বিশাল কুলিক পাখিরালয় ঘুরতে এখন আর বেগ পেতে হবে না। এবার থেকে ইলেকট্রনিক কারে ঘুরতে পারবেন। এমন পরিকল্পনা নিয়েছে পাখিরালয় কর্তৃপক্ষ। মূলত শিশু ও প্রবীণ পর্যটকদের কথা মাথায় রেখে রায়গঞ্জ (Raiganj) কুলিক পাখিরালয়ের (Kulik Bird Sanctuary) এই পরিকল্পনা নেওয়া হয়েছে। প্রকল্পটি বাস্তবায়িত হলে প্রবীণ ও খুদেদের পাশাপাশি অন্যান্য পর্যটকরাও এই সুবিধা নিতে পারবে।
কুলিক পক্ষীনিবাস বিশ্বের অন্যতম সৌর্ন্দয্যগুলির মধ্যে একটি। এশিয়ার মধ্যে দ্বিতীয় বৃহত্তম স্থান অধিকার করেছে রায়গঞ্জের এই কুলিক পক্ষীনিবাস অথবা কুলিক বন অভয়ারণ্য। উত্তর দিনাজপুর জেলার রায়গঞ্জের বুকে এই কুলিক পক্ষীনিবাস প্রতিষ্ঠিত হয় ১৯৮৫ সালে। উত্তর দিনাজপুর জেলার রায়গঞ্জ শহরে কুলিক নদীর তীরে অবস্থিত এই কুলিক পক্ষীনিবাস প্রায় ৬০০ একরের বনাঞ্চল নিয়ে তৈরী করা হয়েছে। কুলিক পক্ষীনিবাসের আয়তন ১.৩ বর্গ কিলোমিটার।
রায়গঞ্জের বুকে অবস্থিত এই কুলিক পক্ষীনিবাস ভারতের বিভিন্ন পর্যটন কেন্দ্রগুলোর মধ্যে অন্যতম। এটি ভারতের বিভিন্ন দর্শনীয় স্থানগুলির মধ্যে একটি। বছর বছর ভারতের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে বহু পর্যটকরা পরিদর্শনে আসে শুধুমাত্র এই রায়গঞ্জ শহরের বিখ্যাত এই কুলিক পাখিরালয়ে। এখানে মে মাস থেকে জুন মাসের মাঝামাঝি পর্যন্ত হাজার হাজার পরিযায়ী পাখিদের দল ছুটে আসে। যা এই কুলিক বন অভয়ারণ্য অথবা কুলিক পক্ষীনিবাসের সৌর্ন্দয্যকে আরও বাড়িয়ে তোলে। (Raigunj Kulik Bird & Wildlife Sanctuary)
এটি শুধুমাত্র পক্ষীনিবাসের জন্য খ্যাতি অর্জন করেনি, এই পক্ষীনিবাসের ভেতরে রয়েছে পিকনিক স্পট, বিশুদ্ধ পানিয় জলের ব্যবস্থা রয়েছে, পরিস্কার পরিচ্ছন্ন শৌচালয় রয়েছে, ছোটো পার্ক যেখানে বাচ্চাদের খেলার ব্যবস্থাও রয়েছে আবার বড়দের আনন্দ করার মতো জায়গা রয়েছে। আরও রয়েছে দেখার মতো চারিপাশে সবুজ গাছপালার সুন্দর শোভা। এছাড়াও কুলিক পক্ষীনিবাসের ভেতরে রয়েছে সুন্দর ক্যান্টিন পাশেই কুলিক নদী। সবটা মিলিয়ে এই পক্ষীনিবাসের সৌর্ন্দয্য আরও বাড়িয়ে তুলেছে।
রায়গঞ্জ বন বিভাগের অতিরিক্ত বন আধিকারিক সরোজ ভূজেল সংবাদমাধ্যমকে জানিয়েছেন, কুলিক পাখিরালয়ে সারা বছরই পাখি থাকে। জুন থেকে সেপ্টেম্বরের শেষ পর্যন্ত পরিযায়ী পাখিদের ভিড় থাকে। বাকি সময়টাতে নানা ধরনের দেশি ও বিদেশি পাখি, কচ্ছপ, নীলগাই দেখতে ভিড় করেন শহর ও শহরের বাইরের বহু সাধারণ মানুষ। এত বড় আয়তনের পাখিরালয় পায়ে হেঁটে দেখতে গিয়ে ক্লান্ত হয়ে যান অনেকেই। বাটারফ্লাই গার্ডেন, মিলিটারি ফরেস্ট, ধানগাড়া ফরেস্টগুলো অনেকের কাছে অধরা থেকে যায়। তাই বন দফতরের আধিকারিক ই-রিকশার প্রস্তাব দিয়েছেন। এই প্রকল্প অনুমোদন পেলে পর্যটকেরা অল্প সময়ে পুরো এলাকা ঘুরে দেখতে পাবেন। এতে গাড়িচালকদের উপার্জনও বাড়বে।