Elephant Safari Gorumara: গল্প শুনতে আমরা সবাই কম বেশি ভালোবাসি। এখন কাজের চাপে এবং বিকল্প নানা বন্দোবস্তের ঠেলায় গল্প বলা এবং শোনা দুইই কমে গিয়েছে। ঠাকুরমা-দিদিমাদের কাছে বসে গল্প শোনার চল এবং পাঠ তো কবেই চুকেবুকে গিয়েছে। কিন্তু সেই সুযোগ আবার এনে দিয়েছে উত্তরের বন বিভাগ। তাও আবার হাতির সাফারির সময় হাতির পিঠে চড়ে গল্প শোনার সুযোগ করে দেওয়া হচ্ছে। চমকাবেন না। আসনু ব্যাপারখানা কী, আসলে জেনে নেই।
জঙ্গল খুলে গিয়েছে ১৬ সেপ্টেম্বর থেকে। সেখানে এখন জঙ্গল সাফারিতে ডুয়ার্সে ভিড় জমাচ্ছেন পর্যটকরা। অক্টোবর মাসের কাছাকাছি পুজো যত এগোবে ততই ভিড়ের পরিমাণ বাড়বে বলেই ধারণা বন দফতরের। আর পর্যটকদের যাঁরা জঙ্গলে ঘুরতে আসেন, তাঁদের মধ্যে একটা বড় অংশের মানুষ হাতির পিঠে চড়ে জঙ্গল সাফারি করতে আগ্রহী থাকেন। এবার সেই হাতি সাফারিকে আরও মনোগ্রাহী, আরও শিক্ষামূলক ও আরও আকর্ষণীয় করে তুলতে উদ্যোগী হয়েছে তারা।
কীভাবে শিক্ষামূলক ভ্রমণ করাতে চাইছেন তাঁরা?
একটু খোলসা করা যাক। যখন হাতির পিঠে সাফারি করবেন পর্যটকরা, তখন মাহুতরা তাঁদের হাতির নানা রকম গল্প শোনাবেন। তা অবশ্য কোনও কল্পনা-কাহিনী নয়। হাতি নিয়ে শিক্ষামূলক বিভিন্ন তথ্য এবং তার মধ্যে কিছু মজার গল্প থাকবে। তবে সবই বাস্তব। ঘটে যাওয়া ঘটনা। আর বনদফতরের ইচ্ছে, এই গল্পগুলি যেন পর্যটকরা শুনে গিয়ে বাইরে প্রচার করেন।
করোনার জেরে দীর্ঘদিন বন্ধ থাকার পর ২০২১ সালের ডিসেম্বর মাসে হাতি সাফারি শুরু হয়। গরুমারায় কিছুদিন চলার পর তা বন্ধ হয়ে যায় পর্যটকের অভাবে। সেই সময়ে খুব কঠিন সময় পার করেছে বিভিন্ন পর্যটন কেন্দ্রগুলি। তবে ধীরে ধীরে ফের মানুষের যাতায়াত বেড়েছে। আকর্ষণ বেড়েছে। এবার সেই হাতিদের ব্যবহার করেই পর্যটকদের মাধ্যমে বিভিন্ন বন সংক্রান্ত তথ্য ও শিক্ষা প্রচার করতে চান তাঁরা। পরিবেশ রক্ষার পাঠ দেওয়া হবে এই গল্পের মাধ্যমে। তার জন্য গাইড এবং মাহুতদেদের আলাদা করে প্রশিক্ষণ দেওয়া হবে বলে জানানো হয়েছে। জঙ্গল গবেষকদের মতে হাতি জঙ্গলে রাস্তা তৈরি করে। গাছকে রক্ষা করে। হাতির কারণে বনের পরিবেশ অনেকটাই রক্ষা পায়। বন দফতরের তরফে চেষ্টা করা হচ্ছে যে পুজোর আগেই যেন বিষয়টি চালু করে দেওয়া যায়।
করোনার আগে হাতি সাফারি চালু হয়েছিল। গরুমারা জাতীয় উদ্যানে পর্যটকদের জন্য তখন শুধুমাত্র গরুমারার অধীনে থাকা কালীপুর ইকো ভিলেজ, রামসাই রাইনো ক্যাম্প ও ধুপঝোরা গাছবাড়িতে থাকা পর্যটকরাই হাতি সাফারির সুযোগ পেতেন। তবে করোনার পর জঙ্গল খুললে ২০২১ সালের ডিসেম্বরের ১ তারিখ থেকে বন দফতর সিদ্ধান্ত নেয়, ধুপঝোরায় সকাল বিকেল দুই শিফটে চারজন করে মোট আটজন, রামসাই থেকে সকালের দুটো শিফটে চার জন করে মোট আটজন করে হাতি সাফারির সুযোগ পাবেন। এর জন্য ১০২০ টাকা করে মাথাপিছু খরচ ধরা হয়। কিন্তু অল্প কিছুদিন চালানোর পর হাতি সাফারি বন্ধ হয়ে যায়। গরু মারায় গরুমারা জঙ্গলে পর্যটকদের ঘোরানো হতো গরু মারায় থাকা স্বল্প সংখ্যক কুনকি হাতি দিয়ে তাদের মধ্যে আবার বেশ কয়েকটি কুনকি হাতি অসুস্থ থাকার কারণে বিশ্রামে রাখা হয়েছিল। পরে দুটি কুনকি হাতি এনে সাফারির সংখ্যা বাড়ানো হয়।