কলকাতা থেকে জলপাইগুড়ি, দার্জিলিং থেকে মুর্শিদাবাদ, গোটা রাজ্যের পর্যটন কেন্দ্রগুলি ঢেলে সাজানোর পরিকল্পনা নিয়েছে রাজ্য সরকার। 'পর্যটনে বসতে লক্ষ্মী' আপ্তবাক্যকে মাথায় রেখে রাজস্ব আদায়ে মন দিয়েছে রাজ্য। করোনা পরবর্তী সময়ে প্রতি বছরই লাফিয়ে বাড়ছে পর্যটকের সংখ্যা। বিভিন্ন পর্যটনকেন্দ্রগুলিতে উপচে পড়ছে ভিড়। বেশ কিছু জায়গায় পরিষেবায় খামতি রয়েছে বলে রিপোর্ট মিলেছে, সেই অনুযায়ী ঐ সমস্ত জায়গাগুলিকে আপগ্রেড করার জন্য বড় অঙ্কের টাকা বরাদ্দ করেছে রাজ্য পর্যটন দফতর। পাশাপাশি বেশ কিছু পর্যটনকেন্দ্রগুলিতে আরও ভালো পরিষেবা তুলে দেওয়ার জন্য একগুচ্ছ পরিকল্পনা নেওয়া হয়েছে।
রাজ্যের পর্যটন উন্নয়ন নিগমের তরফে জানা গিয়েছে যে পর্যটন উন্নয়ন নিগমের চেয়ারম্যান ইন্দ্রনীল সেনের উদ্যোগে আপাতত টুরিস্ট লজগুলিকে ঢেলে সাজানোর উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। পর্যটনের ভরা মরশুমে এখন পরিষেবা যাতে কোনওরকমভাবে বিঘ্নিত না হয়, সেজন্য সর্বোচ্চ মনোযোগ দেওয়ার কথা বলা হয়েছে।
বিগত বছরগুলিতে প্রাইভেটে পরিষেবা ভালো, সরকারিতে পরিষেবা ভালো নয়; এই চিরকালীন প্রবাদকে উল্টে দিয়েছে রাজ্য পর্যটন। বরং এখন সরকারি ট্যুরিজম, বনবাংলো ও বিভিন্ন টুরিস্ট আবাসগুলিতে সর্বোচ্চ সুবিধা তুলে দেওয়া হচ্ছে। বিভিন্ন টুরিস্ট লজগুলিকে প্রিমিয়াম সুবিধা যুক্ত করে তোলা হচ্ছে ও হয়েছে। সেখানে থাকা খাওয়া থেকে সমস্ত রকম আমোদ প্রমোদের বন্দোবস্ত রাখছে পর্যটন দফতর ও পর্যটন উন্নয়ন নিগম।
জানা গিয়েছে যে আপাতত প্রথম দফায় প্রায় ১০ কোটি টাকা বরাদ্দ করা হয়েছে আপগ্রেডেশনের কাজের জন্য। রাজ্যের ১০ টি টুরিস্ট লজকে প্রাথমিক পর্যায়ে বেছে নেওয়া হয়েছে। যেগুলিকে ঢেলে সাজানো হচ্ছে। উত্তরবঙ্গের দার্জিলিং টুরিস্ট লজ মেরামতি, সংস্কার, বিদ্যুৎ পরিষেবার জন্য ২৮ লক্ষ টাকা বরাদ্দ করা হয়েছে। শিলিগুড়ি মহিলা টুরিস্ট লজের মূল প্রবেশদ্বার সাজিয়ে তোলা হচ্ছে। পাশাপাশি নিকাশি সহ অন্যান্য সংস্কারের জন্য প্রায় ২৫ লক্ষ টাকা বরাদ্দ করা হয়েছে। গজলডোবা ভোরের আলো পর্যটনকেন্দ্রের পুরনো কটেজগুলি সংস্কার ও আলোকিতকরণের জন্য ৫ লক্ষ টাকা বরাদ্দ হয়েছে। কার্শিয়াং পর্যটনকেন্দ্রের জন্য প্রায় আড়াই কোটি টাকা এবং কালিম্পং ট্যুরিজম কেন্দ্রের জন্য প্রায় দেড় কোটি টাকা বরাদ্দ করেছে নিগম। জলপাইগুড়ি তিলোত্তমা পর্যটন কেন্দ্রের জন্য চার লক্ষ টাকার বন্দোবস্ত করা হয়েছে।
দক্ষিণবঙ্গের মুর্শিদাবাদের মতিঝিল পর্যটন কেন্দ্রের ৯ টি কটেজ মেরামত ও সংস্কার করছে রাজ্য। তার জন্য প্রায় দেড় কোটি টাকা বরাদ্দ করা হয়েছে। ব্যারাকপুরের মঙ্গল ধারা পর্যটন কেন্দ্রের জন্য ২ কোটি টাকার বেশি বরাদ্দ করা হয়েছে।কলকাতার লেক গার্ডেন মেরামতি ও সংস্কারের জন্য প্রায় ১৩ লক্ষ টাকার বেশি বরাদ্দ হয়েছে। এর পরবর্তী পর্যায়ে রাজ্যের অন্যান্য পর্যটন কেন্দ্রগুলিকে অত্যাধুনিক করে গড়ে তোলার পরিকল্পনা নিয়েছে উন্নয়ন নিগম।