছর ধরে এই বাংলোটিতে অজস্র পর্যটক এসে থেকেছেন। বাংলোটি পুড়ে যাওয়ার খবরে পর্যটনমহলেও মন খারাপ। সম্পূর্ণ কাঠের তৈরি এই বন বাংলোটি যেন আগের মতো করেই গড়ে তোলা হয়, সেই দাবি তুলছেন সকলে। অন্যদিকে, হলং বনবাংলোয় আগুন নিয়ে কেন্দ্রীয় সরকারের কাছে অভিযোগ জানাবেন বলে দাবি করেছেন আলিপুরদুয়ারের বিজেপি সাংসদ মনোজ টিগ্গা।